রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব এবং নিরাপত্তার প্রশ্নে সশস্ত্র বাহিনীকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া অবিবেচনাপ্রসূত—এমন মন্তব্য করেছেন বিশিষ্ট রাষ্ট্রবিজ্ঞানী, সামরিক বিশেষজ্ঞ এবং নাগরিক সমাজের প্রতিনিধি ব্যক্তিরা। তারা বলেছেন, সেনাপ্রধান জেনারেল ওয়াকার-উজ-জামান সম্প্রতি সেনা অফিসার্স অ্যাড্রেসে যে বক্তব্য দিয়েছেন তা সময়োপযোগী এবং জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে দেওয়া বক্তব্যে সেনাপ্রধান বলেন, “বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দেশের সার্বভৌমত্বের জন্য ক্ষতিকর কোনো কর্মকাণ্ডে জড়াবে না এবং কাউকে তা করতে দেবে না।” তিনি বাহিনীর সদস্যদের নিরপেক্ষ থাকতে ও নির্বাচনী দায়িত্ব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে পালনের নির্দেশ দেন।
মানবিক করিডর, নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে সেনাবাহিনীকে অন্ধকারে রাখার বিষয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, “এসব স্পর্শকাতর বিষয়ে নির্বাচিত সরকারের পক্ষ থেকেই সিদ্ধান্ত আসা উচিত, এবং তা অবশ্যই জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করে হতে হবে।”
সামরিক বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) ড. মো. নাঈম আশফাক চৌধুরী বলেন, “রাষ্ট্রের সংস্কার বা নিরাপত্তার বিষয়ে সশস্ত্র বাহিনীকে উপেক্ষা করে সিদ্ধান্ত নিলে জাতীয় শক্তি দুর্বল হয়।” তিনি সবার দায়িত্ব যথাযথভাবে পালনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
সাবেক সচিব আবু আলম শহীদ খান বলেন, “রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্তে সেনাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থার মতামত গ্রহণ জরুরি। তাদের শুধু নির্দেশ পালনকারী হিসেবে দেখা উচিত নয়।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. সাব্বীর আহমেদ বলেন, “সেনাপ্রধানের বক্তব্য বাস্তব পরিস্থিতির প্রতিফলন। নির্বাচন সময়মতো না হলে সংকট আরও বাড়বে।”
বিশিষ্টজনেরা মনে করেন, নির্বাচন আগামী ডিসেম্বরের মধ্যেই হতে হবে এবং নির্বাচিত সরকারকেই দেশের দায়িত্ব নিতে হবে। সেনাবাহিনীর ভূমিকা প্রশংসনীয় হলেও, তাদের দীর্ঘ সময় বেসামরিক কাজে নিয়োজিত রাখা বাহিনীর কাঠামোগত ক্ষতি করতে পারে বলেও মত দিয়েছেন তারা।
তাঁদের মতে, দেশি-বিদেশি কিছু গোষ্ঠী বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল রাখতে চায়, যার বিরুদ্ধে সম্মিলিতভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।