জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলন ও তা নিয়ে উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে দীর্ঘ ব্যাখ্যা দিয়েছেন তথ্য ও সম্প্রচার উপদেষ্টা মো. মাহফুজ আলম। বৃহস্পতিবার (১৫ মে) নিজের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, “ভুল হলে তা থেকে শিক্ষাগ্রহণ করে আমরা এগুতে চাই।”
তিনি জানান, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানে জবি থেকে দুজন শিক্ষার্থী শহিদ হয়েছেন, আহত হয়েছেন অনেকেই। সে সূত্রেই তিনি জবি শিক্ষার্থীদের দাবির ন্যায্য সমাধানে ভিসি ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছিলেন।
তথ্য উপদেষ্টা বলেন, “আপনাদের ন্যায্য দাবি আদায়ের জন্যই আমি গিয়েছিলাম। জুলাই আমাদের মধ্যে ফ্যাসিবাদবিরোধী লড়াইয়ের আত্মিক বন্ধন তৈরি করেছে। আশা করি, এ বন্ধন কোনো একক ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অন্তর্ঘাতমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য ছিন্ন হবে না।”
তিনি জানান, জবি শিক্ষার্থীদের আবাসনের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়, অর্থ মন্ত্রণালয় ও ইউজিসি যৌথভাবে বিচার করবেন। তবে জবির আন্দোলনের প্রতি তাঁর নিজস্ব অবস্থান থেকে তিনি সরাসরি সম্পৃক্ত ছিলেন।
পোস্টে তিনি উল্লেখ করেন, একজন শিক্ষার্থীর বোতল নিক্ষেপের ঘটনায় তিনি বিব্রত হলেও দায়িত্ব পালনে পিছপা হননি। তাঁর ভাষায়, “আমি ভিসি স্যারকে বললাম, আমি শিক্ষার্থীদের সামনে গিয়ে কথা বলব। পূর্বনির্ধারিত টকিং পয়েন্ট অনুযায়ী পুলিশের বাড়াবাড়ি বা উসকানিমূলক কিছু হলে ক্ষমা প্রার্থনা ও বিভাগীয় তদন্তের কথাও বলি। তখনই বোতল নিক্ষেপ করা হয়।”
তিনি এই ঘটনাকে “অন্তর্ঘাতমূলক” উল্লেখ করে বলেন, এর পেছনে কারা ছিল তা তদন্ত করে দেখা উচিত। সেইসঙ্গে তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু দলের নিয়মিত আক্রমণ ও হত্যার হুমকির প্রসঙ্গও উল্লেখ করেন, যা থেকে ধারণা করা যেতে পারে এটি পূর্বপরিকল্পিত কোনো গোষ্ঠীর কাজ।
তথ্য উপদেষ্টা আরও বলেন, “আন্দোলনের সঙ্গে আমি একাত্ম, এবং পুলিশের হামলার নিন্দা জানাই। আমি ডিএমপি কমিশনারকে বলেছি, যেন শিক্ষার্থীদের ওপর কোনো আক্রমণ না হয় বা জোরপূর্বক সরানো না হয়।”
পোস্টের শেষে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন যে, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রতিষ্ঠান মিলে জবির আবাসন সমস্যার একটি যৌক্তিক ও কার্যকর সমাধান শিগগিরই বের করবে।
উল্লেখ্য, জবির শিক্ষার্থীরা গত কিছুদিন ধরে ক্যাম্পাস ও আশপাশে অবস্থান করে আবাসন সংকটসহ বেশ কিছু দাবি নিয়ে আন্দোলন করে আসছেন।