ইসরায়েলের চলমান সামরিক আগ্রাসনের মধ্যে ‘কোনো আলোচনা নয়’ বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি। তবে সেই ঘোষণার পরও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে বসতে জেনেভায় পৌঁছেছেন তিনি। শুক্রবার (২০ জুন) ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক প্রধান কাজা কালাসের সঙ্গে তার এই বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। খবর আল জাজিরার।
গত এক সপ্তাহে ইরান-ইসরায়েল উত্তেজনা ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে পশ্চিমা বিশ্ব এবং ইরানের শীর্ষপর্যায়ের প্রতিনিধিদের মধ্যে এটি হবে প্রথম সরাসরি কূটনৈতিক আলোচনা।
আরাঘচি জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে ইসরায়েলের হামলা অব্যাহত থাকলে কোনো আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। বিশেষ করে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচি নিয়ে আলোচনা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য বলে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন।
জেনেভায় রওনা হওয়ার আগে তিনি বলেন, “আমি মনে করি, ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আমরা যে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছি, তাতে করে অনেক দেশ নিজেদের দূরে সরিয়ে রাখবে।”
তার মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে কূটনৈতিক মঞ্চেও ইরান মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে এবং দেশের স্বার্থে কোনো আপস হবে না।
ইরানি সংবাদমাধ্যম জানায়, জেনেভা বৈঠকে ইউরোপীয় নেতারা ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যে ক্রমবর্ধমান উত্তেজনা নিরসনে আহ্বান জানাবেন। তবে যুক্তরাষ্ট্রের সম্ভাব্য সামরিক হস্তক্ষেপের আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানে সরাসরি হামলা চালানো নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে আরও দুই সপ্তাহ সময় চেয়েছেন বলে জানা গেছে।
২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির আওতায় ইরান তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি সীমিত করলে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া হয়। ফ্রান্স, জার্মানি, যুক্তরাজ্য ও ইইউ এই চুক্তির স্বাক্ষরকারী। তবে ২০১৮ সালে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যুক্তরাষ্ট্রকে একতরফাভাবে ওই চুক্তি থেকে সরিয়ে নেন।
সম্প্রতি পরমাণু ইস্যুতে ওয়াশিংটন ও তেহরানের মধ্যে আবারও আলোচনার প্রক্রিয়া শুরু হলেও, তার মাঝেই ইসরায়েল সামরিক অভিযান শুরু করে।
জেনেভায় জাতিসংঘে নিযুক্ত ইসরায়েলি রাষ্ট্রদূত ড্যানিয়েল মেরন মন্তব্য করেছেন, “আমরা আশা করি, ইউরোপীয় নেতারা আব্বাস আরাঘচির সাথে বৈঠকে ইরানের পরমাণু কর্মসূচি পুরোপুরি বাতিলের দাবি জানাবেন।”