ঢাকা ০৫:৩০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ০৭ জুন ২০২৫, ২৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ঈশ্বরদীতে বালু মহাল নিয়ন্ত্রণে ফিল্মি স্টাইলে গুলিবর্ষণ ও মহড়া, আতঙ্কে নদীপাড়ের বাসিন্দারা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:২৭:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫
  • ৫২৪ বার পড়া হয়েছে

দেখে মনে হতে পারে কোনো হলিউড-বলিউড সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্য। নদীপথে আসার সময় হঠাৎ শুরু হয় গুলিবর্ষণ, পরে নদীর তীরে নেমেও চলে সশস্ত্র মহড়া, অফিসে ভাঙচুর আর লুটপাট। এমন রোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া ঘাটে।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ও দুপুরে এ ঘটনায় পুরো এলাকা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বালু মহাল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতা চালিয়েছে কথিত সন্ত্রাসী কাকন বাহিনী।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নাটোরের লালপুর থেকে আসা কাকন বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীর বালু মহাল নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। ঈশ্বরদীতেও প্রভাব বিস্তারে নেমেছে তারা। সকালে নদীপথে এসে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে এবং পরে নদীতীরে নেমে ফের গুলিবর্ষণ করে। সেইসঙ্গে বালু ব্যবসায়ীদের অফিস ভাঙচুর করে লুটপাট চালানো হয়। এমনকি নদীতে মাছ ধরতে নামা মাঝিদেরও গুলি করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর নদীপাড়ের মানুষজন ভয়াবহ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে রাতে নিজ বাড়িতেও থাকতে পারছেন না।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন,

“কাকন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। গত ১৬ বছর ধরে লালপুর এলাকায় একচেটিয়া বালুর নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে। এখন সে ঈশ্বরদী ও লালপুরের কিছু পলাতক আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে সবকিছু দখলে নিতে চাইছে।”

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রতিবাদে বিকেলে ইসলামপাড়া ঘাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

ঘটনার পর সেনাবাহিনী, র‍্যাব, থানা পুলিশ ও নৌপুলিশের সমন্বয়ে একটি যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নুর বলেন,

“বালু মহালকে কেন্দ্র করে গত দুই দিনে দুটি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আগের ঘটনার মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। আজকের ঘটনায়ও আমরা যৌথ অভিযানে এসেছি। কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থায়ী তৎপরতা ছাড়া এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব নয়। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।

জনপ্রিয় সংবাদ

বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার জন্য উপহার দেওয়া ‘কালো মানিক’ গরুটি ফের উপহার হয়ে ফিরল কৃষক সোহাগ মৃধার কাছে

ঈশ্বরদীতে বালু মহাল নিয়ন্ত্রণে ফিল্মি স্টাইলে গুলিবর্ষণ ও মহড়া, আতঙ্কে নদীপাড়ের বাসিন্দারা

আপডেট সময় ১১:২৭:২০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৬ জুন ২০২৫

দেখে মনে হতে পারে কোনো হলিউড-বলিউড সিনেমার অ্যাকশন দৃশ্য। নদীপথে আসার সময় হঠাৎ শুরু হয় গুলিবর্ষণ, পরে নদীর তীরে নেমেও চলে সশস্ত্র মহড়া, অফিসে ভাঙচুর আর লুটপাট। এমন রোমহর্ষক ঘটনা ঘটেছে পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার সাড়া ইউনিয়নের ইসলামপাড়া ঘাটে।

বৃহস্পতিবার (৫ জুন) সকাল ও দুপুরে এ ঘটনায় পুরো এলাকা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। বালু মহাল ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই সহিংসতা চালিয়েছে কথিত সন্ত্রাসী কাকন বাহিনী।

স্থানীয়দের ভাষ্যমতে, নাটোরের লালপুর থেকে আসা কাকন বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে পদ্মা নদীর বালু মহাল নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। ঈশ্বরদীতেও প্রভাব বিস্তারে নেমেছে তারা। সকালে নদীপথে এসে এলোপাতাড়ি গুলিবর্ষণ করে এবং পরে নদীতীরে নেমে ফের গুলিবর্ষণ করে। সেইসঙ্গে বালু ব্যবসায়ীদের অফিস ভাঙচুর করে লুটপাট চালানো হয়। এমনকি নদীতে মাছ ধরতে নামা মাঝিদেরও গুলি করে তাড়িয়ে দেওয়া হয়।

এই ঘটনার পর নদীপাড়ের মানুষজন ভয়াবহ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। অনেকে রাতে নিজ বাড়িতেও থাকতে পারছেন না।

স্থানীয়রা অভিযোগ করে বলেন,

“কাকন আওয়ামী লীগের রাজনীতি করে। গত ১৬ বছর ধরে লালপুর এলাকায় একচেটিয়া বালুর নিয়ন্ত্রণ ছিল তার হাতে। এখন সে ঈশ্বরদী ও লালপুরের কিছু পলাতক আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে নিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গঠন করে সবকিছু দখলে নিতে চাইছে।”

এই ভয়াবহ পরিস্থিতির প্রতিবাদে বিকেলে ইসলামপাড়া ঘাটে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তারা নিরাপত্তা নিশ্চিতের দাবি জানান।

ঘটনার পর সেনাবাহিনী, র‍্যাব, থানা পুলিশ ও নৌপুলিশের সমন্বয়ে একটি যৌথবাহিনী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন তারা।

ঈশ্বরদী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুন নুর বলেন,

“বালু মহালকে কেন্দ্র করে গত দুই দিনে দুটি গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। আগের ঘটনার মামলা হয়েছে, তদন্ত চলছে। আজকের ঘটনায়ও আমরা যৌথ অভিযানে এসেছি। কারা এর সঙ্গে জড়িত, তা তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

স্থানীয়দের মতে, প্রশাসনের কড়া নজরদারি ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর স্থায়ী তৎপরতা ছাড়া এই ধরনের সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বন্ধ করা সম্ভব নয়। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।