পবিত্র ঈদুল আজহার দিনেও ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় থামেনি ইসরাইলি বাহিনীর তাণ্ডব। ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর বাহিনীর হামলায় শুক্রবার (৬ জুন) সকাল থেকে অন্তত ৪২ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে হাসপাতাল সূত্র ও আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় রাফাহ শহরের পশ্চিম ও উত্তরাংশে একটি ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের কাছে চালানো গোলাবর্ষণে প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত সাতজন ফিলিস্তিনি। এসব তথ্য নিশ্চিত করেছে খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের একটি সূত্র।
এদিকে, এমন পরিস্থিতিতে মার্কিন-ইসরাইল সমর্থিত ‘গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন (জিএইচএফ)’ ঘোষণা করেছে, পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত গাজায় সব ধরনের ত্রাণ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, যেখানে ঈদের সকাল আনন্দ ও উৎসবের হওয়ার কথা ছিল, সেখানে গাজায় বয়ে গেছে রক্তের স্রোত। খান ইউনিসসহ গাজার বিভিন্ন এলাকায় ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলায় বহু মানুষ হতাহত হয়েছেন। ঈদের দিনেও কোনো রকম ত্রাণ সহায়তা পৌঁছায়নি উপত্যকাটিতে।
এই হামলায় আরও একজন সাংবাদিক নিহত হয়েছেন, যিনি বৃহস্পতিবার গাজার আহলি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান। এ নিয়ে গাজা যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর প্রাণ হারানো সাংবাদিকের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২২৬ জনে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা কার্যত ধ্বংসের মুখে। খান ইউনিসের একমাত্র সরকারি হাসপাতালটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে, যা পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক মহল থেকেও এসেছে প্রতিক্রিয়া। ফ্রান্সের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জ্যঁ-নোয়েল জানিয়েছেন, ফিলিস্তিনকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ফ্রান্স। তবে এই স্বীকৃতি কবে আসবে, সে বিষয়ে বিস্তারিত কিছু জানাননি তিনি।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সর্বশেষ তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধের পর থেকে এখন পর্যন্ত ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন অন্তত ৫৪,৬৭৭ জন ফিলিস্তিনি। আহত হয়েছেন আরও কয়েক লাখ, যাদের অনেকেই এখনও চিকিৎসা পাচ্ছেন না। বাস্তুচ্যুত মানুষের সংখ্যাও কয়েক লাখ ছাড়িয়ে গেছে।