গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাশেদ খান কড়া ভাষায় হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, “শেখ হাসিনা যদি বাপের বেটি হয়ে থাকেন, তবে বিদেশে বসে উসকানি না দিয়ে দেশে ফিরে এসে রাজনীতি করুন।” বুধবার (১১ জুন) সকালে ঝিনাইদহ শহরের একটি রেস্তোরাঁয় স্থানীয় সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে এসব মন্তব্য করেন তিনি।
রাশেদ খান বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসের পদত্যাগ তারা চায়নি, বরং সরকারের ব্যর্থতা তুলে ধরতেই সমালোচনা করেছে। কিন্তু সরকারপ্রধান নিজেই পদত্যাগের নাটক করেছেন, যা জনগণকে “ইমোশনালি ব্ল্যাকমেইল” করার শামিল।
তিনি আরও বলেন, গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে গঠিত সরকার হয়েও জনগণ ও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে পরামর্শ না করে একক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করছে সরকার, যা একপ্রকার স্বৈরতন্ত্রের ইঙ্গিত।
সরকারের উপদেষ্টাদের ঘিরে সাম্প্রতিক সময়ের নানা বিতর্ক নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। তার অভিযোগ, প্রতিমাসে উপদেষ্টারা সম্পদের হিসাব দেবেন বলে ঘোষণা দেওয়া হলেও গত ১০ মাসে কেউই তা করেননি। বরং কয়েকজন উপদেষ্টার সহকারীর এনআইডি লক করা হয়েছে, তাদের বিদেশ যাত্রায় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে—যা সরকারের অভ্যন্তরীণ নাটক বলে আখ্যা দেন রাশেদ।
এছাড়া, এক নারী উপদেষ্টার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠলেও তার বিরুদ্ধে কোনো তদন্ত শুরু হয়নি বলেও অভিযোগ করেন তিনি।
নির্বাচনের সময় নির্ধারণ নিয়েও অসন্তোষ প্রকাশ করেন রাশেদ খান। তার ভাষায়, “এপ্রিল মাসে ভোটের সিদ্ধান্ত একটা পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। সরকার বলে, ৪০ শতাংশ ভোট না পড়লে পুনরায় নির্বাচন হবে, অথচ আমাদের দাবিকে উপেক্ষা করে মাত্র তিনটি দলের সুপারিশে রোডম্যাপ ঘোষণা করেছে। তাহলে বাকিরা কি দল নয়?”
তিনি প্রশ্ন তোলেন, “আন্দোলনের দাবি পূরণ হলে শেখ পরিবারের কেউ এখনো কেন গ্রেপ্তার হয়নি? তাদের সম্পদ বাজেয়াপ্ত হয়নি কেন?”
তিনি আরও বলেন, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের উচিত দুর্নীতিবাজ ও নির্যাতনকারীদের চিহ্নিত করে জনগণের কাছে ক্ষমা চাওয়া।
রাশেদ খান বলেন, “শেখ হাসিনা যেদিন দেশ ছেড়েছেন, সেদিনই তার রাজনৈতিক মৃত্যু ঘটেছে। এখন তিনি বিদেশে বসে উসকানি দিচ্ছেন।”
এ সময় উপস্থিত ছিলেন গণঅধিকার পরিষদের ঝিনাইদহ জেলা সভাপতি সাখাওত হোসেন, সাধারণ সম্পাদক ইকবাল জাহিদ রাজন, ছাত্র অধিকার পরিষদের জেলা সভাপতি আব্দুল আল মামুন, সাধারণ সম্পাদক রায়হান হোসেন, যুব অধিকার পরিষদের রকিবুল হাসান, পৌর কমিটির সভাপতি মাহফুজুর রহমান এবং সদর উপজেলার সভাপতি হালিম পারভেজ।