Home Uncategorized দক্ষিণ এশিয়ায় মু স লি ম বি দ্বে ষ ছড়িয়ে নির্বাচনে ফায়দা...

দক্ষিণ এশিয়ায় মু স লি ম বি দ্বে ষ ছড়িয়ে নির্বাচনে ফায়দা লু ট তে চান মোদী!

0
1

দিল্লির হিন্দুত্ববাদী সরকারি প্রাসাদে বসে আছেন নরেন্দ্র মোদী — এমন এক রাজনৈতিক মাস্টারমাইন্ড যিনি বিভাজনের রাজনীতিকে কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছেন। গুজরাট দাঙ্গার ধোঁয়াশায় হিন্দু-মুসলিম বিভেদের আগুনে নিজের উত্থান ঘটিয়ে মোদী আজ ভারতের সর্বোচ্চ ক্ষমতার আসনে। কিন্তু তার এই বিভাজনের নীলনকশা শুধু ভারতের মাটিতে থেমে থাকেনি; তা ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও।

দিল্লির হিন্দুত্ববাদী সরকারি প্রাসাদে বসে আছেন নরেন্দ্র মোদী — এমন এক রাজনৈতিক মাস্টারমাইন্ড যিনি বিভাজনের রাজনীতিকে কৌশলের কেন্দ্রবিন্দুতে এনেছেন। গুজরাট দাঙ্গার ধোঁয়াশায় হিন্দু-মুসলিম বিভেদের আগুনে নিজের উত্থান ঘটিয়ে মোদী আজ ভারতের সর্বোচ্চ ক্ষমতার আসনে। কিন্তু তার এই বিভাজনের নীলনকশা শুধু ভারতের মাটিতে থেমে থাকেনি; তা ছড়িয়ে পড়েছে প্রতিবেশী দেশগুলোতেও।

বিশেষ করে বাংলাদেশ মোদীর এই অদৃশ্য আগ্রাসনের অন্যতম শিকার। ভারতের জনগণের কাছে বাংলাদেশকে শত্রু হিসেবে চিত্রিত করে এবং বাংলাদেশের মুসলিম জনগণের মনে শোষণের বিষ ঢেলে, মোদী এক দীর্ঘমেয়াদী কূটনৈতিক যুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক দাবার ছকে ভারত নিজেকে রাজা ভাবতে চায়, আর বাংলাদেশসহ নেপাল, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপকে ছোট ভাইয়ের ভূমিকায় বেঁধে রাখতে চায়। এই প্রক্রিয়ায় প্রতিবেশীদের স্বাধীন চিন্তা, সিদ্ধান্ত ও উত্থান রুদ্ধ করার চেষ্টা চলে আসছে নিয়মিতভাবেই।

বাংলাদেশের বাজারে ভারতীয় নিম্নমানের পণ্যের সয়লাব তারই প্রমাণ। টুথপেস্ট থেকে সাবান, নকল কসমেটিক্স থেকে খেলনা—ভারতীয় পণ্যের আধিপত্য স্পষ্ট। অথচ বাংলাদেশি পণ্য ভারতের বাজারে প্রবেশ করতে গেলে নানা শুল্ক আর আমলাতান্ত্রিক জটিলতার জালে আটকে যায়। এই একতরফা অর্থনৈতিক খেলা শুধু বাজার নয়, প্রভাব বিস্তার করেছে বাংলাদেশের সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াতেও। তিস্তাপানি চুক্তি, চীনের সঙ্গে বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতের চোখ রাঙানি এখন প্রকাশ্য।

শুধু অর্থনীতি নয়, সাংস্কৃতিক আগ্রাসনও ভয়াবহ। টিভি খুললেই ভারতীয় সিরিয়াল, ইউটিউব খুললেই তাদের রিয়েলিটি শো, বিজ্ঞাপনে তাদের পণ্য ও ভাষার দাপট। বাংলাদেশের শিশুরাও এখন ভারতের তারকাদের পণ্যের প্রতি অনুরক্ত। এতদিনে স্পষ্ট হয়েছে, ভারতের লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশকে চিন্তায়, চেতনায় এবং চেহারায় ভারতের দ্বিতীয় সংস্করণে রূপান্তরিত করা।

এমনকি বাংলাদেশের রাজনীতি ও নির্বাচনেও ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা, মিডিয়া এবং কিছু এনজিওর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করা হয়েছে। বিশেষ করে শেখ হাসিনার শাসনামলে দিল্লির প্রভাব এতটাই প্রবল ছিল যে, সিদ্ধান্ত যেন গণভবন থেকে দিল্লি ঘুরে আসতো। যখনই বাংলাদেশ স্বাধীনভাবে কোনো পদক্ষেপ নেয়ার চেষ্টা করেছে, তখনই শুরু হয়েছে অপপ্রচার, আন্তর্জাতিক চাপ আর নানা ষড়যন্ত্র।

তিস্তাপানি চুক্তির প্রতিশ্রুতি লঙ্ঘন তার বড় উদাহরণ। বাংলাদেশ বারবার পানির ন্যায্য হিস্যা চাইলেও ভারত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের অজুহাত দেখিয়ে তা এড়িয়ে গেছে। অথচ বাংলাদেশ ত্রিপুরায় বিদ্যুৎ সরবরাহ থেকে সমুদ্রবন্দর ব্যবহারের সুবিধা, পণ্যবাহী করিডর—সবকিছুতেই ভারতের চাওয়া পূরণ করেছে।

ভারত চায় না বাংলাদেশ চীনের সঙ্গে, তুরস্কের সঙ্গে, রাশিয়ার সঙ্গে বা মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে বড় কোনো চুক্তিতে না যাক। অথচ ভারত নিজে যখন বাংলাদেশের সাথে চুক্তি করে তখন সেটাকে বিশাল সাফল্য হিসেবে প্রচার করে। যারা এই অন্যায় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে কথা বলে, তাদেরকে ‘ভারত-বিরোধী’ তকমা দেয়া হয়। কিন্তু এখন বাংলাদেশ দেখাচ্ছে— ভারত ছাড়া উন্নয়ন সম্ভব। চীন দিচ্ছে প্রযুক্তি, মধ্যপ্রাচ্য আনছে বিনিয়োগ, তুরস্ক সহায়তা করছে প্রতিরক্ষায়।

এই জাগরণ ভারতের জন্য অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারতীয় পণ্য বর্জন, দেশীয় পণ্যের প্রতি ফিরে আসার প্রবণতা এবং স্থানীয় সাংস্কৃতিক কনটেন্টের পুনরুত্থান তার বড় প্রমাণ। মিডিয়া থেকেও ভারতীয় আধিপত্য কমে আসছে, ইউটিউবে ফিরছে বাংলাদেশের নাটক, গান, সংগীত। বাংলাদেশের মানুষ এখন বুঝেছে— নিজের পরিচয় ছাড়া টিকে থাকা যায় না।

All reactions:

585585

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here