ঢাকা ০৬:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ জুলাই ২০২৫, ২৬ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানে শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনই একমাত্র সমাধান: রেজা পাহলাভি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ০৪:৪০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫
  • ৫৬০ বার পড়া হয়েছে

এবার ইরানের সর্বশেষ রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকারী রেজা পাহলাভি স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) পশ্চিমা দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন যে স্থায়ী ‘শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আনতে বর্তমান ইরানি কর্তৃপক্ষের পতন অপরিহার্য’। পাহলাভির এমন বিবৃতির ঠিক দু’দিন আগে, শনিবার (২১ জুন), ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করতে চায়, কোনো বিস্তৃত যুদ্ধ নয়।

তবে ওই হামলার পর ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা দাবি করেন, মার্কিন বোমা হামলার লক্ষ্য ‘শাসন পরিবর্তন’ নয়। কিন্তু ঠিক পরেরদিনই রোববার (২২ জুন) এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের কট্টর ধর্মীয় শাসকদের উৎখাতের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই কথার জের ধরে প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে উৎখাতকৃত শাহের নির্বাসিত পুত্র রেজা পাহলাভি বলেন, ‘এখনই ইরানি জনতার পাশে দাঁড়ানোর মুহূর্ত। অতীতের ভুলগুলি পুনরাবৃত্তি করবেন না। এই শাসনব্যবস্থাকে কোনো প্রাণরক্ষাকারী সাহায্য দেবেন না। শুধুমাত্র এই শাসনের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করেই শান্তি আসবে না।’

তিনি যোগ করেন, ‘পরমাণু অস্ত্র রোধ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সবার উদ্বেগ সঠিক, কিন্তু কেবল ইরানে একটি গণতান্ত্রিক পরিবর্তনই নিশ্চিত করতে পারে যে এই লক্ষ্যগুলো অর্জিত হবে এবং স্থায়ী হবে।’ পাহলাভির এই মন্তব্যের প্রতি ইরানি কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে মার্কিন-সমর্থিত শাহের পতনের পর থেকে পাহলাভি প্রায় চার দশক ধরে নির্বাসনে আছেন। ইরানে তার কতটা সমর্থন রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এখনও অনেক ইরানি রয়েছেন, যারা শাহের দমনমূলক গোয়েন্দা পুলিশ ‘সাভাক’-কে স্মরণ করে। ইতিপূর্বে ইরানের ব্যাপক বিক্ষোভে রাজতন্ত্রপন্থী ও বিরোধী উভয় শ্লোগানই শোনা গেছে।

কিন্তু কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই পাহলাভি দাবি করেন যে ইরানের শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি, তার পরিবার ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দেশ ছেড়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি এও বলেন, ‘এটি আমাদের (ইরানি জনগণ) জন্য বার্লিন প্রাচীর মুহূর্ত। কিন্তু সব বড় পরিবর্তনের মুহূর্তের মতোই, এটি ব্যাপক বিপদের সাথে জড়িত।

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা চালানোর পর থেকে উভয় দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করতে চায়। অন্যদিকে, ইরান বলে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

রেজা পাহলাভিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি ভবিষ্যতের কোনো পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে চান কিনা। জবাবে বলেন, তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা চান না। তিনি বলেন, ইরানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সকল নাগরিকের সমতা এবং ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণের ভিত্তিতে একটি পরিবর্তনের মূলভিত্তি তিনি দেখতে চান।

জনপ্রিয় সংবাদ

“হাসিনা চ্যাপ্টার ক্লোজড”—ঝিনাইদহে এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর বক্তব্যে উত্তেজনা

ইরানে শাসন ব্যবস্থা পরিবর্তনই একমাত্র সমাধান: রেজা পাহলাভি

আপডেট সময় ০৪:৪০:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

এবার ইরানের সর্বশেষ রাজতন্ত্রের উত্তরাধিকারী রেজা পাহলাভি স্থানীয় সময় সোমবার (২৩ জুন) পশ্চিমা দেশগুলোকে আহ্বান জানিয়েছেন যে স্থায়ী ‘শান্তি ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা আনতে বর্তমান ইরানি কর্তৃপক্ষের পতন অপরিহার্য’। পাহলাভির এমন বিবৃতির ঠিক দু’দিন আগে, শনিবার (২১ জুন), ইরানের পরমাণু স্থাপনায় বোমা হামলা চালানোর পর যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করতে চায়, কোনো বিস্তৃত যুদ্ধ নয়।

তবে ওই হামলার পর ওয়াশিংটনের কর্মকর্তারা দাবি করেন, মার্কিন বোমা হামলার লক্ষ্য ‘শাসন পরিবর্তন’ নয়। কিন্তু ঠিক পরেরদিনই রোববার (২২ জুন) এক সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইরানের কট্টর ধর্মীয় শাসকদের উৎখাতের সম্ভাবনার ইঙ্গিত দেন।

মার্কিন প্রেসিডেন্টের ওই কথার জের ধরে প্যারিসে এক সংবাদ সম্মেলনে উৎখাতকৃত শাহের নির্বাসিত পুত্র রেজা পাহলাভি বলেন, ‘এখনই ইরানি জনতার পাশে দাঁড়ানোর মুহূর্ত। অতীতের ভুলগুলি পুনরাবৃত্তি করবেন না। এই শাসনব্যবস্থাকে কোনো প্রাণরক্ষাকারী সাহায্য দেবেন না। শুধুমাত্র এই শাসনের পরমাণু স্থাপনা ধ্বংস করেই শান্তি আসবে না।’

তিনি যোগ করেন, ‘পরমাণু অস্ত্র রোধ ও আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা নিয়ে সবার উদ্বেগ সঠিক, কিন্তু কেবল ইরানে একটি গণতান্ত্রিক পরিবর্তনই নিশ্চিত করতে পারে যে এই লক্ষ্যগুলো অর্জিত হবে এবং স্থায়ী হবে।’ পাহলাভির এই মন্তব্যের প্রতি ইরানি কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ কোনো প্রতিক্রিয়া দেখায়নি।

১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লবে মার্কিন-সমর্থিত শাহের পতনের পর থেকে পাহলাভি প্রায় চার দশক ধরে নির্বাসনে আছেন। ইরানে তার কতটা সমর্থন রয়েছে, তা স্পষ্ট নয়। এখনও অনেক ইরানি রয়েছেন, যারা শাহের দমনমূলক গোয়েন্দা পুলিশ ‘সাভাক’-কে স্মরণ করে। ইতিপূর্বে ইরানের ব্যাপক বিক্ষোভে রাজতন্ত্রপন্থী ও বিরোধী উভয় শ্লোগানই শোনা গেছে।

কিন্তু কোন ধরনের প্রমাণ ছাড়াই পাহলাভি দাবি করেন যে ইরানের শাসনব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে এবং সর্বোচ্চ নেতা আলী খামেনি, তার পরিবার ও অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা দেশ ছেড়ে পালানোর প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি এও বলেন, ‘এটি আমাদের (ইরানি জনগণ) জন্য বার্লিন প্রাচীর মুহূর্ত। কিন্তু সব বড় পরিবর্তনের মুহূর্তের মতোই, এটি ব্যাপক বিপদের সাথে জড়িত।

ইসরায়েল গত ১৩ জুন ইরানে বিমান হামলা চালানোর পর থেকে উভয় দেশ যুদ্ধে জড়িয়ে পড়েছে। ইসরায়েল দাবি করেছে, তারা ইরানের পরমাণু অস্ত্র উন্নয়ন রোধ করতে চায়। অন্যদিকে, ইরান বলে যে তাদের পরমাণু কর্মসূচি শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে।

রেজা পাহলাভিকে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল যে তিনি ভবিষ্যতের কোনো পরিবর্তনের নেতৃত্ব দিতে চান কিনা। জবাবে বলেন, তিনি রাজনৈতিক ক্ষমতা চান না। তিনি বলেন, ইরানের ভৌগোলিক অখণ্ডতা, ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সকল নাগরিকের সমতা এবং ধর্ম ও রাষ্ট্রের পৃথকীকরণের ভিত্তিতে একটি পরিবর্তনের মূলভিত্তি তিনি দেখতে চান।