গত বছরের ২৯ জুলাই কোটা সংস্কার আন্দোলন ঘিরে সহিংসতায় নিহতদের স্মরণে সরকার যখন রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করে, তখন আন্দোলনকারীরা প্রতিবাদে ভিন্নপথ অবলম্বন করেন। সরকারি শোক কর্মসূচিকে প্রত্যাখ্যান করে তারা চোখে-মুখে লাল কাপড় বেঁধে ছবি তোলা এবং ফেসবুক প্রোফাইল লাল করার কর্মসূচি ঘোষণা করে।
এই ব্যতিক্রমধর্মী প্রতিবাদ কর্মসূচির পেছনের পরিকল্পনা ও কৌশল নিয়ে সম্প্রতি মুখ খুলেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি এস এম ফরহাদ।
তিনি জানান, “রাষ্ট্র যখন নাটকীয়ভাবে গণহত্যাকে আড়াল করে রাষ্ট্রীয় শোকের ঘোষণা দিল, তখন আবু সাদিক কায়েম পরামর্শের জন্য আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আমি বলি, তারা যেহেতু কালো বেছে নিয়েছে, আমরা লালকে বেছে নিই—রক্তের প্রতীক হিসেবে।”
এই ধারণা চূড়ান্ত করে আন্দোলনের বিভিন্ন সমন্বয়কের কাছে প্রেস রিলিজ পাঠানো হয়। এরপর সারাদেশে ছড়িয়ে পড়ে “লাল প্রোফাইল কর্মসূচি”। ফরহাদের ভাষায়, “পরদিন দেখি সমাজের নানা শ্রেণির মানুষ তাদের ফেসবুক প্রোফাইল লাল করে ফেলেছেন। এমনকি ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও খালেদা জিয়ার পেজেও লাল প্রতীক দেখা যায়।”
তিনি জানান, “তৎকালীন পরিস্থিতিতে আমরা অনলাইন এবং সফট কর্মসূচির ওপর জোর দিচ্ছিলাম। কারণ মাঠের কর্মসূচিতে গেলে গ্রেপ্তার ও মামলার আশঙ্কা ছিল। সেই কারণেই লাল প্রোফাইল কর্মসূচি ছিল আমাদের সফট আন্দোলনের শেষ ধাপ।”
ফরহাদ বলেন, এই কর্মসূচি ব্যাপক সাড়া পেলে তারা নতুন উদ্দীপনা পান এবং পরে মাঠে সক্রিয়ভাবে প্রতিবাদে অংশগ্রহণ শুরু করেন।
এই কর্মসূচির মাধ্যমে আন্দোলনকারীরা একদিকে রাষ্ট্রীয় শোকের আনুষ্ঠানিকতা প্রত্যাখ্যান করেন, অপরদিকে প্রতীকমূলক প্রতিবাদে নতুন মাত্রা যোগ করেন।