ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান কার্যালয় নগর ভবন টানা ১১ দিন ধরে তালাবদ্ধ রয়েছে। বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনকে ডিএসসিসির মেয়র পদে দায়িত্ব দেওয়ার দাবিতে তার সমর্থকরা নগর ভবনের প্রধান ফটকে তালা লাগিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। এতে করে নাগরিক সেবা কার্যক্রম সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের সূত্রে জানা গেছে, আদালতের রায়ের আলোকে ইশরাক হোসেনকে মেয়র হিসেবে শপথ পড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে সরকার। আজ সোমবারই তার শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মো. রেজাউল মাকছুদ জাহেদী জানান, “আদালতের রায় আমরা পেয়েছি। সে আলোকে আলোচনা চলছে। যেহেতু ২৬ মের মধ্যে শপথ গ্রহণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে, তাই প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।”
এরই মধ্যে ডিএসসিসির প্রশাসক মো. শাহজাহান মিয়াকে ঢাকা ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) পদে অতিরিক্ত দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কাওরানবাজারে ওয়াসা ভবনে অফিস করছেন।
তিনি বলেন, “সিটি করপোরেশনের মেয়র শপথ গ্রহণ করলেই প্রশাসকের পদ বিলুপ্ত হয়ে যায়। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেওয়ার কোনো বিষয় থাকে না।”
নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপন স্থগিত চেয়ে করা একটি রিট খারিজ হয়ে যাওয়ার পর, সরকার এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে কয়েক দফা বৈঠক হয়েছে। রবিবার পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠান নিয়ে আলোচনা হয়, যদিও প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূসের পদত্যাগ নিয়ে কিছুটা অনিশ্চয়তা ছিল।
এদিকে, ১৪ মে থেকে শুরু হওয়া আন্দোলনের ফলে জন্ম-মৃত্যু নিবন্ধন, ট্রেড লাইসেন্স, বর্জ্য অপসারণ, জলাবদ্ধতা নিরসন ও কোরবানির অস্থায়ী হাট সংক্রান্ত কার্যক্রম সম্পূর্ণরূপে বন্ধ রয়েছে। ফলে নাগরিকরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন।
ডিএসসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. রাসেল রহমান জানিয়েছেন, “নগর ভবন এখনো তালাবদ্ধ রয়েছে, সেবা কার্যক্রমও বন্ধ। কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা প্রবেশ করতে পারছেন না।”
সরেজমিনে দেখা গেছে, নগর ভবনের ফটকে তালা ঝুলছে এবং আন্দোলনরত কর্মচারীরা ‘ঢাকাবাসী’ ব্যানারে মিছিল করছেন। আন্দোলনের কারণে ডিএসসিসির সমস্ত দাপ্তরিক কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে।
তবে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা আশা প্রকাশ করেছেন, আদালতের কোনো ভিন্ন নির্দেশনা না এলে আজই ইশরাক হোসেন মেয়র হিসেবে শপথ নিতে পারেন, যার মাধ্যমে নগর ভবনের অচলাবস্থা নিরসনের সম্ভাবনা তৈরি হবে।