দক্ষিণ এশিয়ার অকার্যকর সার্ক জোটকে এড়িয়ে বাংলাদেশ, চীন ও পাকিস্তানকে নিয়ে নতুন আঞ্চলিক সহযোগিতা কাঠামো গঠনের প্রস্তাব দিয়েছে পাকিস্তান। দেশটির উপপ্রধানমন্ত্রী ইশহাক দার গত বুধবার (৩ ডিসেম্বর) ইসলামাবাদ কনক্লেভ ফোরামে বলেন, “দক্ষিণ এশিয়ার উন্নয়ন ভারতের অনমনীয় অবস্থানের কাছে বন্দি থাকা উচিত নয়। তাই বাংলাদেশ ও চীনের সঙ্গে মিলে নতুন আঞ্চলিক জোট গঠনের সুযোগ রয়েছে।”
তিনি জানান, পাকিস্তান সংঘাত নয়, সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দিতে চায় এবং সার্কের বিকল্প একটি কার্যকর মঞ্চ তৈরি করাই তার মূল লক্ষ্য। ভারত–পাকিস্তানের তীব্র উত্তেজনার কারণে সার্ক দীর্ঘদিন অকেজো পড়ে আছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ প্রস্তাব এমন সময় এসেছে যখন দক্ষিণ এশিয়ায় রাজনৈতিক উত্তেজনা চরমে। ভারত ও পাকিস্তান ছোটখাটো যুদ্ধেও জড়িয়েছে, আর বাংলাদেশ–ভারত সম্পর্কও সাম্প্রতিক ঘটনাবলির কারণে তলানিতে পৌঁছেছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনাকে ভারতের আশ্রয় দেওয়া এবং পরবর্তীতে মানবতাবিরোধী অপরাধে মৃত্যুদণ্ডের রায় হওয়ায় দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক আরও খারাপ হয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, চীন–পাকিস্তান–বাংলাদেশের মার্চ মাসের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ধারাবাহিকতায় পাকিস্তানের এই প্রস্তাব আঞ্চলিক বাস্তবতার প্রতিফলন হলেও এর সফলতা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সার্কের স্থবিরতা কাটাতে পাকিস্তান নতুন জোট চাইলেও অন্যান্য দক্ষিণ এশীয় দেশ এতে যুক্ত হবে কি না, তা এখনো অনিশ্চিত।
দক্ষিণ এশিয়ার বাণিজ্য সহযোগিতা বিশ্বে সবচেয়ে কম—এলাকার ২০০ কোটি মানুষের মধ্যে আন্তঃবাণিজ্য মাত্র ৫ শতাংশ। তুলনায় আসিয়ানে তা ২৫ শতাংশ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, রাজনৈতিক বাধা দূর হলে দক্ষিণ এশিয়ার বাজারে ৬৭ বিলিয়ন ডলারের বাণিজ্যের সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রবীণ বিশ্লেষকরা মনে করেন, নতুন ত্রিপাক্ষিক জোট গঠনের সুযোগ থাকলেও এটি ভারত–বাংলাদেশ সম্পর্ককে আরও উত্তপ্ত করতে পারে এবং দক্ষিণ এশিয়ায় চীন–ভারত প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও তীব্র করবে।
সূত্র: আলজাজিরা


























