যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পরমাণু ইস্যুতে নতুন করে আলোচনায় বসার কোনো পরিকল্পনা নেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ইরানের উপপররাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধান পরমাণু আলোচক আব্বাস আরাগচি। দেশটির রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ওয়াশিংটনের বিশ্বাসযোগ্যতা আজ প্রশ্নবিদ্ধ এবং ইরান ভবিষ্যৎ কূটনীতিতে একে আর আগের মতো গ্রহণযোগ্য মনে করে না।
বার্তা সংস্থা আনাদোলুর বরাতে শুক্রবার (২৭ জুন) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আরাগচি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন। তার দাবি, “আমরা যখন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আলোচনায় ছিলাম, তখন তারা সরাসরি ইসরায়েলকে সমর্থন দিয়ে আমাদের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে হামলা চালাতে সহায়তা করে।”
তিনি আরও বলেন, “সাম্প্রতিক আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র আমাদের অধিকার খর্ব করতে চেয়েছে। তারপর তারা আমাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চাপিয়ে দেয় এবং দখলদার ইসরায়েলকে হামলার জন্য উসকে দেয়।”
এই সব ঘটনার পর, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যখন দাবি করেন যে, আগামী সপ্তাহে ইরানের সঙ্গে নতুন এক বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে, তখন আরাগচি পরিষ্কার জানিয়ে দেন—“এ ধরনের কোনো বৈঠকের আয়োজন হয়নি। যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্যে নিজেরাই পরস্পরবিরোধী অবস্থান নিচ্ছে।”
সম্প্রতি ইসরায়েল-ইরান দ্বন্দ্বের মধ্যে যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়েছে, সেটি ছিল গত কয়েক বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ। গত ১৩ জুন ইসরায়েল ইরানের সামরিক, পারমাণবিক ও বেসামরিক স্থাপনায় বিমান হামলা চালায়। প্রায় ১২ দিন ধরে চলা এই সংঘর্ষে ইরানের অন্তত ৬০৬ জন নিহত হন, আহত হন আরও ৫ হাজার ৩৩২ জন। পাল্টা জবাবে ইরান ইসরায়েলের বিভিন্ন স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা চালায়। হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয়ের এক হিসাব অনুযায়ী, এতে ইসরায়েলের ২৯ জন নিহত এবং ৩ হাজার ৪০০ জন আহত হয়।
এই যুদ্ধাবস্থার অবসান ঘটে ২৪ জুন, যখন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যস্থতায় উভয় পক্ষ একটি যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়। যদিও সংঘর্ষ সাময়িকভাবে থেমে গেলেও, কূটনৈতিক পরিসরে উত্তেজনা এখনো প্রবল। আর ইরানের এই স্পষ্ট বক্তব্য পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তুলেছে।