বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস চলমান রাজনৈতিক সংকট ও নির্বাচন ঘিরে চাপের মুখে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন বলে জানিয়েছে নিউইয়র্ক টাইমস। তাদের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিরাজমান পরিস্থিতিতে দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না হলে, তিনি আর পদে থাকার প্রয়োজন দেখছেন না।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে অধ্যাপক ইউনূসকে আনার সময় যে গণতন্ত্রের পুনরুজ্জীবনের আশা ছিল, তা আজ অনেকের কাছে হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষ করে দ্রুত নির্বাচনের দাবিতে রাজনৈতিক দল এবং সেনাবাহিনীর চাপ অধ্যাপক ইউনূসকে ব্যতিব্যস্ত করে তুলেছে।
তিনি তার কাজকে বাধাহীনভাবে এগিয়ে নিতে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থনের অভাব বোধ করছেন বলে সূত্র জানায়। উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেছেন, “সংস্কার না হলে, আমি কেন থাকবো?”
এক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা জানান, ইউনূস পদত্যাগপত্রের খসড়া তৈরি করে রেখেছিলেন, তবে উপদেষ্টারা তাকে বোঝান—এতে দেশের পরিস্থিতি আরও অস্থিতিশীল হতে পারে। সূত্র মতে, সেনাপ্রধানের ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চাওয়ার ঘোষণায় তিনি বিরক্ত হন এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষদের সমালোচনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।
বিশ্লেষক মোবাশ্বার হাসান মন্তব্য করেন, ইউনূস একজন সফল অর্থনীতিবিদ হলেও রাজনৈতিক দৃঢ়তা ও নেতৃত্বে স্থিতিশীলতা প্রদর্শনে তার দুর্বলতা রয়েছে।
উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ও বিএনপির নির্বাচনী তৎপরতার মধ্যে অধ্যাপক ইউনূস এখন একটি জটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি। তিনি আগেই বলেছিলেন, ২০২৬ সালের জুন নাগাদ নির্বাচন আয়োজন সম্ভব হলেও, বর্তমান পরিবেশকে সুষ্ঠু নির্বাচনের উপযুক্ত মনে করছেন না।
জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলামসহ সরকারের একাধিক শীর্ষ কর্মকর্তার সঙ্গে আলোচনায় তিনি পদত্যাগ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। চলমান অচলাবস্থা, সংস্কারহীনতা এবং নানা পক্ষের অসহযোগিতা তার এই সিদ্ধান্তে প্রভাব ফেলছে বলে জানা গেছে।