খুলনার পাইকগাছা উপজেলার কাটাখালী বাজার এলাকায় চাঁদা না পেয়ে মিজানুর সরদার নামে এক ঘের ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে আহত করেছে স্থানীয় একটি সন্ত্রাসী চক্র। শনিবার (৮ জুন), ঈদের দিন রাতে এ ঘটনা ঘটে। এরপর উত্তেজিত এলাকাবাসী চক্রের প্রধান শফি গাজীর বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন ধরিয়ে দেয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে শফি গাজী ও তার অনুসারীরা এলাকায় চাঁদাবাজি, দখলবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপে জড়িত। সম্প্রতি ঈদ উপলক্ষে ঘের ব্যবসায়ী মিজানুর রহমানের কাছে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করা হয়। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে ঈদের রাতে তার বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে কুপিয়ে গুরুতর জখম করা হয়।
আহত মিজানুরকে পাইকগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনার প্রতিবাদে রোববার (৯ জুন) সকালে উত্তেজিত এলাকাবাসী শফির এক সহযোগী আনারুলকে ধরে গণপিটুনি দেয়। এরপর শফি গাজীর বাড়ি ও দুটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয় স্থানীয়রা।
পুলিশ জানিয়েছে, শফির বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সাতটি দেশীয় অস্ত্র এবং বিদেশি মদের তিনটি খালি বোতল উদ্ধার করা হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয় গৃহবধূ রুপালি বেগম বলেন, “রাত হলেই শফি বাহিনী অস্ত্র নিয়ে এলাকায় মহড়া দেয়। আমরা প্রতিনিয়ত আতঙ্কে থাকি। অনেক পরিবার ভয়ে বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে।”
স্থানীয় বাসিন্দা মোস্থফা গাজী জানান, “গত ৩০ মে চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে মিছিল করেছিলাম। এরপর থেকেই আমাকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।”
কাঁটাখালী বাজার কমিটির সভাপতি ও বিএনপি নেতা আসাদুজ্জামান ময়না বলেন, “শফি গাজী ও তার বাহিনীর অত্যাচারে বাজারের ব্যবসায়ীরা অতিষ্ঠ। পুলিশের কাছে বহুবার অভিযোগ জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। এবার এলাকাবাসী নিজেরাই প্রতিরোধ গড়েছে।”
এ ঘটনায় এলাকায় তীব্র উত্তেজনা বিরাজ করছে। স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে শফি গাজী বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রশাসন নিরব ভূমিকা পালন করছিল। তারা দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়েছেন।
পাইকগাছা থানার ওসি জানিয়েছেন, “পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এ ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”