বৃহস্পতিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মধ্যরাতে বিএনপি নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন একটি ফেসবুক পোস্টে প্রতিনিধিত্বমূলক (পিআর) নির্বাচনী পদ্ধতি নিয়ে তীব্র উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, পিআর সিস্টেম সংস্থাগতভাবে চালু হলে দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব ঝুঁকির মুখে পড়তে পারে — এবং এ নিয়ে তার আশঙ্কা অনলাইনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়েছে।
ইশরাক বলেন, পিআর পদ্ধতিতে যদি কোনো দলের প্রকৃত ভোট অংশ শহীদের তুলনায় নগণ্য হয়, তবে সেই দল সহজেই ক্ষমতাসীন কোনো প্রবল দল (উদাহরণস্বরূপ আওয়ামী লীগ)-এর সঙ্গে আঁতাত করে কৃত্রিমভাবে নিজেদের জনপ্রতিনিধি পাঠাতে পারে — যার ফলে ক্ষমতা দখল বা নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অপচেষ্টা চালানো সম্ভব। তিনি এই ধরণের সম্ভাব্য আঁতাতকে জাতীয় স্বার্থের পক্ষে বিপজ্জনক হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
আরেকটি বড় উদ্বেগ হিসেবে ইশরাক উল্লেখ করেছেন, সংখ্যায় অতি নগণ্য হলেও কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী ও সশস্ত্র গোষ্ঠী রয়েছে যাদের প্রতি বরাবরই রচিত ঐতিহাসিক ও ভূরাজনৈতিক সূত্রের কারণে বিদেশী সমর্থন থাকতে পারে—এ ধরনের গোষ্ঠী যদি সংসদে অবস্থান পায় এবং সেখান থেকেই কোনো অঞ্চলকে আলাদা করার আবেদন করে, সেটি আটকানো কঠিন হবে বলেও তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, প্রতিবেশী শক্তি কিংবা অন্যান্য সুপারপাওয়ার এ সুযোগকে কাজে লাগাতে পারে।
ইশরাক তার পোস্টে অতীতের ইতিহাস মনে করিয়ে দিয়েছেন — যারা স্বাধীন বাংলাদেশে বিশ্বাস করতেন না বা পরবর্তীতে দেশের স্বার্থ বিক্রি করেছেন তাদের নিয়ে সতর্ক করেছেন এবং জনমতকে ‘দালালদের’ হাতেযোগ্য করে দেবার বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়ার আহ্বান জানান। তিনি কড়া ভাষায় জানিয়েছেন, দেশবিরোধী কার্যকলাপে জড়িতদের বিরুদ্ধে জনগণকেই কঠোর হতে হবে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট: পিআর পদ্ধতি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে ইতোমধ্যে তীব্র বিতর্ক থাকায় এই ধরনের উদ্বেগ নতুন নয় — কিন্তু ইশরাকের মত বহু রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের কণ্ঠে যখন সার্বভৌমত্ব-ভিত্তিক সতর্কবার্তা শোনা যায়, তা রাজনৈতিক পরিবেশকে আরও সর্তক এবং উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলছে। এই স্ট্যাটাসটি প্রকাশের পরে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যম ও অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তা প্রচারিত হয়েছে।
সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ: ইশরাকের বক্তব্য হলো রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক পরিবর্তন — বিশেষ করে নির্বাচনী পদ্ধতির পরিবর্তন — শুধুমাত্র প্রক্রিয়াগত বিষয় নয়; তা কৌশলগত ও ভূ-রাজনৈতিক ফলও বয়ে আনতে পারে। ফলে পিআর নিয়ে আলোচনা করলে কেবল ভোট গণনা নয়, রাজনৈতিক জোট, স্বার্থবাবদ চালাচালি এবং বিদেশি প্রভাবের সম্ভাবনাও বিবেচনায় আনতে হবে — আর এ কারণেই তিনি জনমানসে সতর্কতা ছড়াতে আপত্তিহীন নয়।