চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার গোডাউন গরুর বাজারে প্রকাশ্যে শ্বশুরকে কুপিয়ে হত্যা করেছে মোহাম্মদ হোসেন নামের এক ব্যক্তি। শুক্রবার বিকেল ৫টার দিকে কাপ্তাই সড়কের পাশে এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। স্থানীয় জনতা পালানোর সময় ঘাতককে আটক করে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
নিহত ব্যক্তি ওসমান গণি (৫২) রাঙ্গুনিয়া উপজেলার শিলক ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের রাজাপাড়া এলাকার বাসিন্দা। আর ঘাতক জামাতা মোহাম্মদ হোসেন (৪০) পূর্ব সরফভাটা ইউনিয়নের আজলা বাপের বাড়ির মোহাম্মদ হাশেমের ছেলে।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শিলক রাবার ড্যাম এলাকায় থাকা নিজস্ব খামার থেকে তিনটি গরু বিক্রির উদ্দেশ্যে সকালে গোডাউন গরুর বাজারে আসেন ওসমান গণি। এর মধ্যে দুটি গরু বিক্রি হলেও তৃতীয়টি বিক্রির সময় ঘাতক জামাতা হোসেন বাজারে এসে ধারালো দা দিয়ে ওসমান গণিকে প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করে। ঘটনাস্থলে তার মরদেহ প্রায় দেড় ঘণ্টা পড়ে থাকলেও, স্থানীয়দের তৎপরতায় পালিয়ে যেতে পারেনি ঘাতক।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঘাতক হোসেন শ্বশুরকে হত্যার জন্য পরিকল্পিতভাবে বাজারে আসে। শ্বশুরকে খুঁজে পেয়ে প্রথমে বাজারের একপাশে দাঁড়িয়ে থাকা একটি পাকা ওয়ালের সঙ্গে দা শান দেয়। এরপর শ্বশুরকে লক্ষ্য করে একের পর এক আঘাত করে মাথায় ও শরীরে কুপিয়ে হত্যা করে। স্থানীয়রা তাকে ধাওয়া করে ধরে ফেলে এবং একটি সিএনজি অটোরিকশা অফিসে আটকে রাখে। সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যদের সহায়তায় পুলিশ এসে তাকে হেফাজতে নেয়।
নিহতের মেয়ে রিনা আক্তার (২২) কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানান, ২০১৯ সালে তাদের বিয়ে হয়। ৬ ও ৩ বছর বয়সী দুটি সন্তান রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরেই হোসেন তাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। নির্যাতনের কারণে গত বছর সে বাবার বাড়িতে ফিরে আসে এবং ৯ এপ্রিল গার্মেন্টসে চাকরি নেয়। ঈদের ছুটিতে বাড়ি ফিরতে গিয়ে বাবার খুন হওয়ার খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন।
হত্যাকাণ্ডের কারণ হিসেবে হোসেন দাবি করে, তার স্ত্রী স্বর্ণ ও সন্তান নিয়ে বাবার বাড়িতে চলে যাওয়ায় সে ক্ষুব্ধ ছিল। ছেলেকে দেখতে গিয়ে শ্বশুরের কাছে হুমকির শিকার হয়েছে বলেও দাবি করে সে। তবে নিহতের পরিবার এ বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে এবং হত্যার সর্বোচ্চ শাস্তি, অর্থাৎ ফাঁসির দাবি জানায়।
রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুমন কবির মৃধা জানান,“ঘটনার পরপরই মরদেহ উদ্ধার করে থানায় আনা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। ঘাতক হোসেনকেও আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন।”