মিয়ানমারে সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে গণতন্ত্রকামী যোদ্ধা ও জাতিগত বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মাঝে আবারও ভয়াবহ সংঘর্ষ ছড়িয়ে পড়েছে। এতে দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের হাজারো মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন।
সোমবার (৭ জুলাই) ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি স্থানীয় সূত্রের বরাত দিয়ে জানায়, সাম্প্রতিক কয়েক দিনে কারেন রাজ্য, কিয়োনেডো শহর এবং সীমান্তবর্তী পায়াথোনজু এলাকায় ভয়াবহ সংঘর্ষ হয়েছে।
দুই বছর আগে গণতন্ত্রপন্থী অং সান সু চির নেতৃত্বাধীন সরকারকে হটিয়ে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করে জান্তা। এরপর থেকেই দেশজুড়ে অস্থিরতা বাড়তে থাকে।
সু চির দল ও বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর সমন্বয়ে গঠিত ‘পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস’ (পিডিএফ) প্রায়ই সেনাবাহিনীর সঙ্গে সরাসরি সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, কিয়োনেডো শহরের কাছে একটি সামরিক ঘাঁটিতে পিডিএফ ড্রোন হামলা চালায়। পাল্টা হামলায় সেনাবাহিনী আর্টিলারি গোলা নিক্ষেপ করে বিদ্রোহীদের বিভিন্ন অবস্থানে।
কিয়োনেডোর বাসিন্দারা জানান, পুরো শহর জুড়ে সারা রাত গোলাগুলির শব্দ শোনা গেছে। এক বাসিন্দা বলেন, “আমরা ঘরেই থাকতে পারিনি, রাতভর লুকিয়ে ছিলাম। পরিস্থিতি ছিল ভয়ংকর।”
এই সহিংসতার কারণে কিয়োনেডো শহরের কয়েক হাজার মানুষ আশপাশের গ্রামে পালিয়ে গেছে। একইভাবে থাই সীমান্তের কাছাকাছি পায়াথোনজু শহরেও বিদ্রোহী হামলার পর বহু মানুষ গ্রাম ছেড়ে পালাতে বাধ্য হন।
স্থানীয়রা পরিস্থিতিকে বর্ণনা করেছেন “ইট মারলে পাটকেল ছোড়ার মতো” এক রক্তক্ষয়ী পাল্টাপাল্টি সংঘর্ষ হিসেবে। মানবাধিকারকর্মীরা আশঙ্কা করছেন, সংঘর্ষ আরও বিস্তার লাভ করলে সীমান্ত এলাকায় বড় ধরনের শরণার্থী সংকট দেখা দিতে পারে।