ঢাকা ১২:১৩ অপরাহ্ন, সোমবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ভয়াবহ ‘শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডের’ চিত্র তুলে ধরলেন প্রেস সচিব

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:৫৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫০৫ বার পড়া হয়েছে

 

২০১৩ সালের ৫ মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আবারও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, ভয় দেখানো ও হত্যা—এমন কৌশল দীর্ঘদিন ধরে একইভাবে ব্যবহার করেছে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তার মতে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সার্বজনীন জনতার প্রতিরোধেই এই কৌশলের অবসান ঘটে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে তিনি এ অভিযোগ করেন। তার বক্তব্যে শাপলা চত্বর অভিযান ঘিরে বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা, সাংবাদিকতার সময়কার তথ্য ও ঘটনার ধারাবাহিকতা উঠে আসে।

তিনি জানান, ৫ মে রাত থেকেই মতিঝিল-পল্টন-বিজয়নগর এলাকায় সংঘর্ষের খবরে হতাহতের তথ্য আসতে শুরু করে। এএফপি’র ঢাকাস্থ অফিস থেকে শাপলা চত্বরের অবস্থান তিনি নিজ চোখে দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লাশ আসতে থাকে, যার কারণ ও উৎস রাতেই নিশ্চিত করা যায়নি।

রাত আটটার দিকে মালিবাগের বারাকা জেনারেল হাসপাতালে ছয়টি গুলিবিদ্ধ লাশ নেওয়ার খবর প্রথম পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। দ্বিতীয় উৎস পাওয়ার পর প্রকাশিত এ তথ্য স্থানীয় গণমাধ্যমের যে কোনো সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায় বলে জানান তিনি।

পরদিন কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর–সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় আরও হতাহতের খবর সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ করে ভোরে বাড়ি ফিরতে থাকা হেফাজত সমর্থকদের ওপর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের গুলিবর্ষণে প্রায় ২০ জন নিহত হওয়ার তথ্য তারা হাসপাতালগুলো থেকে সংগ্রহ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, সে সময় পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ডিএমপি কমিশনার কোনো ধরনের হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু মাঠপর্যায়ের তথ্য-উপাত্তে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তেই থাকে—পুলিশ যেখানে সাতজনের কথা বলেছে, সেখানে এএফপি’র হিসাব পৌঁছায় ৪৯-এ। পরবর্তীতে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬০ বলে জানায় এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তদন্তেও একই ধরনের তথ্য উঠে আসে।

পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, সেদিন পল্টন ও আশপাশের এলাকায় বহু হত্যাকাণ্ডে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী সদস্যরা অংশ নেয়। তাদের মধ্যে দুজনকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন বলেও উল্লেখ করেন।

তার বক্তব্যে তিনি আরও লেখেন, পরবর্তী এগারো বছরে—আওয়ামী লীগ সরকার একই কৌশল ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, ভয় দেখানো ও হত্যার মাধ্যমে দমন করার চেষ্টা চালিয়েছে। আর ২০২৪ সালের জুলাইয়ে জনগণের অভূতপূর্ব প্রতিরোধের মুখে সরকার পতন ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

বাবরি মসজিদ তহবিল: হুমায়ুনের বাড়িতে ১১ ট্রাঙ্ক ভর্তি টাকা, অনলাইনে ৯৩ লাখ

ভয়াবহ ‘শাপলা চত্বর হত্যাকাণ্ডের’ চিত্র তুলে ধরলেন প্রেস সচিব

আপডেট সময় ১০:৫৭:৫৭ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ ডিসেম্বর ২০২৫

 

২০১৩ সালের ৫ মে রাতে মতিঝিলের শাপলা চত্বরকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হত্যাকাণ্ড নিয়ে আবারও আলোচনার জন্ম দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। তিনি দাবি করেছেন, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, ভয় দেখানো ও হত্যা—এমন কৌশল দীর্ঘদিন ধরে একইভাবে ব্যবহার করেছে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার। তার মতে, ২০২৪ সালের জুলাইয়ে সার্বজনীন জনতার প্রতিরোধেই এই কৌশলের অবসান ঘটে।

সোমবার (৮ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেইজে দেওয়া দীর্ঘ পোস্টে তিনি এ অভিযোগ করেন। তার বক্তব্যে শাপলা চত্বর অভিযান ঘিরে বিভিন্ন প্রত্যক্ষদর্শী বর্ণনা, সাংবাদিকতার সময়কার তথ্য ও ঘটনার ধারাবাহিকতা উঠে আসে।

তিনি জানান, ৫ মে রাত থেকেই মতিঝিল-পল্টন-বিজয়নগর এলাকায় সংঘর্ষের খবরে হতাহতের তথ্য আসতে শুরু করে। এএফপি’র ঢাকাস্থ অফিস থেকে শাপলা চত্বরের অবস্থান তিনি নিজ চোখে দেখেছেন বলে উল্লেখ করেন। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সেখানে লাশ আসতে থাকে, যার কারণ ও উৎস রাতেই নিশ্চিত করা যায়নি।

রাত আটটার দিকে মালিবাগের বারাকা জেনারেল হাসপাতালে ছয়টি গুলিবিদ্ধ লাশ নেওয়ার খবর প্রথম পাওয়া যায়। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের পর বিষয়টি নিশ্চিত হয়। দ্বিতীয় উৎস পাওয়ার পর প্রকাশিত এ তথ্য স্থানীয় গণমাধ্যমের যে কোনো সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায় বলে জানান তিনি।

পরদিন কাকরাইলের ইসলামী ব্যাংক হাসপাতাল ও নারায়ণগঞ্জের কাঁচপুর–সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় আরও হতাহতের খবর সংগ্রহ করা হয়। বিশেষ করে ভোরে বাড়ি ফিরতে থাকা হেফাজত সমর্থকদের ওপর বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের গুলিবর্ষণে প্রায় ২০ জন নিহত হওয়ার তথ্য তারা হাসপাতালগুলো থেকে সংগ্রহ করেন।

তিনি উল্লেখ করেন, সে সময় পুলিশ মহাপরিদর্শক ও ডিএমপি কমিশনার কোনো ধরনের হত্যার অভিযোগ অস্বীকার করেন। কিন্তু মাঠপর্যায়ের তথ্য-উপাত্তে মৃত্যুর সংখ্যা বাড়তেই থাকে—পুলিশ যেখানে সাতজনের কথা বলেছে, সেখানে এএফপি’র হিসাব পৌঁছায় ৪৯-এ। পরবর্তীতে মানবাধিকার সংগঠন ‘অধিকার’ মৃতের সংখ্যা প্রায় ৬০ বলে জানায় এবং হিউম্যান রাইটস ওয়াচের তদন্তেও একই ধরনের তথ্য উঠে আসে।

পোস্টে তিনি আরও দাবি করেন, সেদিন পল্টন ও আশপাশের এলাকায় বহু হত্যাকাণ্ডে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের অস্ত্রধারী সদস্যরা অংশ নেয়। তাদের মধ্যে দুজনকে তিনি ব্যক্তিগতভাবে চিনতেন বলেও উল্লেখ করেন।

তার বক্তব্যে তিনি আরও লেখেন, পরবর্তী এগারো বছরে—আওয়ামী লীগ সরকার একই কৌশল ব্যবহার করে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে আক্রমণ, ভয় দেখানো ও হত্যার মাধ্যমে দমন করার চেষ্টা চালিয়েছে। আর ২০২৪ সালের জুলাইয়ে জনগণের অভূতপূর্ব প্রতিরোধের মুখে সরকার পতন ঘটে বলে তিনি মন্তব্য করেন।