রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর ইউনিয়নের হাতিনাদা গ্রামে এক ব্যবসায়ীর বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী আবদুল হান্নান দাবি করেছেন, পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা না দেওয়ায় তার বাড়িতে এই হামলার ঘটনা ঘটে।
ঘটনাটি ঘটে সোমবার (৯ জুন) দুপুরে। হামলায় নেতৃত্ব দিয়েছেন পুঠিয়া উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি রফিকুল ইসলাম বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে। হান্নান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
আবদুল হান্নান জানান, গত ৫ আগস্ট থেকে বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলাম তার কাছে পাঁচ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে আসছিলেন। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানানোর পর ঘন ঘন হুমকি ও তাগাদা পেতে থাকেন।
৯ জুন বিকালে, রফিকুলের নেতৃত্বে ১০-১২ জনের একটি সশস্ত্র দল হান্নানের বাড়িতে হামলা চালায়। প্রথমে বাড়ির সব ঘরে লুটপাট ও ভাঙচুর চালানো হয়, এরপর পেছনের দুটি ঘরে পেট্রোল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। এ সময় পরিবারের সদস্যরা প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে গিয়ে পাশের ধানের চাতালে আশ্রয় নেন। অগ্নিকাণ্ডে একটি ছাগল পুড়ে মারা যায় এবং আরেকটি দগ্ধ হয়।
হান্নান বলেন, “আমি আওয়ামী লীগের কোনো নেতা না, শুধু সমর্থক। আমার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নেই। শুধু চাঁদা না দেওয়ার কারণেই এই নির্মম হামলা চালানো হয়েছে। বিকালে তারা আমার বাড়ি পুড়িয়ে মারার চেষ্টা করেছে।”
তিনি আরও জানান, হামলাকারীরা বাড়ির মূল্যবান সব জিনিসপত্র লুট করে নিয়ে গেছে, আর যেগুলো নিতে পারেনি ভাঙচুর করে নষ্ট করেছে।
ঘটনার খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। সন্ধ্যায় সেনাবাহিনী ও থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।
পুঠিয়া থানার ওসি কবির হোসেন বলেন, “ঘটনাস্থলে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের প্রমাণ মিলেছে। অভিযোগ পাওয়ার পরপরই আমরা অভিযান শুরু করেছি। আসামিরা পলাতক রয়েছে, তাদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।”
বিএনপি নেতা রফিকুল ইসলামের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করেও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদ বলেন, “ঘটনাটি শুনেছি। রফিকুল যদি সত্যিই এমন কোনো অপরাধ করে থাকে, দলীয়ভাবে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
এই ঘটনায় স্থানীয় এলাকায় চরম উত্তেজনা ও আতঙ্ক বিরাজ করছে। সাধারণ মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। প্রশাসনের কাছে দাবি উঠেছে— দ্রুত তদন্ত ও অপরাধীদের গ্রেফতার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা হোক।