রাজধানীর তেজগাঁওয়ের এক চায়ের দোকানে কর্মচঞ্চল সৈকত দাস হঠাৎ মোবাইলে চোখ রাখতেই থমকে গেলেন। মুহূর্ত পরেই আনন্দে উচ্ছ্বসিত হয়ে বললেন, “আমি পাস করেছি!”—তার চোখ-মুখে তখন চেপে রাখা আনন্দ যেন ছড়িয়ে পড়েছে চারপাশে।
চা-বিক্রি আর বিড়ির ঝাঁপি সামলানোর ফাঁকে সৈকতের এই খুশির মুহূর্ত ছুঁয়ে যায় উপস্থিত সবাইকে। তিনি মোবাইল ফোনে কল দেন বাবাকে—“আব্বা, দোকানে আসো, খুশির সংবাদ আছে। আমি পাস করেছি, ২.৫৬ পেয়েছি।” ফোনের ওপাশে বাবা বাদল দাস উত্তরে বলেন, “তুই বস, আমি দ্রুত আসছি।”
ফরিদপুরের ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কেলগ-মুখার্জী মেমোরিয়াল সেমিনারী থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন সৈকত। পরীক্ষার সময় শরীরে জ্বর থাকলেও তিনি হার মানেননি। তাই মাঝারি ফলাফলেও তার চোখে-মুখে পরিতৃপ্তি।
সৈকতের খুশির খবর শুনে দোকানে বসা এক ক্রেতা জিজ্ঞেস করেন, “তোমার দোকানে কোন জিনিস খেতে পছন্দ কর?” একটু লাজুক ভঙ্গিতে সৈকত বলেন, “কেক আর রুটি।” তখন সেই ক্রেতা বলেন, “তাহলে আজ খুশির দিনে একটা কেক খাও, আমি টাকা দিচ্ছি।” সৈকত সানন্দে কেক খেয়ে ধন্যবাদ জানান।
তেজগাঁওয়ের পবিত্র জপমালা রাণী গীর্জার সামনে সৈকতের বাবা বাদল দাসের এই দোকানটি ২০ বছর ধরে চালু। এই দোকানেই বেড়ে ওঠা সৈকতের জীবনে এসএসসি পাস যেন এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা।
এ সময় সৈকত বলেন, “আমার ছোটবেলা কেটেছে ফরিদপুরে। আমার বাবাও ওই স্কুলেই পড়েছেন। দাদার বাড়ি খুলনায়। পরীক্ষার সময় আমি খুব অসুস্থ ছিলাম, জ্বর নিয়ে পরীক্ষা দিয়েছি। তাই এই রেজাল্টেও আমি খুব খুশি।”