সিলেটের ওসমানীনগর উপজেলা বিএনপির পাঠানো এক চিঠিতে দক্ষিণ সুরমার একটি মামলার ১৫ জন আসামিকে “বিএনপি সমর্থক” দাবি করে তাদের অব্যাহতির সুপারিশ করা হয়েছে। তবে যাদের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, তদন্তে তারা সবাই আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ বলে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
২০২৪ সালের দক্ষিণ সুরমা সিআর মামলা নম্বর ৩৭৪-এ অভিযুক্ত এই ১৫ জনের মধ্যে রয়েছেন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা থেকে শুরু করে স্থানীয় আওয়ামী লীগ কর্মীও। অথচ বিএনপির পক্ষ থেকে থানাকে লেখা চিঠিতে দাবি করা হয়, তারা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের সক্রিয় সমর্থক।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দীন ও সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহর স্বাক্ষরিত চিঠিতে দক্ষিণ সুরমা থানার ওসিকে বলা হয়, “তারা বিএনপি-সমর্থক হওয়ায় মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হলো।” চিঠিতে বাদী হিসেবে মামলার দায়েরকারী সাহেদ আহমদের নাম, ঠিকানা ও ফোন নম্বর উল্লেখ ছিল, তবে সেই নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চিঠিতে নাম থাকা ১৫ জনের সবাই আওয়ামী লীগ ঘনিষ্ঠ বলে জানা গেছে। যেমন ৭ নম্বরের আসামি সাইদুর রহমান পিন্টু সিলেট জেলা ছাত্রলীগের সদস্য, ১১ নম্বরের আমির আলী যুবলীগ নেতা। বাকিরাও স্থানীয় পর্যায়ে আওয়ামী লীগের কট্টর সমর্থক হিসেবে পরিচিত।
ঘটনার পর মঙ্গলবার বিএনপি নেতাদের মধ্যে বিব্রত পরিস্থিতি তৈরি হয়। সাধারণ সম্পাদক আব্দুল্লাহ মিছবাহ প্রথমে স্বীকার করলেও পরে দাবি করেন, তারা কোনো চিঠিই দেননি। এরপর তিনি থানাকে আরেকটি চিঠি পাঠান, যেখানে বলা হয় পূর্বের চিঠির স্বাক্ষর ও সিল জাল করে ব্যবহার করা হয়েছে।
অন্যদিকে, সভাপতি এসটিএম ফখর উদ্দীন প্রথমে বলেন, চিঠির বিষয়ে কিছুই জানেন না। পরে সাংবাদিকের জিজ্ঞাসায় জানান, “এটা সাধারণ সম্পাদকের ব্যাপার, তিনিই করেছেন।”
এ বিষয়ে দক্ষিণ সুরমা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিজানুর রহমান বলেন, “আসামিদের বাদ দিতে কোনো দলের পক্ষ থেকে এমন আবেদন করা আইনসম্মত নয়। তদ্বিরের পর আবার তা ভুয়া স্বাক্ষরের দাবি—উভয়পক্ষকেই তদন্তে রাখা হচ্ছে। তদন্তে প্রমাণ না থাকলে কাউকেই বাদ দেওয়া হবে না।”