রাশিয়ার দখলকৃত ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে সংগৃহীত গম আমদানি করছে বাংলাদেশের কিছু প্রতিষ্ঠান—এমন অভিযোগ তুলেছে কিয়েভ। ইউক্রেন দাবি করছে, রাশিয়া দখল করা অঞ্চল থেকে শস্য সংগ্রহ করে তা নিজেদের গমের সঙ্গে মিশিয়ে রপ্তানি করছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে বেআইনি ও চুরির শামিল। এই গম আমদানি বন্ধে বাংলাদেশকে একাধিকবার চিঠি দিয়ে সতর্ক করা হলেও, ঢাকার পক্ষ থেকে কোনো সাড়া মেলেনি বলে অভিযোগ ইউক্রেনের।
ইউক্রেনের নয়াদিল্লি দূতাবাসের পক্ষ থেকে চলতি বছর বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে একাধিকবার চিঠি পাঠানো হয়েছে। চিঠিগুলোতে কফকাজ বন্দর থেকে আসা দেড় লাখ টনেরও বেশি ‘চুরি করা’ গম আমদানি না করার অনুরোধ জানানো হয়। তবে কোনো সাড়া না পাওয়ায় ইউক্রেন এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) কাছে বিষয়টি তুলে ধরবে এবং সংশ্লিষ্ট আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার অনুরোধ জানাবে।
ভারতে নিযুক্ত ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত ওলেক্সান্ডার পোলিশচুক বলেছেন, রাশিয়ার জাহাজগুলোতে রপ্তানির আগে ইউক্রেনীয় অঞ্চল থেকে নেওয়া শস্য মিশিয়ে দেওয়া হচ্ছে। এটি সরাসরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আইন লঙ্ঘন।
এদিকে বাংলাদেশের খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা দাবি করেছেন, দখলকৃত অঞ্চল থেকে গম আমদানির কোনো অনুমতি নেই এবং দেশটি ‘চুরি করা গম’ আমদানি করছে না। তবুও কিয়েভের দাবি অনুযায়ী, আনুষ্ঠানিকভাবে এ বিষয়ে বাংলাদেশ কোনো জবাব দেয়নি।
২০১৪ সাল থেকেই ইউক্রেনের দক্ষিণাঞ্চলের বিস্তীর্ণ কৃষিভূমি রাশিয়ার দখলে। ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার পূর্ণমাত্রার আগ্রাসনের আগেই কিয়েভ গম চুরির অভিযোগ তোলে। রাশিয়া বরাবরই দাবি করে, দখলকৃত অঞ্চলগুলো এখন তাদের অংশ, এবং তারা নিজস্ব গম রপ্তানি করছে।
ইউক্রেন বলছে, এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে ইইউর কাছে তারা কেবল বাংলাদেশি প্রতিষ্ঠান নয়, সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধেও নিষেধাজ্ঞা আরোপের সুপারিশ করবে। এখন ইউরোপীয় ইউনিয়নের সিদ্ধান্তের দিকে নজর রাখছে কিয়েভ।