ঢাকা ১১:২৩ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ জুন ২০২৫, ১ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ও সংস্কার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক

নির্বাচন ও জাতীয় সংস্কার নিয়ে দুটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (২৪ মে) রাতে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। উপদেষ্টা পরিষদের সাম্প্রতিক বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিতে চাইলেও, তা না দিয়েই সেই বার্তার কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে, যা আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।”

জামায়াত আমিরের ভাষায়, “একজন রাজনৈতিক নেতা তার অধিকার আদায়ের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন, একই সময় আরেকটি দল ভিন্ন জায়গায় তাদের দাবিতে অবস্থান করছিল। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টার মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হয় এবং তিনি নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেন।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের প্রত্যাশা, এই সরকারের উচিত হবে নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়া এবং কোনো নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট না করা। কিন্তু বাস্তবে কিছু ক্ষেত্রে সেই নিরপেক্ষতা থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে, যা হতাশাজনক।”

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই যেখানে সমতল মাঠ থাকবে, কালো টাকা ও পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য থাকবে না এবং প্রার্থীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হবে না। এর মাধ্যমে জনগণ তাদের হারানো অধিকার ফিরে পাবে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে, তবে মাস বা তারিখ নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। এ কারণেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”

জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুটি স্পষ্ট রোডম্যাপের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে—
১. জাতীয় পর্যায়ে মৌলিক ৫টি বিষয়ে সংস্কারের রোডম্যাপ
২. নির্দিষ্ট সময়সীমাসহ নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ।

জামায়াত আমির আরও বলেন, “সব সংস্কার এই সরকার করতে পারবে না, তবে কিছু মৌলিক সংস্কার অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। এর পাশাপাশি জুলাই মাসে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা জরুরি, যাতে জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।”

এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন সময়ের রূপরেখা, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আচরণগত নিরপেক্ষতা এবং সংস্কারমূলক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানানো হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসরায়েলের আরেক শহরে ইরানের ভয়াবহ হামলা, হতাহত শতাধিক

নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ ও সংস্কার চেয়ে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে জামায়াতের বৈঠক

আপডেট সময় ১০:১৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

নির্বাচন ও জাতীয় সংস্কার নিয়ে দুটি সুনির্দিষ্ট রোডম্যাপ চেয়েছে জামায়াতে ইসলামী। শনিবার (২৪ মে) রাতে রাজধানীর রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান।

তিনি বলেন, “গত কয়েক দিন ধরে দেশে একটি অস্বাভাবিক পরিস্থিতি বিরাজ করছিল। উপদেষ্টা পরিষদের সাম্প্রতিক বৈঠকের পর প্রধান উপদেষ্টা জাতির উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিতে চাইলেও, তা না দিয়েই সেই বার্তার কিছু অংশ ছড়িয়ে পড়ে, যা আশঙ্কা ও অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে।”

জামায়াত আমিরের ভাষায়, “একজন রাজনৈতিক নেতা তার অধিকার আদায়ের দাবিতে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছিলেন, একই সময় আরেকটি দল ভিন্ন জায়গায় তাদের দাবিতে অবস্থান করছিল। এসব ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রধান উপদেষ্টার মাঝে অসন্তোষের সৃষ্টি হয় এবং তিনি নিজের বিরক্তি প্রকাশ করেন।”

তিনি আরও বলেন, “২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশে একটি বড় ধরনের রাজনৈতিক পরিবর্তন এসেছে। আমাদের প্রত্যাশা, এই সরকারের উচিত হবে নিরপেক্ষ অবস্থান নেওয়া এবং কোনো নির্দিষ্ট দলকে সাপোর্ট না করা। কিন্তু বাস্তবে কিছু ক্ষেত্রে সেই নিরপেক্ষতা থেকে বিচ্যুতি ঘটেছে, যা হতাশাজনক।”

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “আমরা একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই যেখানে সমতল মাঠ থাকবে, কালো টাকা ও পেশিশক্তির দৌরাত্ম্য থাকবে না এবং প্রার্থীদের ষড়যন্ত্রের শিকার হতে হবে না। এর মাধ্যমে জনগণ তাদের হারানো অধিকার ফিরে পাবে।”

তিনি উল্লেখ করেন, “প্রধান উপদেষ্টা বলেছেন ডিসেম্বর থেকে জুনের মধ্যে নির্বাচন হবে, তবে মাস বা তারিখ নির্দিষ্ট করে কিছু বলেননি। এ কারণেই রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে অনিশ্চয়তা ও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।”

জামায়াতের পক্ষ থেকে প্রধান উপদেষ্টার কাছে দুটি স্পষ্ট রোডম্যাপের প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে—
১. জাতীয় পর্যায়ে মৌলিক ৫টি বিষয়ে সংস্কারের রোডম্যাপ
২. নির্দিষ্ট সময়সীমাসহ নির্বাচন আয়োজনের রোডম্যাপ।

জামায়াত আমির আরও বলেন, “সব সংস্কার এই সরকার করতে পারবে না, তবে কিছু মৌলিক সংস্কার অবশ্যই দৃশ্যমান হতে হবে। এর পাশাপাশি জুলাই মাসে একটি ঘোষণাপত্র প্রকাশ করা জরুরি, যাতে জনগণের আস্থা ও অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।”

এই বৈঠকে নির্বাচনকালীন সময়ের রূপরেখা, রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আচরণগত নিরপেক্ষতা এবং সংস্কারমূলক কর্মপরিকল্পনা নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানানো হয়।