এবার ফরিদপুর শহরের ঝিলটুলী ওয়াসিত্ব টাওয়ারের ৩ নম্বর ভবনের ৮ম ও ৯ম তলার দুটি ফ্ল্যাটে দুর্ধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটেছে। ওই দু’টি ফ্ল্যাটের জানালা ও ব্যালকনির গ্রিল কেটে ঘরে ঢুকে এক গৃহবধূর ওপেন হার্ট সার্জারির জন্য রাখা ৩ লাখ টাকা ও প্রায় ১৫ লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যমানের ৯ ভরি স্বর্ণালংকার ছাড়াও একজন অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তার বাসা থেকে নগদ ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা নিয়ে গেছে চোর। সবমিলিয়ে প্রায় ২০ লাখ টাকার মালামাল খোয়া গেছে বলে দাবি করেছেন ভুক্তভোগীরা।
জানা গেছে, ঢাকায় কর্মরত খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা মো. তারিকুজ্জামান ও পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মতিউর রহমানের দু’টি ফ্ল্যাটে এ চুরির ঘটনা ঘটে। অভিযোগ পেয়ে সোমবার (২ জুন) রাতে ফরিদপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আজমীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
এদিকে তারিকুজ্জামানের স্ত্রী জেমি আক্তার লিখিত অভিযোগে জানান, ডাক্তার দেখাতে তিনি দুই মেয়েকে নিয়ে গত শনিবার ঢাকায় গিয়েছিলেন। সোমবার সন্ধ্যার আগে ফরিদপুরের বাসায় ফিরে ঘরের মধ্যে কাপড়চোপড় ও মালপত্র এলোমেলো পড়ে থাকতে দেখেন। তার আলমারিতে রাখা ২ ভরি এবং ওয়ারড্রবে ৭ ভরি স্বর্ণালংকারসহ নগদ ৩ লাখ টাকা চুরি গেছে। এছাড়া ঈদের জন্য কেনা তিনটি শাড়িও নিয়ে গেছে। তবে বাসায় ল্যাপটপ ও বাটন ফোন থাকলেও সেগুলো নেয়নি চোর।
জেমি বলেন, ঈদের দু’দিন পরে ঢাকার একটি হাসপাতালে তার ওপেন হার্ট সার্জারির অপারেশন হওয়ার কথা। সে সময় ব্যাংক বন্ধ থাকবে ভেবে আগেই টাকা তুলে বাসায় রেখেছিলেন।
ভুক্তভোগী মতিউর রহমান জানান, তিনি ফজরের নামাজ পড়তে দরজায় তালা দিয়ে মসজিদে গিয়েছিলেন। ঘরে তার স্ত্রী একাই ছিলো। ঘরে ঢুকে ড্রয়িং রুম পেরিয়ে চোর তার কক্ষের ড্রেসিং টেবিলের ড্রয়ারের তালা ভেঙে ১ লাখ ৭৬ হাজার টাকা চুরি করে। পাশের ওয়ারড্রবের তালাও ভেঙেছে। মাগুরায় গ্রামের বাড়িতে বিশেষ কাজের জন্য তিনি ওই টাকা রেখেছিলেন। সকালে বাড়ি থেকে বের হওয়ার সময় দেখেন টাকা নেই।
তিনি বলেন, এটি চুরি হলেও খুবই দুর্ধর্ষ ঘটনা। যেখান দিয়ে ৯ তলার বেলকনির পাইপ কেটে কেটে চোর ঘরে ঢুকেছে চোর, সেখানে দাঁড়ানোর জন্য কোন কার্নিশ নেই। দুই ইঞ্চি পরিমাণ একটু বাড়তি ঢালাই রয়েছে দেয়ালে। সেখান দিয়ে এভাবে স্টিলের পাইপ কেটে ঘরে ঢোকা হাই রিস্ক। পেশাদার ও প্রশিক্ষিত চোর ছাড়া এটি সম্ভব না।
এদিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল আজমীর হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের জানান, তারা বিষয়টি গুরুত্বের সাথে দেখছেন। অপরাধীকে গ্রেপ্তার ও চুরি হওয়া মালামাল উদ্ধারে সর্বাত্মক চেষ্টা চালানো হবে।