গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি বাহিনীর তীব্র বিমান হামলায় একদিনে কমপক্ষে ১৪৩ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত ১৫ মাসের অবরোধ ও হামলায় মোট নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৩ হাজার ১০ জনে। শুক্রবার (১৬ মে) এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা ও তুর্কি বার্তাসংস্থা আনাদোলু।
আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, বৃহস্পতিবার ভোর থেকে গাজা জুড়ে ইসরায়েলি বাহিনীর টানা বিমান হামলায় ব্যাপক হতাহতের ঘটনা ঘটে। চিকিৎসা সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র ওইদিনই ১৪৩ জন নিহত হন এবং শতাধিক মানুষ আহত হন।
সবচেয়ে ভয়াবহ হামলা হয়েছে জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরে অবস্থিত আল-তাওবাহ মেডিকেল ক্লিনিকে, যেখানে ক্লিনিকের ওপরের তলায় থাকা রোগীরা ছিন্নভিন্ন হয়ে যান। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নিহতদের মধ্যে ১৩ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়, যার মধ্যে শিশুও রয়েছে।
পৃথকভাবে আনাদোলু এজেন্সি জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া তথ্য অনুসারে, চলমান হামলায় আহতের সংখ্যা ১ লাখ ১৯ হাজার ৯৯৮ জনে পৌঁছেছে। অনেক মানুষ এখনো ধ্বংসস্তূপের নিচে আটকে আছেন, যাদের কাছে উদ্ধারকারীরা পৌঁছাতে পারছেন না।
২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই বর্বর অভিযানের মাঝখানে চলতি বছরের জানুয়ারিতে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ইসরায়েল সাময়িক যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। তবে মার্চ মাসের তৃতীয় সপ্তাহ থেকে, গাজা থেকে সেনা প্রত্যাহার নিয়ে হামাসের সঙ্গে মতানৈক্যকে কেন্দ্র করে ইসরায়েল ফের হামলা শুরু করে।
স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুযায়ী, ১৮ মার্চ থেকে নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ২ হাজার ৮৭৬ ফিলিস্তিনি নিহত এবং প্রায় ৮ হাজার আহত হয়েছেন। এই হামলা কার্যত জানুয়ারিতে স্বাক্ষরিত যুদ্ধবিরতি চুক্তিকে লঙ্ঘন করেছে।
আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার আহ্বান জানালেও এখন পর্যন্ত তা বাস্তব রূপ নেয়নি। গাজার মানবিক বিপর্যয় আরও গভীরতর হচ্ছে বলে সতর্ক করেছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংস্থা।