ঢাকা ০৪:৩২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

খুলনা আদালতপাড়ায় দিনের আলোতে দুই যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৬:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৭৩ বার পড়া হয়েছে

 

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় রোববার সকাল থেকেই খুলনার আদালতপাড়া ছিল মানুষের ভিড়ে ঠাসা। ঠিক এমন সময় ভরদুপুরে সকলের সামনে ঘটে যায় ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ড। মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার মুহূর্তে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় দুই যুবককে—ফজলে রাব্বি রাজন ও হাসিব হাওলাদারকে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে কোপাতে নিশ্চিত করা হয় তাদের মৃত্যু।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আদালত ভবনের সামনেই ঘটে এই নৃশংস ঘটনা। সিআইডি ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

নিহত রাজন রূপসার বাগমারার দক্ষিণ ডাঙ্গা এলাকার ইজাজ শেখের ছেলে এবং হাসিব নগরীর নতুন বাজার এলাকার মান্নান হাওলাদারের ছেলে। দু’জনই খুলনার আলোচিত সন্ত্রাসী শেখ পলাশের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান রাজন ও হাসিব। হাজিরা শেষে গেট দিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৬–৭ জন দুর্বৃত্ত তাদের ঘিরে ফেলে। রাজনের ঘাড়ে প্রথমেই চাপাতির কোপ পড়ে, সাথে সাথে আরেকজন তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। হাসিবকেও একইভাবে গুলি করা হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর দু’জনকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। চারদিকে মানুষ ছুটোছুটি করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। পরে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পূর্ব পাশের সড়ক দিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

হত্যার দৃশ্য আদালত ভবনের বারান্দায় দাঁড়ানো একজন ব্যক্তি মোবাইলে ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে থাকা এক যুবকের শরীরে রাম দা দিয়ে হামলা চলছে, আর কয়েকজন পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে।

জানা গেছে, সোনাডাঙ্গা থানার অস্ত্র মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন রাজন, এবং সন্দেহভাজন হিসেবে একই মামলায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন হাসিব। চার্জশিটেও দু’জনের নাম রয়েছে। তাই তারা একসঙ্গে আদালতে হাজিরা দিতে যান।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, খুলনার দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ—রনি চৌধুরী ওরফে ‘গ্রেনেড বাবু’ গ্রুপ এবং শেখ পলাশ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধ থেকে আগেও বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সম্প্রতি কারাগারের ভেতরেও দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যার পর তাদের বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পুরোনো এই দ্বন্দ্ব থেকেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়ে থাকতে পারে বলে তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

খুলনা সদর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত দু’জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের পূর্বের বিরোধের বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

প্রস্তুত তারেক রহমানের বাসভবন ও অফিস

খুলনা আদালতপাড়ায় দিনের আলোতে দুই যুবককে গুলি ও কুপিয়ে হত্যা

আপডেট সময় ০৬:১৯:৫৯ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৫

 

সপ্তাহের প্রথম কর্মদিবস হওয়ায় রোববার সকাল থেকেই খুলনার আদালতপাড়া ছিল মানুষের ভিড়ে ঠাসা। ঠিক এমন সময় ভরদুপুরে সকলের সামনে ঘটে যায় ভয়াবহ এক হত্যাকাণ্ড। মহানগর দায়রা জজ আদালতের প্রধান ফটক দিয়ে বের হওয়ার মুহূর্তে মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করা হয় দুই যুবককে—ফজলে রাব্বি রাজন ও হাসিব হাওলাদারকে। পরে ধারালো অস্ত্র দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে কোপাতে নিশ্চিত করা হয় তাদের মৃত্যু।

দুপুর সোয়া ১২টার দিকে আদালত ভবনের সামনেই ঘটে এই নৃশংস ঘটনা। সিআইডি ঘটনাস্থল থেকে গুলির খোসা ও ধারালো অস্ত্র উদ্ধার করেছে।

নিহত রাজন রূপসার বাগমারার দক্ষিণ ডাঙ্গা এলাকার ইজাজ শেখের ছেলে এবং হাসিব নগরীর নতুন বাজার এলাকার মান্নান হাওলাদারের ছেলে। দু’জনই খুলনার আলোচিত সন্ত্রাসী শেখ পলাশের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাতে জানা যায়, অস্ত্র মামলায় হাজিরা দিতে আদালতে যান রাজন ও হাসিব। হাজিরা শেষে গেট দিয়ে বের হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ৬–৭ জন দুর্বৃত্ত তাদের ঘিরে ফেলে। রাজনের ঘাড়ে প্রথমেই চাপাতির কোপ পড়ে, সাথে সাথে আরেকজন তার মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে গুলি করে। হাসিবকেও একইভাবে গুলি করা হয়। মাটিতে লুটিয়ে পড়ার পর দু’জনকেই ধারালো অস্ত্র দিয়ে বারবার কোপাতে থাকে দুর্বৃত্তরা। চারদিকে মানুষ ছুটোছুটি করে নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নেন। পরে কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়ে পূর্ব পাশের সড়ক দিয়ে পালিয়ে যায় হামলাকারীরা।

হত্যার দৃশ্য আদালত ভবনের বারান্দায় দাঁড়ানো একজন ব্যক্তি মোবাইলে ধারণ করেন। ভিডিওতে দেখা যায়, মাটিতে পড়ে থাকা এক যুবকের শরীরে রাম দা দিয়ে হামলা চলছে, আর কয়েকজন পিস্তল হাতে দাঁড়িয়ে পাহারা দিচ্ছে।

জানা গেছে, সোনাডাঙ্গা থানার অস্ত্র মামলার এজাহারভুক্ত আসামি ছিলেন রাজন, এবং সন্দেহভাজন হিসেবে একই মামলায় অন্তর্ভুক্ত ছিলেন হাসিব। চার্জশিটেও দু’জনের নাম রয়েছে। তাই তারা একসঙ্গে আদালতে হাজিরা দিতে যান।

পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, খুলনার দুই শীর্ষ সন্ত্রাসী গ্রুপ—রনি চৌধুরী ওরফে ‘গ্রেনেড বাবু’ গ্রুপ এবং শেখ পলাশ গ্রুপের মধ্যে দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। এ বিরোধ থেকে আগেও বেশ কয়েকটি হত্যাকাণ্ড ঘটেছে। সম্প্রতি কারাগারের ভেতরেও দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়, যার পর তাদের বিভিন্ন কারাগারে স্থানান্তর করা হয়। পুরোনো এই দ্বন্দ্ব থেকেই হত্যাকাণ্ডটি ঘটানো হয়ে থাকতে পারে বলে তদন্তে খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

খুলনা সদর থানার ওসি শফিকুল ইসলাম বলেন, নিহত দু’জনের বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। তাদের পূর্বের বিরোধের বিষয়টি মাথায় রেখে তদন্ত করা হচ্ছে।