ঢাকা ১০:৫০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ০৪ জুলাই ২০২৫, ২০ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৪ জুলাইয়ের বৃষ্টিভেজা দিনে আরও তীব্র হলো কোটা সংস্কার আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের টানা কর্মসূচি ঘোষণা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৩১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫
  • ৫২৩ বার পড়া হয়েছে

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চতুর্থ দিনে—২০২৪ সালের ৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার)—রাজপথ যেন আরও গর্জে উঠেছিল শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে। টানা বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা।

এই দিন থেকেই আন্দোলন নতুন গতি পায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সেদিন সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৭ জুলাই (রবিবার) সারা দেশে বিক্ষোভ এবং ৮ জুলাই (সোমবার) সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেন। তাঁদের একমাত্র দাবি—সরকার ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করুক, প্রয়োজনে যৌক্তিক সংস্কার করুক।

রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা, বরিশাল, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ—সারা দেশের বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও এদিন একযোগে রাজপথে নেমে আন্দোলনের প্রতি ঐক্য প্রকাশ করেন। অনেকের হাতে ছিল ব্যানার, লেখা ছিল—“কোটা নয়, চাই মেধার মূল্যায়ন”, “বৈষম্যের অবসান চাই”।

এই আন্দোলনের মাঝেই এক গুরুত্বপূর্ণ আইনি মোড় নেয় কোটা ইস্যু। ৪ জুলাই হাইকোর্টের ‘কোটা পুনর্বহাল’ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রাখে। এর ফলে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আবার কার্যকর হয়ে যায়।

এ পরিস্থিতিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘বিচারিক বৈষম্যের বৈধীকরণ’ আখ্যা দিয়ে আন্দোলন আরও বেগবান করার শপথ নেন। তাঁরা বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করছি না, বরং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ছি।”

সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় স্পষ্ট হয়, ২০১৮ সালের মতোই ছাত্রসমাজ আবারও সংগঠিত হচ্ছে ন্যায়ের দাবিতে। ৪ জুলাইয়ের শান্তিপূর্ণ বৃষ্টিভেজা শাহবাগ ছিল যেন তারই এক রণচিহ্ন।

জনপ্রিয় সংবাদ

সংঘাত শেষে যুদ্ধবিরতি, কিন্তু সৌদির গোপন ভূমিকা নিয়ে তোলপাড় আন্তর্জাতিক অঙ্গন

৪ জুলাইয়ের বৃষ্টিভেজা দিনে আরও তীব্র হলো কোটা সংস্কার আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের টানা কর্মসূচি ঘোষণা

আপডেট সময় ১১:৩১:৩৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ জুলাই ২০২৫

সরকারি চাকরিতে কোটাব্যবস্থা বাতিল করে ২০১৮ সালের জারি করা পরিপত্র পুনর্বহালের দাবিতে চলমান বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের চতুর্থ দিনে—২০২৪ সালের ৪ জুলাই (বৃহস্পতিবার)—রাজপথ যেন আরও গর্জে উঠেছিল শিক্ষার্থীদের কণ্ঠে। টানা বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ রাজধানীর বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা শাহবাগ মোড় অবরোধ করে রাখেন প্রায় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা।

এই দিন থেকেই আন্দোলন নতুন গতি পায়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ব্যানারে সেদিন সন্ধ্যায় আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ৭ জুলাই (রবিবার) সারা দেশে বিক্ষোভ এবং ৮ জুলাই (সোমবার) সব কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ডাক দেন। তাঁদের একমাত্র দাবি—সরকার ২০১৮ সালের পরিপত্র পুনর্বহাল করুক, প্রয়োজনে যৌক্তিক সংস্কার করুক।

রাজশাহী, চট্টগ্রাম, খুলনা, কুমিল্লা, বরিশাল, জাহাঙ্গীরনগর, জগন্নাথ—সারা দেশের বড় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর শিক্ষার্থীরাও এদিন একযোগে রাজপথে নেমে আন্দোলনের প্রতি ঐক্য প্রকাশ করেন। অনেকের হাতে ছিল ব্যানার, লেখা ছিল—“কোটা নয়, চাই মেধার মূল্যায়ন”, “বৈষম্যের অবসান চাই”।

এই আন্দোলনের মাঝেই এক গুরুত্বপূর্ণ আইনি মোড় নেয় কোটা ইস্যু। ৪ জুলাই হাইকোর্টের ‘কোটা পুনর্বহাল’ রায় স্থগিত চেয়ে রাষ্ট্রপক্ষের করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে আপিল বিভাগ হাইকোর্টের রায় আপাতত বহাল রাখে। এর ফলে ৯ম থেকে ১৩তম গ্রেডের সরকারি চাকরিতে ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা আবার কার্যকর হয়ে যায়।

এ পরিস্থিতিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ‘বিচারিক বৈষম্যের বৈধীকরণ’ আখ্যা দিয়ে আন্দোলন আরও বেগবান করার শপথ নেন। তাঁরা বলেন, “আমরা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করছি না, বরং বৈষম্যের বিরুদ্ধে লড়ছি।”

সারা দেশের শিক্ষাঙ্গনজুড়ে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ায় স্পষ্ট হয়, ২০১৮ সালের মতোই ছাত্রসমাজ আবারও সংগঠিত হচ্ছে ন্যায়ের দাবিতে। ৪ জুলাইয়ের শান্তিপূর্ণ বৃষ্টিভেজা শাহবাগ ছিল যেন তারই এক রণচিহ্ন।