গাজীপুরের টঙ্গীতে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়েছে। তবে আজ বুধবার সকাল থেকেই বরখাস্ত হওয়া ওই তিন শিক্ষকের মধ্যে বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আতিকুর রহমানের বরখাস্তের আদেশ প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে ফের বিক্ষোভ করেছে শিক্ষার্থীদের একাংশ। বরখাস্ত হওয়া অপর দুই শিক্ষক হলেন, মোহাম্মদ সিবগাতুল্লাহ ও কামরুল ইসলাম।
এর আগে গত মঙ্গলবার দিনব্যাপী মাদ্রাসাটির শিক্ষার্থীরা চার দফা দাবি জানিয়ে মাদ্রাসায় বিক্ষোভ শুরু করে। পরে বেলা ৩টার দিকে বিক্ষুব্ধ শিক্ষার্থীদের মারধর করেন ওই তিন শিক্ষক। এতে অন্তত পাঁচ শিক্ষার্থী আহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
এ ঘটনার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মাদ্রাসাটির পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ড. কোরবানি আলী তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করেন।
মাদ্রাসা সূত্রে জানা যায়, মঙ্গলবার সকালে মাদ্রাসাটির কয়েক শ শিক্ষার্থী আলিম দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীদের বেতন বৃদ্ধি না করা, অতিরিক্ত পরীক্ষার ফি আদায় না করা, দরিদ্র পরিবারের শিক্ষার্থীদের সহায়তা ও স্কলারশিপ চালুর দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ শুরু করে। বেলা বাড়লে মাদ্রাসাটির বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা এ আন্দোলনে যোগ দেন। শিক্ষার্থীদের এ আন্দোলন দমাতে গিয়ে কয়েক শিক্ষক ছাত্রদের মারধর করেন। পরে রাতেই মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতির আদেশে ওই তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয়।
পরদিন বুধবার সকাল থেকে মাদ্রাসাটির শিক্ষার্থীরা বরখাস্ত হওয়া বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আতিকুর রহমানকে প্রতিষ্ঠানটিতে পুনর্বহালের দাবিতে ফের বিক্ষোভ শুরু করে। বেলা বাড়লে মাদ্রাসাটির অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমানের স্বাক্ষরিত এক নোটিশে মাদ্রাসার পাঠদান বন্ধ ঘোষণা করা হয়। পরে শিক্ষার্থীরা নিজ নিজ বাসায় চলে যায়।
মাদ্রাসার আলিম বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ হাসান মাহমুদ বলেন, ‘আমরা চার দফা দাবি জানিয়ে বিক্ষোভ করেছিলাম। গভর্নিং বডির সভাপতি তিনজন শিক্ষককে অভিযুক্ত করে বরখাস্ত করেন। তবে বিজ্ঞান বিভাগের আতিকুর রহমান স্যারকে বহালের দাবিতে আজ বুধবার কয়েক শ শিক্ষার্থী ক্লাস বর্জন করে। আতিকুর রহমান স্যার শিক্ষক হিসেবে সবার কাছে প্রিয়। তিন শিক্ষককে বরখাস্ত করায় আজ মাদ্রাসার অন্য শিক্ষকেরা পাঠদান বন্ধ রাখেন।’
তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার পরিচালনা পরিষদের সভাপতি ড. কোরবান আলীর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।
তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ড. হিফজুর রহমান বলেন, ‘পরিচালনা পরিষদের সভাপতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাদ্রাসায় পাঠদান বন্ধ রাখা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের মারধরের ঘটনায় তিনজন শিক্ষককে মৌখিক বরখাস্তের আদেশ দেওয়া হয়। শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে ফেরাতে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আগামী সোমবার থেকে ফের পাঠদান শুরু হবে।’



















