ঢাকা ১২:২৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৫, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অ্যাসেম্বলিতে ইমরান খান-পিটিআইকে নিষিদ্ধের দাবিতে প্রস্তাব পাস

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৯:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫
  • ৫২৮ বার পড়া হয়েছে

 

পাকিস্তানের শাসক দল পিএমএল-এন ও বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার একটি প্রস্তাব পাস করেছে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলি। প্রস্তাবে তার দল পিটিআইকে রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।

 

সম্প্রতি দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমদ শরীফ চৌধুরী নাম উচ্চারণ না করে ইমরান খানের বিরুদ্ধে সেনাবিরোধী বয়ান তৈরির অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রচারণা রাজনীতির সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলছে।

সরকারি দলের এমপিএ তাহির পারভেজের উত্থাপিত প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। তবে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পিটিআইয়ের সদস্যরা অধিবেশন বর্জন করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রস্তাবে সরাসরি পিটিআই বা ইমরান খানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

 

প্রস্তাবে বলা হয়, পাকিস্তানকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় সফল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, শত্রুর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করায় পিটিআই ও তার প্রতিষ্ঠাতা নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিবেচনা করা উচিত।

 

অ্যাসেম্বলি প্রস্তাবের পাশাপাশি পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আজমা বোখারি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নন; তবে পিটিআইর সাম্প্রতিক আচরণ সরকারকে সে পথে ভাবতে বাধ্য করছে। ইমরান খানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আদিয়ালা জেলের বন্দি এখন কার্যত আলতাফ হুসেনের দ্বিতীয় সংস্করণ হয়ে উঠেছেন।

 

এদিকে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবারও ইমরান খানের বোনদের সাক্ষাতের অনুমতি না দেওয়ায় আদিয়ালা জেলগেটে অবস্থান কর্মসূচি চলে। ইমরানের বোন আলেমা ও উজমা খানসহ পিটিআইর শীর্ষ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গত সপ্তাহে একবার সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও এদিনও তারা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে আলেমা খান অভিযোগ করেন, রাষ্ট্র আইন ভঙ্গ করছে—যেখানে পিটিআই কোনো বেআইনি কাজ করেনি। তিনি বলেন, যদি অবৈধভাবে কাজ করেও তারা ‘ঠিক’ আর আমরা ‘ভুল’ হই, তবে সেটাই দেশের সিস্টেমের বাস্তবতা।

 

পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইমরান খানের পরিবার ও আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে পারছে না প্রশাসন। এ ছাড়া পিটিআই নেতারা দাবি করেন, জেল কর্তৃপক্ষের এই আচরণ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করছে।

অন্যদিকে পুলিশ অবস্থানস্থলে বাড়তি মোতায়েন করে বিক্ষোভকারীদের বারবার এলাকা ত্যাগের অনুরোধ জানায়। দাঙ্গা পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করতে না পেরে আলেমা খান বলেন, আমরা এখান থেকে যাব না; লাঠি মারুক বা গুলি করুক—যা খুশি করুক।

পিটিআই নেতারা জানান, সেনেটর ফয়সল ভওদার অবস্থান কর্মসূচি আহ্বানের পর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। তারা বলেন, পরিবারের একজন সদস্যকে সাক্ষাতের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

পিটিআই নেতাদের অভিযোগ, সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দূরত্ব বাড়াচ্ছে এবং রাজনৈতিক সংঘাত আরও জটিল হচ্ছে। সূত্র: ডন

জনপ্রিয় সংবাদ

পুতিনের জন্য ৪০ মিনিট অপেক্ষা করে, শেষমেশ বৈঠক কক্ষ ত্যাগ করলেন শেহবাজ শরীফ

অ্যাসেম্বলিতে ইমরান খান-পিটিআইকে নিষিদ্ধের দাবিতে প্রস্তাব পাস

আপডেট সময় ০৯:৩৬:৫২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫

 

পাকিস্তানের শাসক দল পিএমএল-এন ও বিরোধী দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)-এর চলমান রাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান ও তার দলের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবি জানিয়ে মঙ্গলবার একটি প্রস্তাব পাস করেছে পাঞ্জাব অ্যাসেম্বলি। প্রস্তাবে তার দল পিটিআইকে রাষ্ট্রবিরোধী আখ্যা দিয়ে নিষিদ্ধ করার আহ্বান জানানো হয়।

 

সম্প্রতি দেশটির আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ অধিদপ্তর (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমদ শরীফ চৌধুরী নাম উচ্চারণ না করে ইমরান খানের বিরুদ্ধে সেনাবিরোধী বয়ান তৈরির অভিযোগ তুলেছিলেন। তিনি বলেন, এ ধরনের প্রচারণা রাজনীতির সীমা ছাড়িয়ে গিয়ে জাতীয় নিরাপত্তা হুমকিতে পরিণত হয়েছে। এরপর থেকেই দুই পক্ষের মধ্যে তীব্র বাকযুদ্ধ চলছে।

সরকারি দলের এমপিএ তাহির পারভেজের উত্থাপিত প্রস্তাবটি কণ্ঠভোটে পাস হয়। তবে ইমরান খানের সঙ্গে সাক্ষাৎ নিষিদ্ধ করার সরকারি সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে পিটিআইয়ের সদস্যরা অধিবেশন বর্জন করেন। উল্লেখযোগ্যভাবে, প্রস্তাবে সরাসরি পিটিআই বা ইমরান খানের নাম উল্লেখ করা হয়নি।

 

প্রস্তাবে বলা হয়, পাকিস্তানকে সুরক্ষিত রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা প্রতিষ্ঠানগুলো, যারা ভারতের মতো শক্তিশালী প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় সফল তাদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড। এতে আরও উল্লেখ করা হয়, শত্রুর হাতিয়ার হিসেবে কাজ করায় পিটিআই ও তার প্রতিষ্ঠাতা নেতার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিবেচনা করা উচিত।

 

অ্যাসেম্বলি প্রস্তাবের পাশাপাশি পাঞ্জাবের তথ্যমন্ত্রী আজমা বোখারি সাংবাদিকদের বলেন, তিনি রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করার পক্ষে নন; তবে পিটিআইর সাম্প্রতিক আচরণ সরকারকে সে পথে ভাবতে বাধ্য করছে। ইমরান খানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, আদিয়ালা জেলের বন্দি এখন কার্যত আলতাফ হুসেনের দ্বিতীয় সংস্করণ হয়ে উঠেছেন।

 

এদিকে আদালতের নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও মঙ্গলবারও ইমরান খানের বোনদের সাক্ষাতের অনুমতি না দেওয়ায় আদিয়ালা জেলগেটে অবস্থান কর্মসূচি চলে। ইমরানের বোন আলেমা ও উজমা খানসহ পিটিআইর শীর্ষ নেতারা সেখানে উপস্থিত ছিলেন। গত সপ্তাহে একবার সাক্ষাতের সুযোগ পেলেও এদিনও তারা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।

অবস্থান কর্মসূচিতে আলেমা খান অভিযোগ করেন, রাষ্ট্র আইন ভঙ্গ করছে—যেখানে পিটিআই কোনো বেআইনি কাজ করেনি। তিনি বলেন, যদি অবৈধভাবে কাজ করেও তারা ‘ঠিক’ আর আমরা ‘ভুল’ হই, তবে সেটাই দেশের সিস্টেমের বাস্তবতা।

 

পিটিআই চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার গোহর আলী খান বলেন, আদালতের নির্দেশ অমান্য করে ইমরান খানের পরিবার ও আইনজীবীদের সাক্ষাতের সুযোগ না দেওয়ার কারণ ব্যাখ্যা করতে পারছে না প্রশাসন। এ ছাড়া পিটিআই নেতারা দাবি করেন, জেল কর্তৃপক্ষের এই আচরণ দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে আরও অস্থিতিশীল করছে।

অন্যদিকে পুলিশ অবস্থানস্থলে বাড়তি মোতায়েন করে বিক্ষোভকারীদের বারবার এলাকা ত্যাগের অনুরোধ জানায়। দাঙ্গা পুলিশের ব্যারিকেড অতিক্রম করতে না পেরে আলেমা খান বলেন, আমরা এখান থেকে যাব না; লাঠি মারুক বা গুলি করুক—যা খুশি করুক।

পিটিআই নেতারা জানান, সেনেটর ফয়সল ভওদার অবস্থান কর্মসূচি আহ্বানের পর থেকেই কর্মী-সমর্থকদের ব্যাপক উপস্থিতি দেখা গেছে। তারা বলেন, পরিবারের একজন সদস্যকে সাক্ষাতের অনুমতি না দেওয়া পর্যন্ত তারা অবস্থান চালিয়ে যাবেন।

পিটিআই নেতাদের অভিযোগ, সরকারের সিদ্ধান্ত জনগণ ও রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের মধ্যে দূরত্ব বাড়াচ্ছে এবং রাজনৈতিক সংঘাত আরও জটিল হচ্ছে। সূত্র: ডন