জুলাই গণঅভ্যুত্থান স্মরণে আয়োজিত রিকশা র্যালিতে রিকশাচালকদের প্রতি বিশেষ সম্মান ও কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ এবং মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তাঁরা রিকশাচালকদের এই আন্দোলনে অসামান্য অবদানের কথা স্মরণ করে স্যালুট জানান। এ সময় উপস্থিত নারীরাও একযোগে দাঁড়িয়ে চালকদের প্রতি সম্মান জানান।
সোমবার (১৪ জুলাই) মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে আয়োজিত এ র্যালি শেষে জাতীয় সংসদ প্লাজার দক্ষিণ পাশে মানিক মিয়া এভিনিউতে বক্তব্য রাখেন উপদেষ্টারা। বক্তৃতায় নারীর ক্ষমতায়ন, নিরাপত্তা ও রাষ্ট্রীয় দায়বদ্ধতার বিষয়টি বিশেষভাবে উঠে আসে।
নারী ও শিশু বিষয়ক উপদেষ্টা শারমীন এস মুরশিদ বলেন, “জুলাই মানে অত্যাচারের অবসান, মেয়েদের সম্মান আর মাথা উঁচু করে দাঁড়ানো। ইতিহাস সবসময় মেয়েদের আড়াল করে ফেলেছে। কিন্তু মেয়েরাই হবে নতুন ইতিহাসের রচয়িতা।” তিনি আরও বলেন, “সমাজে যে ভারসাম্যহীনতা চলছে, যে অন্যায়, হুমকি, সাইবার বুলিং মেয়েরা প্রতিদিন মোকাবিলা করছে—সেসব যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি। নারী ও শিশু নির্যাতন বন্ধে মন্ত্রণালয় যা যা দরকার, তা করবে।”
তিনি রাষ্ট্রের ব্যর্থতার দিক তুলে ধরে বলেন, “৫৪ বছরের ইতিহাস বলে দেয় রাষ্ট্র পারেনি। যদি পারতো, তাহলে ২৪ অভ্যুত্থান হতো না।”
মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেন, “রিকশাচালকদের অবদান আমরা ভুলব না। তাদেরকে স্যালুট জানাই। যদি মেয়েদের নিরাপত্তা দিতে না পারি, তাহলে রাষ্ট্রকে ব্যর্থতা স্বীকার করতেই হবে।” তিনি বলেন, “যারা প্রগতিশীলতার নামে নারীদের ঘরে ফেরাতে চায়, আমরা তাদের বিরুদ্ধে জুলাইয়ের চেতনায় আবারও দাঁড়াবো।”
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক উমামা ফাতেমা বলেন, “আন্দোলনে শহীদ ১১ নারীকে স্বীকৃতি দিতে হবে। সারা দেশের নারীদের একত্রিত করতে সরকারের সহযোগিতা প্রয়োজন।” একইসঙ্গে তিনি মেয়েদের হ্যারাজমেন্টের বিচারের দাবি তোলেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন শহীদ পরিবাররাও। শহীদ নাঈমা সুলতানার মা বলেন, “আমার মেয়েকে টার্গেট করে স্নাইপার দিয়ে মারা হয়। আমি চাই না আর কোনো মেয়ে যেন এমন পরিণতি ভোগ করে।” শহীদ নাফিসার বাবা বলেন, “জুলাই-আগস্ট আমাদের জন্য কষ্টের মাস। নাফিসা শহীদ হয় ৫ আগস্ট। সব শহীদদের জন্য দোয়া চাই। আমাদের একটাই চাওয়া—এই দেশ যেন শান্তিপূর্ণ হয়।”