ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থী রায়হান উদ্দীনের একটি পুরোনো ফেসবুক পোস্ট আবারও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ২০২০ সালের ৩ মার্চ করা সেই পোস্টে তিনি লিখেছিলেন— ‘জামাত-শিবিরের আস্তানা, জ্বালিয়ে দাও, পুড়িয়ে দাও। শিবিরের চামড়া, তুলে নেব আমরা।’ অথচ এই রায়হানই বর্তমানে শিবির সমর্থিত ঐক্যবদ্ধ শিক্ষার্থী জোট থেকে নির্বাচিত হয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) কার্যনির্বাহী সদস্য হয়েছেন।
তথ্য অনুযায়ী, রায়হান উদ্দীন সরাসরি ইসলামী ছাত্রশিবিরের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বলেই জানান শিবিরের তৎকালীন ঢাবি শাখার দপ্তর সম্পাদক ইমরান হোসাইন। চলতি বছরের ৯ সেপ্টেম্বর ডাকসু নির্বাচনে রায়হান বিজয়ী হলে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। ফলে শিবিরে যুক্ত থাকা সত্ত্বেও ‘শিবিরের চামড়া তুলে নেওয়ার’ পোস্টটি নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জানান, গণ-অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে ছাত্রলীগের অনেক নেতাকর্মী শিবিরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ ছিলেন— এটি এখন ‘ওপেন সিক্রেট’। রায়হানও সেই রকমই একজন বলে দাবি করেন তারা। তার সেই পোস্টে বর্তমান ডাকসুর ভিপি ও শিবির নেতা আবু সাদিক কায়েম এবং একই প্যানেলের মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলনবিষয়ক সম্পাদক ফাতিমা তাসনিম জুমার ‘লাভ’ রিঅ্যাক্ট— বিষয়টিকে আরও স্পষ্ট করে তোলে।
এদিকে রায়হানের ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্টতার আরও কয়েকটি পোস্টও ভাইরাল হয়েছে। ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার কারাবরণ দিবস, সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন কিংবা রাদওয়ান মুজিব ববির জন্মদিন— এসব উপলক্ষে বিভিন্ন শুভেচ্ছা পোস্ট করেছিলেন তিনি। এসব তুলে ধরে ঢাবি ছাত্রদলের নেতা শেখ তানভীর বারি হামীম সমালোচনা করে লিখেছেন, ‘আমরা যখন ২০২০-এ হাসিনা বিরোধী রাজপথে, তখন ডাকসুর কথিত নেতা রায়হান সংসদে! সেদিনের ফ্যাসিবাদ, আজ নাকি মজলুম!’
বিতর্কের বিষয়ে রায়হান বলেন, তিনি ‘কালচারাল ফ্যাসিস্ট, শাহবাগী ও চাঁদাবাজদের’ বিরুদ্ধে কথা বলায় একটি গোষ্ঠী তার বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে। ২০২২ সালে দুই রাজনীতিতে যুক্ত না থাকার কারণে তাকে নির্যাতন করে হল থেকে বের করে দেওয়া হয় বলেও দাবি করেন তিনি। রায়হানের ভাষায়, এসব নিয়ে তার মাথাব্যথা নেই, কারণ বিষয়গুলো তিনি আগেই স্পষ্ট করেছেন।


























