জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেছেন, সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে দেশ গভীর রাজনৈতিক সংকটে নিমজ্জিত হবে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “ডিসেম্বরের মধ্যে যারা নির্বাচন চাচ্ছেন, তারা রাষ্ট্রকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা করছেন। তবে তরুণ প্রজন্ম এমন হুমকি কখনোই মেনে নেবে না।”
শনিবার (৩১ মে) রাজধানীর গুলশানের সেলিব্রেটি কনভেনশন হলে এনসিপির ঢাকা মহানগর উত্তর আয়োজিত ‘মৌলিক সংস্কার ও আগামীর রাজনীতি’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, “বর্তমান সংবিধানে মৌলিক সংস্কার না করলে দেশে ফ্যাসিবাদী শাসনব্যবস্থার অবসান সম্ভব নয়। ফ্যাসিবাদী শাসনের অর্থ শুধুমাত্র ক্ষমতা পরিবর্তন নয়—বরং সেই ব্যক্তিকেন্দ্রিক কাঠামো ভাঙতে হবে, যেখানে একই ব্যক্তি দলের প্রধান, রাষ্ট্রের প্রধান ও সংসদের প্রধান। এতে করে দেশ একটি পরিবার নির্ভর শাসনে পরিণত হয়েছে, যা গণতন্ত্রের পরিপন্থী।”
তিনি আরও বলেন, “দেশে যেসব গণ-আন্দোলন হয়েছে, তা কোনো পরিবারের আধিপত্য টিকিয়ে রাখার জন্য নয়, বরং গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে হয়েছে। এনসিপি একটি টেকসই, গণতান্ত্রিক সংস্কার-ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা চায়, যাতে করে আগামীর প্রজন্ম একটি সুশাসিত বাংলাদেশ পায়।”
নির্বাচন কমিশনের ব্যর্থতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইশরাক হোসেন ইস্যুতে নির্বাচন কমিশন তাদের দায়িত্ব পালনে পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। এই কমিশনের অধীনে কোনো জাতীয় নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। দু’একজন নয়, সম্পূর্ণ কমিশনকেই পুনর্গঠন করতে হবে।”
নাসীরুদ্দীন স্পষ্ট ভাষায় বলেন, “টেকসই সংস্কার ছাড়া নির্বাচন করা মানে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করা। তরুণরা এটিকে আর মেনে নেবে না। যারা ক্ষমতায় যাওয়ার লোভে অন্ধ হয়ে গেছেন, তাদের হুঁশে ফেরার সময় এসেছে। না হলে তাদের পরিণতি হাসিনার মতোই হবে।”
তিনি যোগ করেন, “এনসিপি সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের পক্ষে, কিন্তু সেটি হতে হবে সংস্কারের ভিত্তিতে। তা না হলে রাজনৈতিক অব্যবস্থার দায় বর্তমান শাসকদেরই বহন করতে হবে।”