ঢাকা ০৪:২৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ০৮ জুলাই ২০২৫, ২৪ আষাঢ় ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস ইসরায়েলের ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট, পাল্টা জবাবে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলা

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১০:০৬:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫
  • ৫৩৫ বার পড়া হয়েছে

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বহু বছরের গবেষণা, কোটি কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

হামলায় কোনো প্রাণহানির খবর না থাকলেও ইনস্টিটিউটটির গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগারগুলো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বিজ্ঞানী এরান সেগালএলদাদ জাহোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তাদের ল্যাব সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের ছবি শেয়ার করে তারা গবেষণা হারানোর গভীর যন্ত্রণা প্রকাশ করেন।

প্রতিষ্ঠানটির গ্রাফিক ডিজাইনার মোর মরিয়া শিপোনি বলেন, “ল্যাবগুলো সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আমার সহকর্মীরা বছরের পর বছর ধরে যে গবেষণা করছিলেন, তা এখন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতিও ছিল — এখন সব কিছু শেষ।” তিনি আরও জানান, “প্রথমে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। শেষ পর্যন্ত না যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেছি।”

উল্লেখ্য, ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষণা পরিচালনা করে। এখানকার বিজ্ঞানী আদা ইয়োনাথ ২০০৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা এলবিট সিস্টেমস-এর সঙ্গে যৌথ গবেষণাতেও যুক্ত ছিল।

এই হামলার জবাবে ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায়। ইরানের নাতানজ, ইসফাহানফোরদো পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে চালানো হামলায় একাধিক শীর্ষ বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। নিহতদের কেউ কেউ হামলার সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন।

ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বলেন, “ইরান ধ্বংস ও অরাজকতা ছড়াতে চায়। কিন্তু আমরা জীবন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধকে অটুট রাখব এবং শান্তির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাব।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই পাল্টাপাল্টি হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ঢাবি ছাত্রদলের ১২ নেতাকর্মীকে একযোগে অব্যাহতি, কারণ দায়িত্বে অবহেলা

ইরানি ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংস ইসরায়েলের ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট, পাল্টা জবাবে ইরানের পারমাণবিক কেন্দ্রে ইসরায়েলি হামলা

আপডেট সময় ১০:০৬:২৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫

মধ্যপ্রাচ্যের চলমান উত্তেজনার মধ্যে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরায়েলের বিখ্যাত বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। বহু বছরের গবেষণা, কোটি কোটি টাকার মূল্যবান যন্ত্রপাতি ও প্রযুক্তি পুড়ে ছাই হয়ে গেছে বলে নিশ্চিত করেছে সংশ্লিষ্ট সূত্র।

হামলায় কোনো প্রাণহানির খবর না থাকলেও ইনস্টিটিউটটির গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাগারগুলো পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। বিজ্ঞানী এরান সেগালএলদাদ জাহোর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানান, তাদের ল্যাব সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গেছে। ধ্বংসস্তূপের ছবি শেয়ার করে তারা গবেষণা হারানোর গভীর যন্ত্রণা প্রকাশ করেন।

প্রতিষ্ঠানটির গ্রাফিক ডিজাইনার মোর মরিয়া শিপোনি বলেন, “ল্যাবগুলো সম্পূর্ণ পুড়ে গেছে। আমার সহকর্মীরা বছরের পর বছর ধরে যে গবেষণা করছিলেন, তা এখন মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। অনেক মূল্যবান যন্ত্রপাতিও ছিল — এখন সব কিছু শেষ।” তিনি আরও জানান, “প্রথমে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। শেষ পর্যন্ত না যাওয়ায় প্রাণে বেঁচে গেছি।”

উল্লেখ্য, ১৯৩৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়েইজম্যান ইনস্টিটিউট চিকিৎসাবিজ্ঞান, রসায়ন, জীববিজ্ঞান ও পদার্থবিজ্ঞানে আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন গবেষণা পরিচালনা করে। এখানকার বিজ্ঞানী আদা ইয়োনাথ ২০০৯ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেছিলেন। প্রতিষ্ঠানটি ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা সংস্থা এলবিট সিস্টেমস-এর সঙ্গে যৌথ গবেষণাতেও যুক্ত ছিল।

এই হামলার জবাবে ইসরায়েলও পাল্টা হামলা চালিয়েছে ইরানের গুরুত্বপূর্ণ তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায়। ইরানের নাতানজ, ইসফাহানফোরদো পারমাণবিক গবেষণা কেন্দ্রে চালানো হামলায় একাধিক শীর্ষ বিজ্ঞানী নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম। নিহতদের কেউ কেউ হামলার সময় পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন।

ঘটনার পর ইসরায়েলের প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন এবং বলেন, “ইরান ধ্বংস ও অরাজকতা ছড়াতে চায়। কিন্তু আমরা জীবন, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্রের মূল্যবোধকে অটুট রাখব এবং শান্তির জন্য সংগ্রাম চালিয়ে যাব।”

বিশ্লেষকদের মতে, এই পাল্টাপাল্টি হামলা শুধু মধ্যপ্রাচ্য নয়, গোটা বিশ্বের নিরাপত্তা ও কূটনৈতিক ভারসাম্যের ওপর গভীর প্রভাব ফেলতে পারে। পরিস্থিতি আরও ঘনীভূত হওয়ায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের উদ্বেগ বাড়ছে।