গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি ও ডাকসুর সাবেক ভিপি নুরুল হক নুর বিএনপির দেওয়া রাজনৈতিক সহযোগিতার চিঠিকে “আশীর্বাদ নয়, অভিশাপ” বলে আখ্যায়িত করেছেন। শুক্রবার (১৩ জুন) বিকেলে পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলা গেস্ট হাউজের সামনে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ বক্তব্য দেন।
নুর বলেন, “বিএনপির কেন্দ্র থেকে দেওয়া সহযোগিতার চিঠির কারণে এখন মাঠ পর্যায়ে আমাদের সঙ্গে দন্ধ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা আশীর্বাদ চেয়েছিলাম, কিন্তু তারা আমাদের অভিশাপ দিয়েছে। এর ফলে নেতাকর্মীদের হামলা-মামলার মুখোমুখি হতে হচ্ছে।”
তিনি এ পরিস্থিতির জন্য সরাসরি দায়ী করেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হাসান মামুনকে। নুরুল হক নুর বলেন, “হাসান মামুনের মতো নেতারা যদি এখনই নিয়ন্ত্রণে না আসে, তবে জনগণ বিএনপির দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে।”
নুর বলেন, বৃহস্পতিবার (১২ জুন) রাত থেকে গলাচিপার চরবিশ্বাস এলাকায় বিএনপি ও গণঅধিকার নেতাকর্মীদের মধ্যে একাধিকবার সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। এর পর রাতে বকুলবাড়িয়া এলাকায় তাঁকে অবরুদ্ধ করে রাখে বিএনপির স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
রাত সাড়ে ৩টায় পুলিশের পাশাপাশি সেনাবাহিনী এসে তাঁকে উদ্ধার করে গলাচিপা উপজেলা গেস্ট হাউজে পৌঁছে দেয়। এ সময় নুর অভিযোগ করেন, “এভাবে একজন রাজনৈতিক নেতাকে অবরুদ্ধ রাখা শুধু অগণতান্ত্রিক নয়, বরং রাজনৈতিক হীন মানসিকতার প্রকাশ।”
নুরুল হক নুর জানান,“গণঅধিকার পরিষদ এখনো কোনো দলের সঙ্গে আনুষ্ঠানিকভাবে জোট বাঁধেনি। গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে যদি আওয়ামী লীগ বিদায়ও নেয়, তবু যেন আরেকটি ফ্যাসিবাদী শক্তি জন্ম না নেয়, সেটা নিয়েই আমরা সতর্ক।”
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় নিজের উপর হামলা ও হয়রানির প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “ডাকসু নির্বাচনের সময় আমার ওপর হামলা হয়েছিল। এমনকি চুরির মিথ্যা মামলা পর্যন্ত দেওয়া হয়েছিল। এখন আবার অন্য নামে হামলা-মামলার শিকার হচ্ছি, শুধু দলের রঙটা বদলে গেছে।”
সংবাদ সম্মেলনে জেলা গণঅধিকার পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মো. শাহ আলম সিকদার, বরিশাল মহানগর ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আবু নাঈম, ও অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নুরুল হক নুরের এই মন্তব্য দেশের রাজনীতিতে এক নতুন উত্তেজনার জন্ম দিয়েছে, বিশেষ করে বিএনপির অভ্যন্তরে কেন্দ্র ও তৃণমূলে যোগাযোগের ফাটল এবং বিরোধী ঐক্যপ্রক্রিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে।