পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান কারাগারে গুরুতর মানসিক নির্যাতনের শিকার হচ্ছেন বলে অভিযোগ করেছেন। বুধবার (৩ ডিসেম্বর) তার অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে এ বিষয়ে একটি দীর্ঘ বিবৃতি প্রকাশ করা হয়। এতে তিনি অভিযোগ করেন, কারাগারে তাকে সম্পূর্ণভাবে একঘরে করে রাখা হয়েছে এবং নিয়ম অনুযায়ী যে সুবিধা পাওয়ার কথা—সেগুলোর বেশির ভাগই ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে।
এর আগের দিন রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে ইমরানের সঙ্গে দেখা করেন তার বোন ড. উজমা খান। সাক্ষাৎ শেষে তিনিই ইমরানের বিভিন্ন অভিযোগ গণমাধ্যমে জানান, যা পরদিন তার এক্স অ্যাকাউন্টে তুলে ধরা হয়।
ইমরান খান বলেন, “আমাকে নির্জন সেলে আটকে রাখা হয়েছে। গত চার সপ্তাহে একজন মানুষের সঙ্গেও কথা বলতে পারিনি। বাইরের জগত থেকে আমাকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন রাখা হয়েছে।”
তিনি আরও দাবি করেন, সেনাপ্রধান ফিল্ড মার্শাল অসীম মুনিরের নির্দেশেই তার এবং তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দিয়ে তাদের কারাগারে আটকে রাখা হয়েছে।
২০২২ সালে আস্থা ভোটে প্রধানমন্ত্রিত্ব হারানোর পর ইমরানের বিরুদ্ধে একের পর এক মামলা হয়। ২০২৩ সালে একবার গ্রেফতার হয়ে জামিনে মুক্তি পেলেও একই বছরের আগস্টে আবার গ্রেফতার হন তিনি এবং সেখান থেকেই তিনি এখনো কারাগারে বন্দি।
নিজের বিরুদ্ধে ‘মিথ্যা মামলার ফাঁদ’ পাতা হয়েছে দাবি করে সেনাপ্রধান অসীম মুনিরকে তিনি ‘মানসিকভাবে অস্থিতিশীল’ ও ‘ধ্বংসাত্মক নীতির প্রচারক’ হিসেবে আখ্যা দেন। তার ভাষায়, “মুনিরের নীতি পাকিস্তানকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে। সন্ত্রাসবাদ নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে, যা আমাকে গভীরভাবে উদ্বিগ্ন করে।”
তিনি আরও অভিযোগ করেন, পশ্চিমা শক্তিকে খুশি করতে মুনির ইচ্ছাকৃতভাবে আফগানিস্তানের সঙ্গে উত্তেজনা সৃষ্টি করছেন। “শরণার্থীদের বের করে দেওয়া, ড্রোন হামলা এবং আফগানদের প্রতি হুমকি—এসবের ফলেই এখন দেশে সন্ত্রাসবাদ মাথাচাড়া দিচ্ছে,” বলেন ইমরান খান।
তার মতে, “নৈতিকতা ও আইনের পতনের মধ্য দিয়ে পাকিস্তানের সংবিধান আজ প্রায় ভেঙে পড়ার মতো অবস্থায় পৌঁছেছে।”

























