দীর্ঘ ১৭ বছর পর গত ৬ মে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে দেখা করেন তারেক রহমানের স্ত্রী ও প্রখ্যাত চিকিৎসক ডা. জোবাইদা রহমান। তার আগমন ঘিরে দলে এবং কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ব্যাপক আগ্রহ দেখা দিলেও এখনই তিনি সরাসরি রাজনীতিতে আসছেন না বলে জানিয়েছে বিএনপির একাধিক শীর্ষস্থানীয় সূত্র।
জানা গেছে, খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের দিন ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় জোবাইদা রহমানকে স্বাগত জানিয়ে ব্যানার-পোস্টার ও ফেস্টুন টানানো হয়। এমনকি সিলেট-১ আসনে তাকে প্রার্থী হিসেবে দেখতে চেয়ে পোস্টারও লাগানো হয়, যা রাজনীতিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণ নিয়ে জোর আলোচনা তৈরি করে।
তবে বিএনপি নেতারা বলছেন, এই প্রচারণা কর্মীদের নিজস্ব উদ্যোগ, দলীয় কোনো সিদ্ধান্ত নয়। দল বা ডা. জোবাইদা রহমান কেউই এখন পর্যন্ত রাজনীতিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের ঘোষণা দেননি।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন বলেন, “দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রত্যাশা রয়েছে—ডা. জোবাইদা রহমান রাজনীতিতে আসুন। কিন্তু এখনো তিনি এমন কোনো সিদ্ধান্ত নেননি। দলেও এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনা হয়নি।”
এ বিষয়ে ‘আমরা বিএনপি পরিবারে’র আহ্বায়ক আতিকুর রহমান বলেন, “তিনি এখনই রাজনীতিতে আসছেন না। তবে দেশের প্রয়োজনে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে।”
বিএনপির এক স্থায়ী কমিটির সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, “তারেক রহমান বর্তমানে দলের নেতৃত্বে শক্ত অবস্থানে আছেন। খালেদা জিয়ার শারীরিক সীমাবদ্ধতার পরিপ্রেক্ষিতে তিনি এখন দলের একমাত্র নীতিনির্ধারক। জোবাইদা রহমানের রাজনীতিতে আসার প্রশ্নে তার আগ্রহ নেই বলেই জানি।”
তিনি আরও বলেন, “দলের কিছু নেতাকর্মী নিজের অবস্থান শক্ত করতে জোবাইদার সঙ্গে দেখা করছেন। এটিই হয়তো তার রাজনীতিতে আসার গুঞ্জনের জন্ম দিয়েছে। তবে বাস্তবে এমন কোনো প্রস্তুতি নেই।”
তবে কেউ কেউ মনে করছেন, বিশিষ্ট চিকিৎসক হিসেবে জোবাইদা রহমান ভবিষ্যতে দেশের স্বাস্থ্যখাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেন। তবে তারেক রহমান প্রধানমন্ত্রী হলে, স্ত্রীকে দায়িত্ব দেওয়ার ক্ষেত্রে ‘স্বার্থের সংঘাত’ (Conflict of Interest) তৈরি হতে পারে—এ আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
তারেক রহমানের ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানিয়েছে, চলতি মে মাসের শেষ দিকে ডা. জোবাইদা রহমান ফের লন্ডনে ফিরে যেতে পারেন। ফলে আপাতত রাজনীতিতে তার সক্রিয় অংশগ্রহণের সম্ভাবনা নেই বলেই ধরে নিচ্ছে বিএনপির অভ্যন্তরীণ মহল।