মধ্যপ্রাচ্যে চলমান উত্তেজনার মধ্যে সিরিয়ায় আবারও পূর্ণাঙ্গ গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আশঙ্কা প্রকাশ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। ২০ মে এক বিস্ফোরক সতর্কবার্তায় মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেন, “সিরিয়ার অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মাত্র কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই পতনের মুখে পড়তে পারে। দেশটি চরম বিভক্তির পথে হাঁটছে।”
২০২৪ সালের ডিসেম্বরে দীর্ঘ ১৩ বছরের গৃহযুদ্ধ শেষে বিদ্রোহীদের হাতে ক্ষমতাচ্যুত হন প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ। এরপর ইসলামপন্থী নেতা আহমেদ আল সারার নেতৃত্বে গঠিত হয় একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। তবে দেশটিতে স্থিতিশীলতা ফিরে আসেনি। ২০২৫ সালের মার্চে আসাদপন্থীদের বিরুদ্ধে সহিংসতায় নিহত হন প্রায় ৯০০ বেসামরিক নাগরিক, যাদের অধিকাংশই আলাওই সম্প্রদায়ের।
মে মাসের শুরুতে দামেস্ক ও সুইয়েদা প্রদেশে গোষ্ঠীগত সংঘর্ষে প্রাণ হারান আরও শতাধিক মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে আন্তর্জাতিক মহলে সিরিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ।
সম্প্রতি সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদে সিরিয়ার অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট সারার সঙ্গে একটি ঐতিহাসিক বৈঠক করেন যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৈঠকে সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানও উপস্থিত ছিলেন। ট্রাম্প বলেন, “সারা একজন তরুণ, আকর্ষণীয় ও শক্তিশালী নেতা। তার নেতৃত্বে সিরিয়া পুনর্গঠনের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে।” এরই প্রেক্ষিতে যুক্তরাষ্ট্র সিরিয়ার উপর থেকে দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
তবে মার্কো রুবিও এই আশাবাদের বিপরীতে সতর্ক করে বলেন, “সিরিয়ার সরকার এখনো গভীর সংকটে রয়েছে। যদি আন্তর্জাতিক মিত্ররা এগিয়ে না আসে, তাহলে এই সরকার ব্যর্থ হওয়া শুধু সময়ের ব্যাপার।” তিনি দেশটিকে এখনো ধর্মীয় ও জাতিগত বিভাজনের ঘূর্ণাবর্তে আটকে থাকার কথাও উল্লেখ করেন।
রুবিওর বক্তব্যের পরপরই ইউরোপীয় ইউনিয়ন সিরিয়ার উপর থেকে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত জানায়। ইইউ পররাষ্ট্রনীতি প্রধান কায়া কাল্লাস বলেন, “সিরিয়াকে একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে গড়ে তুলতে ইউরোপ পাশে থাকবে।”