ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাবরি মসজিদ নির্মাণে দানের জোয়ার, অনলাইনে জমা ২ কোটি ৩৭ লাখ রুপি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:২১:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫১৭ বার পড়া হয়েছে

 

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় স্থগিত তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবিরের উদ্যোগে প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ নির্মাণকে ঘিরে দানের এক অভূতপূর্ব স্রোত দেখা দিয়েছে। ৬ ডিসেম্বর কবির ঘোষণার পর থেকেই অনলাইন–অফলাইনে বিপুল হারে অর্থ জমা পড়তে থাকে।

দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত অফলাইনে সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ রুপি, আর অনলাইনে দান অতিক্রম করেছে ২ কোটি রুপি। হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিউআর কোডের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ রুপি

বেলডাঙ্গার প্রস্তাবিত মসজিদের স্থানে রাখা দানবাক্সগুলো উপচে পড়েছে মানুষের দেওয়া টাকায়। রোববার থেকে নগদ গণনার কাজ শুরু হয়। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১টি দানবাক্স ও একটি বস্তায় থাকা টাকার মধ্যে ছয়টি বাক্স থেকে ৩৭.৩৩ লাখ রুপি গণনা সম্ভব হয়। বাকি বাক্সগুলোও রাতেই খোলা হয়।

স্থানীয় সমাজকর্মীরা বলছেন, চিকিৎসা, দুর্যোগ ত্রাণ বা শিক্ষা সহায়তার মতো মানবিক উদ্যোগে যেখানে অর্থ জোগাড় করা কঠিন, সেখানে ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণকে কেন্দ্র করে জনগণের এই সাড়া যেন “সমষ্টিগত আবেগের বিস্ফোরণ”।

৬ ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম দেখা যায়। অনেকেই দানবাক্সে টাকা দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ব্যাংকের দৈনিক জমার সীমা পূর্ণ হয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর অনেকে নোট ছুঁড়ে দিতে থাকেন বাক্সগুলোর দিকে।

রোববার রাতে স্থানীয় এক মাদ্রাসার ৩০ জন শিক্ষককে দিয়ে নগদ গণনার ব্যবস্থা করেন কবির। বহরমপুরের তার বাড়িতে সিসিটিভি নজরদারিতে ক্যাশ কাউন্টিং মেশিন দিয়ে গণনার পুরো প্রক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করা হয় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে।

মানুষের সাড়া প্রত্যাশার চেয়েও বেশি—মন্তব্য করেন কবির। দেশের বাইরেও দান এসেছে বলে দাবি করলেও বিদেশি মুদ্রা পাওয়ার গুজব অস্বীকার করেছেন তিনি।

এদিকে বাবরি মসজিদ নির্মাণ উদ্যোগকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে গেছে যখন কবির জানান, রোববার রাতে তিনি মৃত্যুহুমকি পেয়েছেন। যদিও তিনি এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি, তার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার থেকে ২৪ ঘণ্টা সশস্ত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনজন পুলিশ সদস্য সরকারি নিরাপত্তা হিসেবে তাকে পাহারা দিচ্ছেন।

কবির আরও জানান, আইএসএফ নেতা নবসাদ সিদ্দিকির মতো কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পেতে তিনি কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করবেন। এছাড়া আগামী দুই দিনের মধ্যে তিনি দিল্লি গিয়ে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করবেন, যার মধ্যে রয়েছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।


 

জনপ্রিয় সংবাদ

বাবরি মসজিদ নির্মাণে দানের জোয়ার, অনলাইনে জমা ২ কোটি ৩৭ লাখ রুপি

আপডেট সময় ১১:২১:১১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৯ ডিসেম্বর ২০২৫

 

মুর্শিদাবাদের বেলডাঙ্গায় স্থগিত তৃণমূল নেতা হুমায়ুন কবিরের উদ্যোগে প্রস্তাবিত বাবরি মসজিদ নির্মাণকে ঘিরে দানের এক অভূতপূর্ব স্রোত দেখা দিয়েছে। ৬ ডিসেম্বর কবির ঘোষণার পর থেকেই অনলাইন–অফলাইনে বিপুল হারে অর্থ জমা পড়তে থাকে।

দ্য টেলিগ্রাফ অনলাইনের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এ পর্যন্ত অফলাইনে সংগ্রহ হয়েছে প্রায় ৩৮ লাখ রুপি, আর অনলাইনে দান অতিক্রম করেছে ২ কোটি রুপি। হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন, সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কিউআর কোডের মাধ্যমে ব্যাংক অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে ২ কোটি ৩৭ লাখ রুপি

বেলডাঙ্গার প্রস্তাবিত মসজিদের স্থানে রাখা দানবাক্সগুলো উপচে পড়েছে মানুষের দেওয়া টাকায়। রোববার থেকে নগদ গণনার কাজ শুরু হয়। সোমবার সন্ধ্যা পর্যন্ত ১১টি দানবাক্স ও একটি বস্তায় থাকা টাকার মধ্যে ছয়টি বাক্স থেকে ৩৭.৩৩ লাখ রুপি গণনা সম্ভব হয়। বাকি বাক্সগুলোও রাতেই খোলা হয়।

স্থানীয় সমাজকর্মীরা বলছেন, চিকিৎসা, দুর্যোগ ত্রাণ বা শিক্ষা সহায়তার মতো মানবিক উদ্যোগে যেখানে অর্থ জোগাড় করা কঠিন, সেখানে ধর্মীয় স্থাপনা নির্মাণকে কেন্দ্র করে জনগণের এই সাড়া যেন “সমষ্টিগত আবেগের বিস্ফোরণ”।

৬ ডিসেম্বর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিপুল জনসমাগম দেখা যায়। অনেকেই দানবাক্সে টাকা দিতে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। ব্যাংকের দৈনিক জমার সীমা পূর্ণ হয়ে যাওয়ার ঘোষণার পর অনেকে নোট ছুঁড়ে দিতে থাকেন বাক্সগুলোর দিকে।

রোববার রাতে স্থানীয় এক মাদ্রাসার ৩০ জন শিক্ষককে দিয়ে নগদ গণনার ব্যবস্থা করেন কবির। বহরমপুরের তার বাড়িতে সিসিটিভি নজরদারিতে ক্যাশ কাউন্টিং মেশিন দিয়ে গণনার পুরো প্রক্রিয়া সোশ্যাল মিডিয়ায় লাইভ করা হয় স্বচ্ছতা বজায় রাখতে।

মানুষের সাড়া প্রত্যাশার চেয়েও বেশি—মন্তব্য করেন কবির। দেশের বাইরেও দান এসেছে বলে দাবি করলেও বিদেশি মুদ্রা পাওয়ার গুজব অস্বীকার করেছেন তিনি।

এদিকে বাবরি মসজিদ নির্মাণ উদ্যোগকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ বেড়ে গেছে যখন কবির জানান, রোববার রাতে তিনি মৃত্যুহুমকি পেয়েছেন। যদিও তিনি এখনো আনুষ্ঠানিক অভিযোগ করেননি, তার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার থেকে ২৪ ঘণ্টা সশস্ত্র ব্যক্তিগত নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়েছে। পাশাপাশি তিনজন পুলিশ সদস্য সরকারি নিরাপত্তা হিসেবে তাকে পাহারা দিচ্ছেন।

কবির আরও জানান, আইএসএফ নেতা নবসাদ সিদ্দিকির মতো কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা পেতে তিনি কলকাতা হাই কোর্টে আবেদন করবেন। এছাড়া আগামী দুই দিনের মধ্যে তিনি দিল্লি গিয়ে কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার সঙ্গে দেখা করবেন, যার মধ্যে রয়েছেন এআইএমআইএম প্রধান আসাদউদ্দিন ওয়াইসি।