জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (জাকসু) নারী এজিএস আয়েশা সিদ্দিকা মেঘলা ফের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছেন। মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) তিনি ফেসবুকে ১৬টি স্ক্রিনশট প্রকাশ করে লিখেছেন—এ ধরনের বুলিংকারীদের যেন কখনো সন্তান না হয়; হলে তারা বাপ–মায়ের মতোই স্লাটশেমিং করবে।
পোস্টে মেঘলা জানান, বিগত কয়েক বছর তারকারা, রাজনীতিবিদ নারীরা এবং এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রতিনিধিরাও নিয়মিত সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছেন। জাকসু নির্বাচনের সময় প্রতিটি প্যানেলের নারী প্রার্থীর প্রতি সংগঠিতভাবে স্লাটশেমিং হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি। নির্বাচনের পর বিজয়ীদের হেনস্তা আরও বেড়েছে। আসন্ন জাতীয় নির্বাচন ঘিরে এ প্রবণতা আরও বাড়বে বলেও তার আশঙ্কা।
মেঘলা লিখেছেন, সাইবার বুলিং নিয়ে কথা বললেই কেউ কেউ বলেন—‘আমাদের দেশ এমনই, মেনে নিতে হবে।’ তাঁর ভাষায়, এরা ‘সর্বোচ্চ লেভেলের ফ্যাসিস্ট’; এ কথায় সাইবার বুলিংকে বৈধতা দেওয়া হয়। “মেনে নিলেই পরিপক্ব—আর প্রতিবাদ করলে আমরা নাকি বেয়াদব,”—যোগ করেন তিনি। বুলিংয়ের শিকার হওয়া নিয়ে কথা বললেও তাকে ‘ভিক্টিম সাজছে’ বলে কটাক্ষ করা হয়, এটিকে তিনি সমাজের ভয়ানক স্বভাবগত সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করেন।
জাকসুর এই জিএস জানান, তারকারা প্রতিদিন কতবার স্লাটশেমিংয়ের শিকার হন—সেই বিষয়ে যারা ক্যাম্পেইন করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী প্রতিনিধিরা ক্যাম্পেইন করলে তার চেয়েও ভয়াবহ চিত্র প্রকাশ পেত। “একটাও দিন নেই যেদিন আমরা স্লাটশেমিংয়ের শিকার হই না।”
বাংলাদেশে নারীদের প্রতিদিনের সাইবার বুলিংয়ের কথা তুলে ধরে মেঘলা বলেন, “এত নারীর চোখের পানি আর ব্যথার প্রতিদিন যেন আল্লাহ দেয়।” তিনি বলেন, এখন আর কাউকে হেদায়েত কামনা করেন না; বরং যারা বট আইডি, ফেক আইডি বা দলীয় পরিচয়ে নারীদের হেনস্তা করে—তাদের ওপর গজব নেমে আসুক।
সাইবার বুলিংয়ে নারীরাও অংশ নেয় উল্লেখ করে তিনি জানান, সমালোচনা আর স্লাটশেমিংয়ের পার্থক্য না বুঝে অনেকেই গালিগালাজ করে। বুলিংকারীদের উদ্দেশে তিনি কঠোর ভাষায় বলেন, নিজের পরিবারের নারীদের মুখ কল্পনা করে দেখলে এ আচরণকে তারা ‘সমালোচনা’ বলতে পারতেন কি না। তাদের জায়গা চিড়িয়াখানা বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
অবশেষে মেঘলা লিখেছেন, যারা নারীদের নিয়ে স্লাটশেমিং করেন, তারা কন্যাসন্তানের পিতা-মাতা হওয়ার যোগ্য নন। পোস্টের শেষে জানান, কমেন্ট বন্ধ রাখলেও ইনবক্সের গালি থামে না—এগুলো তার প্রাপ্ত স্লাটশেমিংয়ের মাত্র ২০ শতাংশ; বাকি ৮০ শতাংশ সংরক্ষণও করেননি।




















