সুদানের সেনাপ্রধান জেনারেল আব্দেল ফাত্তাহ আল-বুরহান আন্তর্জাতিক মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর দেওয়া যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছেন। স্থানীয় সময় রোববার (২৩ নভেম্বর) রাতে সেনা সদর দপ্তরে ঊর্ধ্বতন সামরিক ও নিরাপত্তা কর্মকর্তাদের উদ্দেশে দেওয়া এক ভাষণে আল-বুরহান বলেন, যুক্তরাষ্ট্র, সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই), সৌদি আরব ও মিসর মিলিতভাবে প্রস্তাবিত ‘কোয়াড’ পরিকল্পনাটি এ পর্যন্ত দেওয়া সবচেয়ে খারাপ প্রস্তাব।
তিনি অভিযোগ করেন, প্রস্তাবটি সুদানের সেনাবাহিনীকে দুর্বল করে, দেশটির নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিলুপ্ত করার পথ খুলে দেয় এবং বিদ্রোহী র্যাপিড সাপোর্ট ফোর্সেস (আরএসএফ)-কে দখলকৃত এলাকায় রাখতে সুবিধা দেয়। আল-বুরহান স্পষ্ট করে বলেন, কোনো যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে আরএসএফকে নির্দিষ্ট এলাকায় সরে যেতে হবে।
সেনাপ্রধান আরও অভিযোগ করেন, ইউএই আরএসএফকে অস্ত্র ও অর্থ সরবরাহ করে সংঘাত দীর্ঘায়িত করছে। বিশেষভাবে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পের আঞ্চলিক বিষয়ক উপদেষ্টা মাসাদ বুলোসকে আক্রমণ করেন। তবে ট্রাম্প এবং সৌদি ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানকে তিনি প্রশংসা করেছেন, যাঁরা সাম্প্রতিক বৈঠকে সুদানের যুদ্ধ অবসান বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে আলোচনা করেছেন।
আরএসএফ জানিয়েছে, তারা কোয়াড প্রস্তাবের সঙ্গে সম্মতি দিয়েছে, কারণ এটি যুদ্ধের ‘ভয়াবহ মানবিক পরিস্থিতি’ লাঘব করবে এবং তিন মাসের যুদ্ধবিরতি ও বেসামরিক সরকারের পথ সুগম করবে। কিন্তু বাস্তবে তারা সুদানের পশ্চিমাঞ্চল দারফুরে ব্যাপক সহিংসতা চালাচ্ছে; স্যাটেলাইট চিত্রে দেখা গেছে, তারা এল-ফাশে শহরে আগুন লাগাচ্ছে, লাশ গণকবরে চাপাচ্ছে এবং গণহত্যার প্রমাণ মুছে ফেলছে। এছাড়া ধর্ষণ, নিখোঁজ হওয়া ও বেসামরিক হত্যার ঘটনা আন্তর্জাতিক সংস্থা নিশ্চিত করেছে।
সেন্ট্রাল কোরদোফান অঞ্চলেও সেনাবাহিনী ও আরএসএফের সংঘর্ষ অব্যাহত। ২০২৩ সালের এপ্রিল থেকে খার্তুমসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে দুই বাহিনীর সংঘাতের কারণে নিহতের সংখ্যা জাতিসংঘের হিসাবে ৪০ হাজার ছাড়িয়েছে, তবে সহায়তাকারী সংস্থাগুলো প্রকৃত সংখ্যাটি অনেক বেশি মনে করছে।


























