ঢাকা ০৩:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পাকিস্তানকে সমর্থনের প্রতিবাদে ভারতে তুরস্ক ও আজারবাইজান বয়কটের ডাক

পাকিস্তানের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানানোয় তুরস্ক ও আজারবাইজানকে বয়কটের ডাক জোরাল হচ্ছে ভারতজুড়ে। দেশ দুটির জনপ্রিয় রিসোর্ট ও পর্যটন গন্তব্যে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা বাতিল করছেন ভারতীয় পর্যটকরা। পাশাপাশি, তুরস্কের পণ্য আমদানির বিরুদ্ধেও উঠেছে প্রতিবাদ ও নিষেধাজ্ঞার দাবি।

বুধবার (১৪ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নয়াদিল্লির সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ভারতীয় ভ্রমণকারীদের মধ্যে তুরস্ক ও আজারবাইজানের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দেশের দুই শীর্ষ বুকিং কোম্পানির তথ্যমতে, এই দুই দেশের পর্যটন খাতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ভারতের জনপ্রিয় ভ্রমণ সংস্থা মেইক মাই ট্রিপ জানায়, গত এক সপ্তাহে আজারবাইজান ও তুরস্কে ভ্রমণের বুকিং ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। একই সঙ্গে বাতিলের হার বেড়েছে ২৫০ শতাংশ। আরেক ভ্রমণ সংস্থা ইজিমাইট্রিপ-এর সিইও রিকান্ত পিত্তি বলেন, “ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে তুরস্কগামী বুকিং বাতিল বেড়েছে ২২ শতাংশ এবং আজারবাইজানে ৩০ শতাংশ।”

তিনি আরও জানান, ভারতীয় পর্যটকেরা এখন বিকল্প গন্তব্য হিসেবে জর্জিয়া, সার্বিয়া, গ্রিস, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামকে বেছে নিচ্ছেন।

ভ্রমণ বুকিং প্ল্যাটফর্ম ইক্সিগো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে, তারা তুরস্ক, আজারবাইজান এবং চীনের ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

ইজিমাইট্রিপের চেয়ারম্যান নিশান্ত পিত্তি বলেন, “গত বছর প্রায় ২ লাখ ৮৭ হাজার ভারতীয় তুরস্ক এবং ২ লাখ ৪৩ হাজার ভারতীয় আজারবাইজান ভ্রমণ করেছেন। এখন প্রশ্ন হলো, এ দেশগুলো প্রকাশ্যে পাকিস্তানকে সমর্থন করার পরও আমরা কি তাদের পর্যটন ও অর্থনীতিকে সমর্থন করে যাবো?”

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা গেছে। দেশটির নাগরিক ও ব্যবসায়ীরা তুরস্কের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন এবং তুরস্ক থেকে পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিও তুলেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় এবং এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। এ ঘটনার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তুরস্ক ও আজারবাইজান প্রকাশ্যে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন জানায়, যার জেরে ভারতজুড়ে তৈরি হয়েছে বয়কট আন্দোলন।

সূত্র: রয়টার্স

জনপ্রিয় সংবাদ

আ’লীগ দেশকে অস্থিতিশীল করতে দিল্লি থেকে ছক আঁকছে : নাহিদ

পাকিস্তানকে সমর্থনের প্রতিবাদে ভারতে তুরস্ক ও আজারবাইজান বয়কটের ডাক

আপডেট সময় ১০:২৪:৪৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৪ মে ২০২৫

পাকিস্তানের প্রতি প্রকাশ্য সমর্থন জানানোয় তুরস্ক ও আজারবাইজানকে বয়কটের ডাক জোরাল হচ্ছে ভারতজুড়ে। দেশ দুটির জনপ্রিয় রিসোর্ট ও পর্যটন গন্তব্যে ছুটি কাটানোর পরিকল্পনা বাতিল করছেন ভারতীয় পর্যটকরা। পাশাপাশি, তুরস্কের পণ্য আমদানির বিরুদ্ধেও উঠেছে প্রতিবাদ ও নিষেধাজ্ঞার দাবি।

বুধবার (১৪ মে) ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নয়াদিল্লির সঙ্গে সাম্প্রতিক সংঘাতে পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নেওয়ায় ভারতীয় ভ্রমণকারীদের মধ্যে তুরস্ক ও আজারবাইজানের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। দেশের দুই শীর্ষ বুকিং কোম্পানির তথ্যমতে, এই দুই দেশের পর্যটন খাতে ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে।

ভারতের জনপ্রিয় ভ্রমণ সংস্থা মেইক মাই ট্রিপ জানায়, গত এক সপ্তাহে আজারবাইজান ও তুরস্কে ভ্রমণের বুকিং ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে গেছে। একই সঙ্গে বাতিলের হার বেড়েছে ২৫০ শতাংশ। আরেক ভ্রমণ সংস্থা ইজিমাইট্রিপ-এর সিইও রিকান্ত পিত্তি বলেন, “ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার কারণে তুরস্কগামী বুকিং বাতিল বেড়েছে ২২ শতাংশ এবং আজারবাইজানে ৩০ শতাংশ।”

তিনি আরও জানান, ভারতীয় পর্যটকেরা এখন বিকল্প গন্তব্য হিসেবে জর্জিয়া, সার্বিয়া, গ্রিস, থাইল্যান্ড ও ভিয়েতনামকে বেছে নিচ্ছেন।

ভ্রমণ বুকিং প্ল্যাটফর্ম ইক্সিগো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্স-এ জানিয়েছে, তারা তুরস্ক, আজারবাইজান এবং চীনের ফ্লাইট ও হোটেল বুকিং সেবা সাময়িকভাবে বন্ধ রেখেছে।

ইজিমাইট্রিপের চেয়ারম্যান নিশান্ত পিত্তি বলেন, “গত বছর প্রায় ২ লাখ ৮৭ হাজার ভারতীয় তুরস্ক এবং ২ লাখ ৪৩ হাজার ভারতীয় আজারবাইজান ভ্রমণ করেছেন। এখন প্রশ্ন হলো, এ দেশগুলো প্রকাশ্যে পাকিস্তানকে সমর্থন করার পরও আমরা কি তাদের পর্যটন ও অর্থনীতিকে সমর্থন করে যাবো?”

এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে ভারতের বিভিন্ন প্রান্তে তুরস্কের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ দেখা গেছে। দেশটির নাগরিক ও ব্যবসায়ীরা তুরস্কের পণ্য বয়কটের আহ্বান জানিয়েছেন এবং তুরস্ক থেকে পণ্য আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের দাবিও তুলেছেন।

উল্লেখ্য, গত ২২ এপ্রিল কাশ্মিরের পেহেলগামে বন্দুকধারীদের হামলায় ২৫ ভারতীয় এবং এক নেপালি নাগরিক নিহত হন। এ ঘটনার পর ভারত-পাকিস্তান সম্পর্কে উত্তেজনা চরমে ওঠে এবং পাল্টাপাল্টি সামরিক হামলার পর যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি চুক্তি হয়। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে তুরস্ক ও আজারবাইজান প্রকাশ্যে পাকিস্তানের প্রতি সমর্থন জানায়, যার জেরে ভারতজুড়ে তৈরি হয়েছে বয়কট আন্দোলন।

সূত্র: রয়টার্স