বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের সিনিয়র নায়েবে আমীর মুফতি সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করিম বলেছেন, ৫ বছরের ক্ষমতায় টানা ৩ বার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়া কোনো রাজনৈতিক দলের কাছে দেশ ও জনগণ কখনোই নিরাপদ হতে পারে না। তিনি বলেন- ১৯৯১ সাল থেকে ৯৬ সাল পর্যন্ত মাত্র ৫ বছরের ক্ষমতাকালে বিএনপি সীমাহীন দুর্নীতি করেছে এবং গরীব দুঃখীদের ন্যায্য হক নিজেদের পকেটে ঢুকিয়েছে। এসব কর্মকাণ্ডে রাজনৈতিক অব্যবস্থাপনা আমাদের আগামির ইঙ্গিত দেয়।
আজ শনিবার পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় নির্বাচন, জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন এবং নির্বাচনের পূর্বে গণভোটের আয়োজনসহ ৬ দফা দাবিতে মহেশখালীর হোয়ানক ইউনিয়নে উপজেলা ইসলামী আন্দোলনের আয়োজিত গণ সমাবেশে বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি দাবি তুলে বলেন- নির্বাচনী ব্যবস্থায় ন্যায়সংগত অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হলে বিদ্যমান কাঠামোয় সংস্কার জরুরি। তার মতে এসব দাবি পূরণ না হলে জনগণ প্রকৃত গণতান্ত্রিক অধিকার থেকে বঞ্চিত থেকে যাবে এবং নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যাবে।
চরমোনাই পীর আরও বলেন, ইসলামী দল যদি বাংলাদেশে ৫ বছরের জন্য ক্ষমতা পায় তাহলে দেশে আর কোনো গরীব থাকবে না এবং সামগ্রিকভাবে দেশ দরিদ্রসীমার উপরে উঠে যাবে। তিনি বলেন, তাদের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ও অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে জনগণের জীবনমান দ্রুত উন্নত হবে। সাধারণ মানুষের উচিত একবার হলেও হাতপাখায় ভোট দিয়ে ইসলামী দলের হাতে ক্ষমতা দিয়ে দেখা, কেননা এতে দেশের সামগ্রিক উন্নতি ত্বরান্বিত হতে পারে।
জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান, জোটবদ্ধ দলগুলোর প্রাপ্ত ভোটসংখ্যার ভিত্তিতে সংসদের উচ্চকক্ষে আসন বণ্টন, নির্বাচন পূর্ববর্তী গণভোট আলাদাভাবে আয়োজনসহ পাঁচ দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে এই আট দল। তাদের দাবি- রাজনৈতিক কাঠামোকে আরও স্বচ্ছ ও অংশগ্রহণমূলক করা। এসব দাবির মাধ্যমে তারা নির্বাচন ব্যবস্থাকে আধুনিক ও জবাবদিহিমূলক রূপে প্রতিষ্ঠা করতে চায়, যাতে জনগণের প্রকৃত মতামত সংসদে প্রতিফলিত হয়।
গণসমাবেশে তিনি পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন, জুলাই জাতীয় সনদের বাস্তবায়ন এবং নির্বাচনের পূর্বে গণভোট আয়োজনসহ ছয় দফা দাবি পুনর্ব্যক্ত করেন। ইসলামী আন্দোলনের দাবি- জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি নিশ্চিত না হলে নির্বাচন কখনোই গ্রহণযোগ্য হবে না এবং আন্তর্জাতিক মহলেও প্রশ্ন উঠবে। তাদের মতে এই সনদ রাজনৈতিক সংস্কারের অন্যতম ভিত্তি, যা কার্যকর হলে নির্বাচনী ব্যবস্থার স্বচ্ছতা ও ভারসাম্য আরও সুদৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।
আট দলীয় এই প্ল্যাটফর্ম দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক সংস্কার, সংসদের উচ্চকক্ষে ভোটের অনুপাতে আসন বণ্টন এবং নির্বাচন পূর্বে গণভোটের মতো কাঠামোগত পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে আসছে। তাদের মতে এসব দাবি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করবে এবং নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াবে। তারা বলছে – রাজনৈতিক প্রতিযোগিতা ন্যায়সংগত ও ভারসাম্যপূর্ণ করতে হলে এসব সংস্কার অপরিহার্য এবং দেশের সামগ্রিক শাসন কাঠামো উন্নত হবে।
ইসলামী আন্দোলনের গণসমাবেশ উপলক্ষে সকাল থেকে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে দলে দলে নেতা কর্মীরা সমাবেশ স্থলে আসতে শুরু করেন। মিছিলের মাধ্যমে তারা সমাবেশে অংশ নেন এবং বিভিন্ন দাবি উত্থাপন করেন। বেলা সোয়া দুইটার দিকে হাজারো নেতা কর্মীর উপস্থিতিতে সমাবেশ আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু করা হয়। সমাবেশে অংশ নেওয়া নেতারা মনে করেন- রাজনৈতিক দাবি আদায়ে শান্তিপূর্ণ সমাবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এবং সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ আন্দোলনকে আরও শক্তিশালী করে।
সমাবেশে মহেশখালী কুতুবদিয়া থেকে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলনের হয়ে নির্বাচন করা প্রার্থী অধ্যক্ষ মাওলানা জিয়াউল হক বলেন- উন্নয়নের নামে মহেশখালীর মানুষের জমিজমা কেড়ে নেওয়া হয়েছে এবং প্রকল্পে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও শেষ পর্যন্ত তা বাস্তবায়ন করা হয়নি। তিনি আরও অভিযোগ করেন- নানা অজুহাতে মানুষকে পাহাড় মৌজার জমি বন্দোবস্ত দেওয়া হচ্ছে না। তিনি প্রতিশ্রুতি দেন যে নির্বাচিত হতে পারলে এসব উন্নয়ন সংক্রান্ত সমস্যায় প্রথমেই কাজ করবেন।




















