জাতিসংঘের পরমাণু পর্যবেক্ষণ সংস্থা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (IAEA) থেকে বের হয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইরান। পার্লামেন্টে বিল পাসের পর এবার দেশটির সর্বোচ্চ নিরাপত্তা বিষয়ক নীতিনির্ধারণী সংস্থা সুপ্রিম ন্যাশনাল সিকিউরিটি কাউন্সিলও এই সিদ্ধান্তে অনুমোদন দিয়েছে।
বিশ্লেষকদের মতে, ইরানের এই পদক্ষেপ শুধু দেশটির জন্য নয়—IAEA এবং গোটা মধ্যপ্রাচ্যের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি সৃষ্টি করতে পারে।
পারমাণবিক কার্যক্রম থাকবে অদৃশ্য পর্দার আড়ালে
IAEA-এর সদস্য না থাকলে ইরানকে আর আন্তর্জাতিক কোনো সংস্থা তার পরমাণু কার্যক্রমের বিষয়ে পর্যবেক্ষণ করতে পারবে না। এর ফলে ইরান চাইলে গোপনে উচ্চমাত্রার ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণসহ পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির পথেও এগোতে পারে, যা কারো নজরেই পড়বে না।
IAEA-এর জন্যও বড় ধাক্কা
ইরানের প্রস্থান শুধু তাদের প্রযুক্তিগত সহায়তা ও যাচাইকরণ সুবিধা হারানোই নয়, বরং IAEA-এরও জন্য এক বিরাট আঘাত। সংস্থাটির বৈশ্বিক গ্রহণযোগ্যতা, নিরপেক্ষতা ও কার্যকারিতা নিয়েই প্রশ্ন উঠতে পারে। ফলে অন্য সদস্য দেশগুলোর মধ্যেও আস্থা সঙ্কট তৈরি হতে পারে।
আঞ্চলিক উত্তেজনা ও বৈশ্বিক পারমাণবিক সংকটের শঙ্কা
ইরানের এই সিদ্ধান্তের ফলে যুক্তরাষ্ট্র, ইসরায়েল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সঙ্গে দেশটির সম্পর্ক আরও তলানিতে যেতে পারে। এতে করে নতুন করে নিষেধাজ্ঞা আরোপ, কূটনৈতিক বিচ্ছিন্নতা এবং এমনকি সামরিক উত্তেজনার আশঙ্কাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।
এছাড়া ইরানের পদাঙ্ক অনুসরণ করে যদি অন্য কোনো দেশও সংস্থা থেকে বের হয়ে যায়, তাহলে পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধে গঠিত আন্তর্জাতিক কাঠামো মারাত্মকভাবে দুর্বল হয়ে পড়বে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, “এটি দুই পক্ষের জন্যই লস। একদিকে ইরান আরও আলাদা হয়ে পড়বে, অন্যদিকে IAEA হারাবে বিশ্বাসযোগ্যতা।”
এই সিদ্ধান্তের ফলে বিশ্ব রাজনীতিতে এক নতুন পারমাণবিক অনিশ্চয়তার সময়ের সূচনা হতে পারে বলেই মনে করছেন আন্তর্জাতিক বিশ্লেষকরা।
সূত্র: আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম ও কূটনৈতিক পর্যবেক্ষণ