ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদিয়া জেলার নবদ্বীপে হৃদয়স্পর্শী একটি ঘটনা সামনে এসেছে। এক নবজাতককে শীতের রাতে খোলা আকাশের নিচে রেলওয়ে কর্মীদের কলোনির একটি বাথরুমের সামনে রক্তমাখা অবস্থায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। শিশুটির গায়ে ছিল না কোনো কম্বল, কোনো চিঠি—আর আশপাশে ছিল না পরিবারের কোনো চিহ্নও।
কিন্তু নবজাতকটি পুরোপুরি একা ছিল না। স্থানীয়দের ভাষ্য অনুযায়ী, এলাকাটির পথকুকুরগুলো শিশুকে ঘিরে সারারাত নিখুঁত বৃত্ত তৈরি করে পাহারা দেয়। তারা কোনো শব্দ করেনি, কাউকে কাছে আসতেও দেয়নি—মনে হচ্ছিল নবজাতকের সুরক্ষার দায়িত্ব যেন নিজেরাই নিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা শুক্লা মণ্ডল সকালে এই দৃশ্য দেখে বিস্মিত হন। তিনি কাছে যেতেই কুকুরগুলো ধীরে ধীরে বৃত্ত শিথিল করে। এরপর শুক্লা নিজের ওড়নায় শিশুটিকে জড়িয়ে প্রতিবেশীদের ডাকেন।
দ্রুত নবজাতককে মহেশগঞ্জ হাসপাতালে নেওয়া হয়, পরে কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। চিকিৎসকদের মতে, শিশুর শরীরে বড় কোনো আঘাত নেই; মাথায় জমাট রক্ত জন্মের সময়ের। ধারণা করা হচ্ছে, জন্মের কিছুক্ষণের মধ্যেই শিশুটিকে ফেলে যাওয়া হয়।
পুলিশ সন্দেহ করছে, স্থানীয় কেউ রাতের অন্ধকারে নবজাতককে পরিত্যাগ করেছে। নবদ্বীপ পুলিশ ও চাইল্ড হেল্পলাইন শিশুটির দীর্ঘমেয়াদি নিরাপত্তার জন্য প্রক্রিয়া শুরু করেছে।
ঘটনার পর পথকুকুরগুলোর এমন আচরণে অভিভূত পুরো শহর। এক রেলকর্মী বলেন, “যে কুকুরগুলোকে আমরা তাড়াই, তারাই আজ অসাধারণ মানবতা দেখিয়েছে।”


























