ঢাকা ০৮:২০ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫, ৮ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুরের বিরুদ্ধে ভিক্ষুকের ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫
  • ৫৬৫ বার পড়া হয়েছে

 

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা ও বর্তমান বাগেরহাট জেলার সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আলমগীর কবিরের নামে ভিক্ষুক পুনর্বাসন খাতের বরাদ্দ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।

 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) কালিগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় এ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন।

 

 

কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের চরদাহ গ্রামের আবুল কাশেমের প্রতিবন্ধী ছেলে আলমগীর তার বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমানের বিচারের দাবিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিভাগীয় পরিচালক ও জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানান। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প পরিচালক শাহাজাহান আলী তদন্ত করেন।

 

তদন্ত শেষে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক শাহজাহান আলী জানান, আমি প্রাথমিক ভাবে ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করেছি। বিষয়টি তদন্ত কাজ শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এদিকে অভিযোগকারীর অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন সংলগ্ন গোল ঘরে ভিক্ষুক আলমগীর কবির তার স্ত্রী ফাতেমা ও মাকে বসিয়ে রাখে । যাতে করে তদন্তের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তার সামনে হাজির না হয় সে জন্য গোপনে টাকা, খাবার দিয়ে লুকিয়ে রাখেন। পরে তদন্তের সময় সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে ক্রাচে ভর করে পঙ্গু প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আলমগীর কবির তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম এবং মাকে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সামনে হাজির হয়।

 

ঐ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমান মোটা অংকের টাকা নিয়ে তার দুর্নীতি,অপকর্ম ঢাকতে উপস্থিত সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়।

 

 

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ শহিদুর রহমান জানান, আলমগীর কবিরের টাকা তার মায়ের নিকট দিয়েছি । তবে টাকা দেওয়া নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।

 

 

অভিযোগকারী ভুক্তভোগী আলমগীর কবির সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন না যশোরে ছিলেন।

 

অভিযোগ করার পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচা মোল্লাকে দিয়ে আমার বাড়িতে মায়ের নিকট টাকা পাঠিয়ে ওই টাকার ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রমাণের চেষ্টা করে।

 

প্রতিবন্ধী আলমগীর কবির তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন কালিগঞ্জ উপজেলার ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর সমাজসেবা অফিস হতে ট্রাই সাইকেল কেনার জন্য আমার নামে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান আমার কাছ থেকে দরখাস্ত নিয়ে তার অফিসের হুমায়ুন কবিরকে দিয়ে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র সাতক্ষীরা থেকে আমার নামে একটা ট্রাই সাইকেল গ্রহণ করেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আমাকে ঐ বছরের ২৮ নভেম্বর একটি ট্রাই সাইকেল দেওয়া হলেও ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প হতে বরাদ্দ ৩০ হাজার টাকা আমাকে না দিয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান নিজে তুলে আত্মসাৎ করেন।

 

বহুল আলোচিত দুর্নীতিবাজ শেখ শহিদুর রহমান সাতক্ষীরায় দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সাতক্ষীরায় আলিশান বাড়ি তৈরি সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছে। তার দুর্নীতির কারণে কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগরে বদলি করলে সেখানে ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলাবাসি প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানালে তাকে বাগেরহাট বদলি করা হয়।

 

সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমান যেখানে চাকরি করেন সেখানেই তাকে দুর্নীতির দেয় বরখাস্ত বদলি করা হয়েছে। বর্তমান এই মহা দুর্নীতিবাজ সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমান নিজেকে বাঁচাতে ঢাল হিসাবে নিজের এলাকার বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নাম ভাঙিয়ে পার পাওয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে বলে একাধিক ভুক্তভোগীরা।

 

 

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

চলতি অর্থবছরের রাজস্ব ঘাটতি ২৪ হাজার কোটি টাকা

সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুরের বিরুদ্ধে ভিক্ষুকের ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ!

আপডেট সময় ১১:৫৭:৪৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৫

 

সাতক্ষীরার কালীগঞ্জ উপজেলার সাবেক সমাজসেবা কর্মকর্তা ও বর্তমান বাগেরহাট জেলার সমাজসেবা অফিসের প্রবেশন কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমানের বিরুদ্ধে প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আলমগীর কবিরের নামে ভিক্ষুক পুনর্বাসন খাতের বরাদ্দ ৩০ হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগের তদন্ত শুরু হয়েছে।

 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) কালিগঞ্জ উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তার কার্যালয় এ প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন।

 

 

কালিগঞ্জ উপজেলার মথুরেশপুর ইউনিয়নের চরদাহ গ্রামের আবুল কাশেমের প্রতিবন্ধী ছেলে আলমগীর তার বরাদ্দকৃত টাকা ফেরত এবং সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমানের বিচারের দাবিতে সমাজসেবা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বিভাগীয় পরিচালক ও জেলা প্রশাসক সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ জানান। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প পরিচালক শাহাজাহান আলী তদন্ত করেন।

 

তদন্ত শেষে ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের পরিচালক শাহজাহান আলী জানান, আমি প্রাথমিক ভাবে ঘটনাস্থলে এসে বিষয়টি অভিযোগের প্রেক্ষিতে তদন্ত করেছি। বিষয়টি তদন্ত কাজ শেষ হলে বিস্তারিত জানানো হবে। তবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

 

এদিকে অভিযোগকারীর অভিযোগ প্রত্যাহারের জন্য চাপ সৃষ্টি করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বাসভবন সংলগ্ন গোল ঘরে ভিক্ষুক আলমগীর কবির তার স্ত্রী ফাতেমা ও মাকে বসিয়ে রাখে । যাতে করে তদন্তের সময় তদন্তকারী কর্মকর্তার সামনে হাজির না হয় সে জন্য গোপনে টাকা, খাবার দিয়ে লুকিয়ে রাখেন। পরে তদন্তের সময় সাংবাদিকদের হস্তক্ষেপে ক্রাচে ভর করে পঙ্গু প্রতিবন্ধী ভিক্ষুক আলমগীর কবির তার স্ত্রী ফাতেমা বেগম এবং মাকে নিয়ে তদন্ত কর্মকর্তার সামনে হাজির হয়।

 

ঐ সময় অবস্থা বেগতিক দেখে সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমান মোটা অংকের টাকা নিয়ে তার দুর্নীতি,অপকর্ম ঢাকতে উপস্থিত সাংবাদিকদের ম্যানেজ করতে ব্যর্থ হয়।

 

 

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শেখ শহিদুর রহমান জানান, আলমগীর কবিরের টাকা তার মায়ের নিকট দিয়েছি । তবে টাকা দেওয়া নিয়ে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।

 

 

অভিযোগকারী ভুক্তভোগী আলমগীর কবির সাংবাদিকদের জানান, তিনি ঘটনার সময় বাড়িতেই ছিলেন না যশোরে ছিলেন।

 

অভিযোগ করার পরে স্থানীয় ইউপি সদস্য বাচা মোল্লাকে দিয়ে আমার বাড়িতে মায়ের নিকট টাকা পাঠিয়ে ওই টাকার ভিডিও তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে প্রমাণের চেষ্টা করে।

 

প্রতিবন্ধী আলমগীর কবির তার অভিযোগে উল্লেখ করেছেন কালিগঞ্জ উপজেলার ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্পের মাধ্যমে ২০২৪ সালের ২০ অক্টোবর সমাজসেবা অফিস হতে ট্রাই সাইকেল কেনার জন্য আমার নামে ৩০ হাজার টাকা বরাদ্দ হয়। ২০২৪ সালের নভেম্বর মাসে সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান আমার কাছ থেকে দরখাস্ত নিয়ে তার অফিসের হুমায়ুন কবিরকে দিয়ে প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্র সাতক্ষীরা থেকে আমার নামে একটা ট্রাই সাইকেল গ্রহণ করেন। এছাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে আমাকে ঐ বছরের ২৮ নভেম্বর একটি ট্রাই সাইকেল দেওয়া হলেও ভিক্ষুক পুনর্বাসন প্রকল্প হতে বরাদ্দ ৩০ হাজার টাকা আমাকে না দিয়ে সমাজসেবা কর্মকর্তা শহিদুর রহমান নিজে তুলে আত্মসাৎ করেন।

 

বহুল আলোচিত দুর্নীতিবাজ শেখ শহিদুর রহমান সাতক্ষীরায় দীর্ঘদিন চাকরি করার সুবাদে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বরাদ্দের কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে সাতক্ষীরায় আলিশান বাড়ি তৈরি সহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকার সংবাদ শিরোনামে পরিণত হয়েছে। তার দুর্নীতির কারণে কালিগঞ্জ থেকে শ্যামনগরে বদলি করলে সেখানে ওই দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে উপজেলাবাসি প্রতিবাদ বিক্ষোভ জানালে তাকে বাগেরহাট বদলি করা হয়।

 

সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমান যেখানে চাকরি করেন সেখানেই তাকে দুর্নীতির দেয় বরখাস্ত বদলি করা হয়েছে। বর্তমান এই মহা দুর্নীতিবাজ সমাজসেবা কর্মকর্তা শেখ শহিদুর রহমান নিজেকে বাঁচাতে ঢাল হিসাবে নিজের এলাকার বর্তমান মন্ত্রী পরিষদ সচিবের নাম ভাঙিয়ে পার পাওয়ার পাঁয়তারায় লিপ্ত রয়েছে বলে একাধিক ভুক্তভোগীরা।