বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমীর ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি প্রবাসীরা আজও ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত। রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখলেও তাদের নাগরিক অধিকার—বিশেষত ভোটাধিকার—নিশ্চিত হয়নি, যা অবিচার। তিনি বলেন, “তাদেরকে রেমিট্যান্স যোদ্ধা বলবেন, আর নাগরিকত্বের প্রথম অধিকার ভোট দিতে দেবেন না, এটা হবে না।”
সোমবার (৯ জুন) দুপুরে মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা জামায়াত আয়োজিত ঈদ পুনর্মিলনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
ডা. শফিক বলেন, গত সাড়ে ১৫ বছর যারা ক্ষমতায় ছিল, তারা জাতির ওপর নির্মম জুলুম চালিয়েছে। শিশু থেকে বৃদ্ধ—কাউকে রেহাই দেওয়া হয়নি। তারপরও তারা অনুশোচনা করে না, মাফ চায় না, বরং জাতিকে অস্থির করতে চায়। তিনি বলেন, জাতির ওপর এত জুলুম করার পরও যারা লজ্জিত না, তারা নৈতিকভাবে দেউলিয়া।
তিনি সেনাবাহিনী প্রসঙ্গে বলেন, “আমরা সেনাবাহিনীকে জনগণের পাশে দেখতে চাই। তারা কোনো দলের না, কোনো দলের বিপক্ষেও না। তারা দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের রক্ষক, আমাদের গর্ব।”
যুবসমাজের ভূমিকাকে স্বীকৃতি দিয়ে জামায়াত আমীর বলেন, “তোমাদের নেতৃত্বে বাংলাদেশে পরিবর্তনের ঢেউ এসেছে। এবারের ভোটের লড়াইও তোমরাই সামনে থেকে লড়বে।” তিনি দাবি করেন, নির্বাচনের সিডিউলের আগে যাদের বয়স ১৮ পূর্ণ হবে, তাদের ভোটাধিকার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি নির্বাচনী সময়সূচি নিয়ে বলেন, “আমরা প্রধান উপদেষ্টার কথায় আস্থা রাখতে চাই। তিনি বলেছেন এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হবে। সেই প্রতিশ্রুতি যেন তিনি রক্ষা করেন।”
ডা. শফিকুর রহমান বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থারও তীব্র সমালোচনা করে বলেন, এই শিক্ষা ব্যবস্থা নৈতিকতা শেখায় না, চাকরি দেয় না। তিনি বলেন, “এই ব্যবস্থাকে ছুড়ে ফেলতে হবে। জামায়াত ক্ষমতায় এলে শিক্ষা ব্যবস্থায় আমূল সংস্কার এনে এমন ব্যবস্থা করবে যাতে শিক্ষার্থী নিজের পছন্দমতো কাজ করতে পারে এবং কেউ বেকার না থাকে।”
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বড়লেখা উপজেলা জামায়াতের আমীর এমদাদুল ইসলাম এবং সঞ্চালনা করেন সেক্রেটারি আব্দুল বাছিত। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, সিলেট মহানগর জামায়াতের আমীর মো. ফখরুল ইসলাম, মৌলভীবাজার জেলা জামায়াতের নেতৃবৃন্দসহ স্থানীয় ও কেন্দ্রীয় নেতারা।