ঢাকা ০৬:১০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৫ মে ২০২৫, ১১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক: নির্বাচন রোডম্যাপ ও সংস্কার বিষয়ে জোরালো দাবি

চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৪ মে) রাত ৮টায় রাজধানীর ‘যমুনা’ বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান জানান, দেশের বর্তমান অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে জনমনে যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ প্রয়োজন। জামায়াত এই বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উপস্থাপন করে—
১. একটি নির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট নির্বাচনকাল বা রোডম্যাপ ঘোষণা
২. নির্বাচনপূর্ব সময়ে অপরাধীদের বিচার ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ না করে নির্বাচন আয়োজন করলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।” তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যে যে পাঁচটি ক্ষেত্রে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, সেগুলোর সন্তোষজনক সমাপ্তি সময়মতো নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি।

নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে জামায়াত আমির বলেন, “যদি সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হয়, তাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে সংস্কারে সময় বেশি লাগলে, রমজানের পর নির্বাচন আয়োজনের পক্ষেও আমাদের মত রয়েছে।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা কাউকে পদত্যাগ করতে বলিনি। বরং আমরা চাই, দেশের স্বার্থে সব পক্ষ সহযোগিতার মনোভাব বজায় রাখুক।”

প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জামায়াত আমির জানান, “তিনি আমাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং প্রস্তাবগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “দেশ আমাদের সকলের। দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা ন্যায় ও সত্যের পথে অবিচল থাকব।”

তিনি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মতপার্থক্য মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “Let us agree to disagree — এই নীতিতেই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নিহিত।”

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচন ও সংস্কার ইস্যুতে বিএনপি-জামায়াত-এনসিপির সঙ্গে বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টা ড. ইউনূস, আস্থা পুনর্ব্যক্ত দলগুলোর

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে জামায়াতের গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক: নির্বাচন রোডম্যাপ ও সংস্কার বিষয়ে জোরালো দাবি

আপডেট সময় ১১:১৯:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৪ মে ২০২৫

চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসনে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে এক গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে বসেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর একটি প্রতিনিধি দল। শনিবার (২৪ মে) রাত ৮টায় রাজধানীর ‘যমুনা’ বাসভবনে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠক শেষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে দলের আমির ডা. শফিকুর রহমান জানান, দেশের বর্তমান অস্থিরতা ও রাজনৈতিক অনিশ্চয়তার প্রেক্ষাপটে এই আলোচনা অত্যন্ত সময়োপযোগী ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল।

তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে জনমনে যে উদ্বেগ ও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে, তা নিরসনে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ প্রয়োজন। জামায়াত এই বৈঠকে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি উপস্থাপন করে—
১. একটি নির্দিষ্ট ও সুস্পষ্ট নির্বাচনকাল বা রোডম্যাপ ঘোষণা
২. নির্বাচনপূর্ব সময়ে অপরাধীদের বিচার ও কাঙ্ক্ষিত সংস্কার প্রক্রিয়ায় দৃশ্যমান অগ্রগতি

ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “সংস্কার প্রক্রিয়া শেষ না করে নির্বাচন আয়োজন করলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ হবে না।” তিনি জানান, সরকার ইতোমধ্যে যে পাঁচটি ক্ষেত্রে সংস্কার প্রক্রিয়া শুরু করেছে, সেগুলোর সন্তোষজনক সমাপ্তি সময়মতো নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি।

নির্বাচনের সম্ভাব্য সময় সম্পর্কে জামায়াত আমির বলেন, “যদি সংস্কার কার্যক্রম দ্রুত সম্পন্ন হয়, তাহলে ফেব্রুয়ারির মধ্যভাগে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। তবে সংস্কারে সময় বেশি লাগলে, রমজানের পর নির্বাচন আয়োজনের পক্ষেও আমাদের মত রয়েছে।”

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, “আমরা কাউকে পদত্যাগ করতে বলিনি। বরং আমরা চাই, দেশের স্বার্থে সব পক্ষ সহযোগিতার মনোভাব বজায় রাখুক।”

প্রধান উপদেষ্টার প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে জামায়াত আমির জানান, “তিনি আমাদের বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শুনেছেন এবং প্রস্তাবগুলো গুরুত্বসহকারে বিবেচনায় নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন।”

সংবাদ সম্মেলনের শেষদিকে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, “দেশ আমাদের সকলের। দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে আমরা ন্যায় ও সত্যের পথে অবিচল থাকব।”

তিনি গণতান্ত্রিক সংস্কৃতিতে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও মতপার্থক্য মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “Let us agree to disagree — এই নীতিতেই গণতন্ত্রের সৌন্দর্য নিহিত।”