ঢাকা ০৯:৩৪ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ মে ২০২৫, ৯ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বাতিল হচ্ছে না শেখ মুজিবসহ ৪ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি

  • ডেস্ক রিপোর্টঃ
  • আপডেট সময় ১১:৪২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫
  • ৫১৫ বার পড়া হয়েছে

মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালনকারী রাজনীতিক ও সহযোগীদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের খসড়ায় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ সংজ্ঞায় সংশোধন আনা হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এমএনএ ও এমপিএ পদে থাকা প্রায় চার শতাধিক ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বহাল থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংশোধিত এই খসড়া অধ্যাদেশ আকারে অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জামুকার ৯৪তম সভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। পরে ১০ মার্চ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম তা অনুমোদন দেন। পরবর্তীতে ৬ মে খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হলে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ সংজ্ঞা আরও স্পষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই অনুসারে সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে পুনরায় আজ উপস্থাপন করা হচ্ছে।

নতুন খসড়া অনুযায়ী, শুধু মুজিবনগর সরকার নয়, আরও চারটি শ্রেণির ব্যক্তি ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন। তারা হলেন:

  1. বিদেশে থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে সক্রিয় বাংলাদেশি পেশাজীবী।

  2. মুজিবনগর সরকারের অধীনে কর্মরত কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও অন্যান্য সহকারীরা।

  3. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন।

  4. স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী জানান, নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রবাসী সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের অধীনে থাকা সকল ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।

খসড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞাও হালনাগাদ করা হয়েছে। নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে:

“বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্থ এমন বেসামরিক নাগরিক, যিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে লড়াই করেছেন। এ সময়ে নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যে থেকে যাঁরা সশস্ত্র বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স ও আনসারে যুক্ত ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।”

এছাড়া ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটির সংজ্ঞাও হালনাগাদ করে বলা হয়েছে:

“মুক্তিযুদ্ধ অর্থ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধ।”

জনপ্রিয় সংবাদ

এনসিপি উপদেষ্টাদের পদত্যাগের দাবি ভিন্নখাতে নিতে ‘পদত্যাগ নাটক’ মঞ্চায়ন: রাশেদ খাঁন

বাতিল হচ্ছে না শেখ মুজিবসহ ৪ শতাধিক নেতার মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি

আপডেট সময় ১১:৪২:৩৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ মে ২০২৫

মুক্তিযুদ্ধকালীন মুজিবনগর সরকারের অধীনে দায়িত্ব পালনকারী রাজনীতিক ও সহযোগীদের মুক্তিযোদ্ধার স্বীকৃতি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। এ লক্ষ্যে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের খসড়ায় ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ সংজ্ঞায় সংশোধন আনা হয়েছে। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদসহ ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এমএনএ ও এমপিএ পদে থাকা প্রায় চার শতাধিক ব্যক্তির মুক্তিযোদ্ধা স্বীকৃতি বহাল থাকবে।

আজ বৃহস্পতিবার (১৫ মে) সংশোধিত এই খসড়া অধ্যাদেশ আকারে অনুমোদনের জন্য উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে উপস্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছে মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক মন্ত্রণালয়।

এর আগে গত ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠিত জামুকার ৯৪তম সভায় জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল আইন সংশোধনের প্রস্তাব গৃহীত হয়। পরে ১০ মার্চ সংশ্লিষ্ট উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম তা অনুমোদন দেন। পরবর্তীতে ৬ মে খসড়াটি উপদেষ্টা পরিষদে তোলা হলে ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ সংজ্ঞা আরও স্পষ্ট করার নির্দেশ দেওয়া হয়। সেই অনুসারে সংজ্ঞায় পরিবর্তন এনে পুনরায় আজ উপস্থাপন করা হচ্ছে।

নতুন খসড়া অনুযায়ী, শুধু মুজিবনগর সরকার নয়, আরও চারটি শ্রেণির ব্যক্তি ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন। তারা হলেন:

  1. বিদেশে থেকে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গঠনে সক্রিয় বাংলাদেশি পেশাজীবী।

  2. মুজিবনগর সরকারের অধীনে কর্মরত কর্মকর্তা, কূটনীতিক ও অন্যান্য সহকারীরা।

  3. স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী ও কলাকুশলী এবং দেশ-বিদেশের সাংবাদিকরা, যারা মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে কাজ করেছেন।

  4. স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।

মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক সচিব ইসরাত চৌধুরী জানান, নতুন সংজ্ঞা অনুযায়ী প্রবাসী সরকার তথা মুজিবনগর সরকারের অধীনে থাকা সকল ব্যক্তি মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে বিবেচিত হবেন।

খসড়ায় মুক্তিযোদ্ধা সংজ্ঞাও হালনাগাদ করা হয়েছে। নতুন সংজ্ঞায় বলা হয়েছে:

“বীর মুক্তিযোদ্ধা অর্থ এমন বেসামরিক নাগরিক, যিনি ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস, মুসলিম লীগ, জামায়াতে ইসলামী, নেজামে ইসলাম, দালাল ও শান্তি কমিটির বিরুদ্ধে সক্রিয়ভাবে লড়াই করেছেন। এ সময়ে নির্ধারিত বয়সসীমার মধ্যে থেকে যাঁরা সশস্ত্র বাহিনী, মুক্তিবাহিনী, পুলিশ, ইপিআর, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স ও আনসারে যুক্ত ছিলেন, তারাও মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে গণ্য হবেন।”

এছাড়া ‘মুক্তিযুদ্ধ’ শব্দটির সংজ্ঞাও হালনাগাদ করে বলা হয়েছে:

“মুক্তিযুদ্ধ অর্থ ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি স্বাধীন, গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের দোসরদের বিরুদ্ধে পরিচালিত যুদ্ধ।”