ঢাকা ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাংলাদেশের বিজয়কে ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে মোদির পোস্ট!

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫১৪ বার পড়া হয়েছে

 

আজ ১৬ ডিসেম্বর, বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্ণতা। প্রতিবছরের মতো এবারও দিনটি বিশেষ মর্যাদায় উদযাপিত হচ্ছে। তবে এবারের বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে নরেন্দ্র মোদি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরকে ভারতের বিজয় হিসেবে তুলে ধরেন। তবে পুরো পোস্টে বাংলাদেশের নাম বা মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রেক্ষাপট উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

ফেসবুক পোস্টে মোদি লেখেন,
‘বিজয় দিবসে, আমরা আমাদের সেই সাহসী সেনাদের স্মরণ করছি যাদের সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতের এক ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিল। তাদের দৃঢ় মনোবল এবং নিস্বার্থ সেবা আমাদের দেশকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের ইতিহাসে একটি গৌরবান্বিত মুহূর্ত খোদাই করেছে। এই দিনটি তাদের সাহসকে সম্মান জানায় এবং তাদের অসাধারণ মনোবলকে মনে করিয়ে দেয়। সেনাদের এই বীরত্ব ভারতের বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’

এই পোস্ট দ্রুতই বাংলাদেশি নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মোদির বক্তব্যে বাংলাদেশের নাম না থাকায় অনেকেই ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টটি শেয়ার করে অনেকে মন্তব্য করেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম, যেখানে ভারত সহযোগী শক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছিল।

এর আগে ভারতের সেনাবাহিনী বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি আলাদা পোস্ট দেয়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়,
‘বিজয় দিবস শুধুমাত্র কোনো একটি তারিখ নয়—এটি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক ও চূড়ান্ত বিজয়ের একটি প্রতীক।’

পোস্টে আরও বলা হয়, মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে এবং একসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামকে চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে নিয়ে গেছে। এই বিজয় দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র নতুন করে অঙ্কন করেছে এবং নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ জন্ম নিয়েছে বলেও উল্লেখ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

একই সঙ্গে তারা জানায়, এই যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতা, অত্যাচার ও নিপীড়নের অবসান ঘটে।

সব মিলিয়ে বিজয় দিবসের দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং সেনাবাহিনীর পোস্ট—দুটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা বাংলাদেশি জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মেক্সিকোতে জরুরি অবতরণের সময় বিমান বিধ্বস্ত, নিহত ৭

বাংলাদেশের বিজয়কে ‘ভারতের ঐতিহাসিক বিজয়’ বলে মোদির পোস্ট!

আপডেট সময় ১১:০৩:৪১ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ ডিসেম্বর ২০২৫

 

আজ ১৬ ডিসেম্বর, বাঙালি জাতির মহান বিজয় দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে পাক হানাদার বাহিনীর আত্মসমর্পণের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় বাংলাদেশের স্বাধীনতার পূর্ণতা। প্রতিবছরের মতো এবারও দিনটি বিশেষ মর্যাদায় উদযাপিত হচ্ছে। তবে এবারের বিজয় দিবসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির একটি ফেসবুক পোস্ট ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে।

মঙ্গলবার (১৬ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে নরেন্দ্র মোদি ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বরকে ভারতের বিজয় হিসেবে তুলে ধরেন। তবে পুরো পোস্টে বাংলাদেশের নাম বা মুক্তিযুদ্ধের মূল প্রেক্ষাপট উল্লেখ না করায় বিষয়টি নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

ফেসবুক পোস্টে মোদি লেখেন,
‘বিজয় দিবসে, আমরা আমাদের সেই সাহসী সেনাদের স্মরণ করছি যাদের সাহসিকতা এবং আত্মত্যাগ ১৯৭১ সালে ভারতের এক ঐতিহাসিক বিজয় নিশ্চিত করেছিল। তাদের দৃঢ় মনোবল এবং নিস্বার্থ সেবা আমাদের দেশকে রক্ষা করেছে এবং আমাদের ইতিহাসে একটি গৌরবান্বিত মুহূর্ত খোদাই করেছে। এই দিনটি তাদের সাহসকে সম্মান জানায় এবং তাদের অসাধারণ মনোবলকে মনে করিয়ে দেয়। সেনাদের এই বীরত্ব ভারতের বহু প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করে চলেছে।’

এই পোস্ট দ্রুতই বাংলাদেশি নেটিজেনদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। মোদির বক্তব্যে বাংলাদেশের নাম না থাকায় অনেকেই ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টটি শেয়ার করে অনেকে মন্তব্য করেন, মুক্তিযুদ্ধ ছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রাম, যেখানে ভারত সহযোগী শক্তি হিসেবে ভূমিকা রেখেছিল।

এর আগে ভারতের সেনাবাহিনী বিজয় দিবস উপলক্ষে একটি আলাদা পোস্ট দেয়। সেখানে মুক্তিযোদ্ধাদের বীরত্বের কথা স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়। ভারতীয় সেনাবাহিনী জানায়,
‘বিজয় দিবস শুধুমাত্র কোনো একটি তারিখ নয়—এটি ১৯৭১ সালের যুদ্ধে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীর ঐতিহাসিক ও চূড়ান্ত বিজয়ের একটি প্রতীক।’

পোস্টে আরও বলা হয়, মুক্তিবাহিনী ও ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে এবং একসঙ্গে বাংলাদেশের স্বাধীনতার সংগ্রামকে চূড়ান্ত বিজয়ের দিকে নিয়ে গেছে। এই বিজয় দক্ষিণ এশিয়ার মানচিত্র নতুন করে অঙ্কন করেছে এবং নতুন রাষ্ট্র বাংলাদেশ জন্ম নিয়েছে বলেও উল্লেখ করে ভারতীয় সেনাবাহিনী।

একই সঙ্গে তারা জানায়, এই যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর চালানো নৃশংসতা, অত্যাচার ও নিপীড়নের অবসান ঘটে।

সব মিলিয়ে বিজয় দিবসের দিনে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এবং সেনাবাহিনীর পোস্ট—দুটি ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে, যা বাংলাদেশি জনমনে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে।