এবার ইসরায়েলের সাম্প্রতিক হামলায় ইরানের এক পরমাণু বিজ্ঞানী এবং তার পরিবারের মোট ১১ জন সদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। সোমবার (২৩ জুন) রাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার ঠিক আগে এই হামলা চালানো হয় বলে জানায় ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম প্রেস টিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ইরানের উত্তরাঞ্চলীয় কাস্পিয়ান সাগরের নিকটবর্তী আস্তানেহ আশরাফিহ শহরে হামলার শিকার হন পরমাণু বিজ্ঞানী সেদিঘি সাবের ও তার পরিবার। নিহতদের মধ্যে শিশু ও নারী সদস্যরাও রয়েছেন।
এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ইসরায়েলি হামলার প্রকৃতি এবং লক্ষ্য নিয়ে নতুন করে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। প্রেস টিভি জানায়, চলমান ১২ দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল অন্তত ১৪ জন ইরানি পরমাণু বিজ্ঞানীকে নিশানা করেছে। নিহত বিজ্ঞানীদের মধ্যে রসায়নবিদ, পদার্থবিদ এবং প্রকৌশলীও ছিলেন।
এদিকে ফ্রান্সে নিযুক্ত ইসরায়েলের রাষ্ট্রদূত জোশুয়া জারকার এক বিবৃতিতে দাবি করেন, পরমাণু কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের হত্যার ফলে ইরানের সক্ষমতা বড় ধরনের ধাক্কা খেয়েছে। তিনি বলেন, ‘এই বিজ্ঞানীরা না থাকায় ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথে অনেকটাই পিছিয়ে পড়বে। এমনকি যারা বোমা হামলায় বেঁচে গেছেন, তাদের হাতে পর্যাপ্ত উপকরণ থাকলেও কৌশলগত অভাব দেখা দেবে।’
জারকার মন্তব্য করেন, ‘পুরো গবেষণা টিম না থাকায় ইরানের কর্মসূচি এখন থেকে কয়েক বছর পিছিয়ে পড়বে।’ তবে বিষয়টি নিয়ে বিশ্লেষকদের দৃষ্টিভঙ্গি ভিন্ন। তাদের মতে, ইরানের পরমাণু কর্মসূচি এখনো নির্দিষ্ট কিছু বিজ্ঞানীর ওপর নির্ভরশীল নয়। আরও অনেক দক্ষ বিজ্ঞানী আছেন, যারা নিহতদের স্থলাভিষিক্ত হতে সক্ষম। এ কারণে এই হত্যাকাণ্ড কর্মসূচিকে ধীর করে দিতে পারে বটে, কিন্তু তা বন্ধ করে দিতে পারবে না।
বিশেষজ্ঞদের অভিমত অনুযায়ী, এসব লক্ষ্যবস্তু হামলা ইরানের পরমাণু পরিকল্পনা ও কৌশলে বিঘ্ন ঘটালেও, তেহরানের দীর্ঘমেয়াদি পারমাণবিক উচ্চাকাঙ্ক্ষা ও সক্ষমতা একেবারে থামিয়ে দিতে পারবে না। যুদ্ধবিরতির মধ্যেই এমন হামলা চালানো ইসরায়েলের উদ্দেশ্য এবং ভবিষ্যৎ কৌশল নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে আন্তর্জাতিক মহল।